|
আজকের 'চলতি প্রসঙ্গ'-এর প্রথম অংশে রয়েছে একটি প্রতিবেদন। এটির শিরোনাম "শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার নতুন পর্যবেক্ষক দেশ হতে পারে আফগানিস্তান"।
শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যদেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলন ৬ ও ৭ জুন পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছেং কুও পিং ২৩ মে পেইচিংয়ে বলেছেন, এবারের শীর্ষ সম্মেলন থেকে প্রত্যাশা অনেক। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ১১ বছরের মধ্যে এই প্রথম বারের মতো শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ভবিষ্যত উন্নয়নের দিক নিয়ে ব্যাপক কৌশলগত পরিকল্পনা নির্ধারণ করবে। এছাড়া, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে আফগানিস্তান ও তুরস্ক সংস্থার নতুন পর্যবেক্ষক ও সংলাপ অংশীদার হতে পারে। এ সম্পর্কে চীন জানিয়েছে যে, আফগানিস্তান ও তুরস্ককে প্রয়োজনীয় সংশ্লিষ্ট আইনগত মর্যাদা প্রদান 'তিনটি শক্তি' - বিচ্ছিন্নতাবাদ, ধর্মীয় চরমপন্থা এবং সহিংস ও সশস্ত্র শক্তি - দমন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্থিতিশীলতার জন্য কল্যাণকর হবে।
এবারে শুনুন বিস্তারিত প্রতিবেদন...
যৌথভাবে 'তিনটি শক্তি' দমন থেকে শুরু করে বহু ক্ষেত্রে এবং বহু পর্যায়ে ব্যাপক সহযোগিতা উন্নয়নে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা গত দশ বছরে চমত্কার নৈপুণ্য দেখিয়েছে। বর্তমানে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং সদস্যদেশগুলোর উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়েছে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা। জটিল ও পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন নতুন সমস্য মোকাবিলায় এ আঞ্চলিক সংস্থা কী নতুন ভূমিকা পালন করবে?
এ প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠেয় পেইচিং শীর্ষ সম্মেলনে কী বিষয়ে আলোচনা হবে? চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছেং কুও পিং ২৩ মে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
"এ বছর হচ্ছে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার দ্বিতীয় দশকের সূচনা। সদস্যদেশগুলো একমত হয়েছে যে, আমাদের উচিত এবারের শীর্ষ সম্মেলনকে কাজে লাগানো, শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার ভবিষ্যতের উন্নয়ন লক্ষ্য প্রণয়ন, নতুন দশকে সহযোগিতা ব্যবস্থা বিন্যাস করা এবং রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা আরো বাড়ানো, যাতে আরো কার্যকরভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যায়, অভিন্ন উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এবং সদস্যদেশগুলোর জনগণের চাহিদা পূরণ করা যায়।"
জানা গেছে, ৬ জুন থেকে ৭ জুন চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিং থাও পেইচিংয়ে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন। এবার তৃতীয় বারের মতো চীনে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ বিভিন্ন সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা এতে অংশ নেবেন। এছাড়া, ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমাদি নেজাদ এবং আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইসহ পর্যবেক্ষক ও অতিথি দেশের প্রতিনিধিরাও এ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
ছেং কুও পিং বলেন, শীর্ষ সম্মেলনে, বিভিন্ন সদস্য দেশের নেতারা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি, সদস্য দেগুলোর বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যবস্থা এবং শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার ভবিষ্যত উন্নয়ন - এ তিনটি প্রধান বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করবেন এবং কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন। এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রত্যাশিত ফলাফল সম্পর্কে ছেং কুও পিং বলেন, এবারের সম্মেলনে কয়েকটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এসব চুক্তি শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সহযোগিতার সব প্রধান ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করবে।
ছেং কুও পিং বলেন,
"সদস্যদেশগুলোর নেতারা 'শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মধ্যমেয়াদী উন্নয়নের কৌশলগত পরিকল্পনা' অনুমোদন করবেন। পারস্পরিক আস্থা সুসংহত, নিরাপত্তা রক্ষা, উন্নয়ন বেগবান করা, জনগণের জীবিকা উন্নত করা এবং বিনিময় উন্নয়ন শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার অগ্রাধিকারমূলক সহযোগিতার দিক হবে। কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে। এর লক্ষ্য হচ্ছে, শাংহাই সহযোগিতা সংস্থাকে সদস্যদেশগুলোর অভিন্ন কল্যাণ রক্ষা ও উন্নয়নের একটি কার্যকর সহযোগিতা প্ল্যাটফর্ম পরিণত করা। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ১১ বছরের মধ্যে এই প্রথম বারের মতো শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ভবিষ্যত উন্নয়নের দিক নিয়ে ব্যাপক কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। এতে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার উন্নয়নের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা দেখতে পারি। এতে কৌশলগত বিষয়গুলো নিয়ে সদস্যদেশগুলোর অবস্থানও
প্রতিফলিত হয়।"
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যদেশগুলো একটি বিশেষ হিসাব খুলবে এবং একটি উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করবে। এছাড়া তুরস্ক এবার শীর্ষ সম্মেলনে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার নতুন পর্যবেক্ষক দেশ এবং সংলাপের অংশীদার হতে পারে। এ সম্পর্কে চীন জানিয়েছে, আফগানিস্তান ও তুরস্ককে প্রয়োজনীয় সংশ্লিষ্ট আইনগত মর্যাদা প্রদান 'তিনটি শক্তি' - বিচ্ছিন্নতাবাদ, ধর্মীয় চরমপন্থা এবং সহিংস ও সশস্ত্র শক্তি - দমন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্থিতিশীলতার জন্য কল্যাণকর হবে।
ছেং কুও পিং বলেন,
"আফগানিস্তান ও তুরস্ককে প্রয়োজনীয় সংশ্লিষ্ট আইনগত মর্যাদা প্রদান 'তিনটি শক্তি' - মাদকদ্রব্য, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনের জন্য কল্যাণকর হবে।"
প্রথমবারের মতো ভবিষ্যত উন্নয়ন দিক নিয়ে ব্যাপক কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং নতুন পর্যবেক্ষক দেশ ও সংলাপ অংশীদার আর্কষণ করার মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এবার পেইচিং শীর্ষ সম্মেলন আশাব্যঞ্জক হবে।
সুপ্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠান। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি ওয়াং ছুই ইয়াং জিনিয়া। আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। এবার শুনবেন আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ন্যাটো যৌথ বাহিনীর
হামলা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন।
আফগানিস্তানের একজন কর্মকর্তা ২৭ মে বলেছেন, ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তা বাহিনী ২৬ মে সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের পাকটিয়া প্রদেশে একটি বিমান হামলা চালায়। এতে ৮ জন আফগান নাগরিক নিহত হয়।
পাকটিয়া প্রেদশের সরকারি মুখপাত্র জানান, হামলার ঘটনা এ প্রদেশের একটি গ্রামে ঘটে। হামলায় একটি আফগান পরিবারের ৬টি শিশু মোট ৮জন সদস্য নিহত হয়। তারা তালিবান সদস্য নয়, সাধারণ গ্রামবাসী।
ন্যাটো যৌথ বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, ন্যাটো এ খবর জানে। এখন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তা বাহিনী আফগান সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ ঘটনাটি তদন্ত করছে। পরে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবে ন্যাটো। নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক ন্যাটোর আরেকজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা বলেন, এ খবরের কোনো প্রমাণ নেই। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই একটি বিশেষ তদন্ত দল পাকটিয়ায় পাঠিয়ে এ ঘটনার তদন্ত করছে।
সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা বলেছেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের ভাবানুভূতি বিবেচনা না করে পারে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র এখন চায় না দু'দেশের সম্পর্কের অবনতি হোক।
(জিনিয়া ওয়াং)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |