Web bengali.cri.cn   
জি-৮ শীর্ষ সম্মেলন শেষ
  2012-05-25 10:14:21  cri

সুপ্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠান। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি ওয়াং ছুই ইয়াং জিনিয়া। আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে একরাশ শুভেচ্ছা জানিয়ে এখন শুরু করছি 'চলতি প্রসঙ্গ'। প্রথম অংশ জি-৮ শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে।

আটদিনব্যাপী জি-৮ শীর্ষ সম্মেলন ১৯ মে শেষ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রিয় অবকাশযাপন স্থান মেরিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিডে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে 'ক্যাম্প ডেভিড ঘোষণা' গৃহীত হয়। এতে বলা হয়েছে যে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো হচ্ছে জি-৮-এর সবচেয়ে জরুরি কর্তব্য। ইউরোপের গুরুতর ঋণ সংকট এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জি-৮ নেতাদের এ ঘোষণার ব্যাপারে একমত হওয়া সহজ কাজ ছিল না। সেজন্য এ ঘোষণা গ্রহণকে এবারের সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।

কী ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে ইউরোপের ঋণ সংকট মোকাবিলা করা যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার সম্ভব হয় - শীর্ষ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই তা হয়ে ওঠে প্রধান আলোচ্য বিষয়।

জার্মানি ও ব্রিটেন অর্থ সংকোচন নীতি মেনে চলাকে সমর্থন করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বার বার সতর্ক করে দেয় যে, অর্থ সংকোচন নীতি মেনে চলায় অর্থনীতির জন্য কেবল নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্ট হয়েছে। ফলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানকে উদ্দীপ্ত করা দরকার। এর সঙ্গে সঙ্গে, গ্রীসের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ফ্রান্সের সরকার পরিবর্তন - এ দু'টি বিষয়ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সমর্থন করা হয়েছে। জি-৮ সম্মেলনের শেষ দিকে দেখা যায়, দু'দিনের আলোচনার পর অর্থনীতিকে উদ্দীপ্ত করার সমর্থক এবং অর্থ সংকোচন সমর্থক – এ দু' গোষ্ঠি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ছোটখাটো মতপার্থক্যকে পাশে রেখেছে।

'ক্যাম্প ডেভিড ঘোষণায়' বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির পুররুদ্ধার প্রবল চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। তাই জি-৮ মনে করে যে, 'সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিয়ে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং আর্থিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা দরকার'। এতে আরো বলা হয়েছে যে, ভিন্ন ভিন্ন দেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যবস্থাও হবে ভিন্ন ভিন্ন। তাই 'কিভাবে অর্থনীতি উন্নয়ন করা যায়, এ নিয়ে আলোচনা করার জন্য ঘোষণায় ইউরোপকে স্বাগত জানানো হয়েছে।' ইউরো এলাকার স্থিতিশীলতা বিশ্বের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অংশগ্রহণকারী নেতারা বলেন, গ্রীসের উচিত ইউরো এলাকায় অন্তর্ভূক্ত থাকা এবং প্রতিশ্রুতি পালন করা। জি-৮ নেতারা মনে করেন, শক্তিশালী ইউরো অঞ্চল বিশ্ব পরিস্থিতি ও অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জি-৮ নেতারা ইউরো এলাকার বর্তমান সংকট এবং সম্ভাব্য সংকটের ব্যাপারে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। স্পেন ও ইতালিসহ গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোকে সংকট থেকে বেরিয়ে আনার জন্য জি-৮ সব ধরনের চেষ্টা করবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে অর্জিত সাফল্য সদস্য দেশগুলোর মতভেদকে দূর করলেও, অর্থনীতি ও জ্বালানি সম্পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থায় রূপ নেবে না। তাই কার্যত জি-৮ নেতাদের মধ্যে সৃষ্ট ঐকমত্য কেবল একটা লিখিত দলিল; কোন কার্যকর তাত্পর্য তার নেই। এ বিষয়টির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে যে, জি-৮ 'ধনী দেশগুলোর ক্লাব'; সমস্যা ও দ্বন্দ্ব নিরসনের ক্ষমতা তার নেই। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর বিশ্বের অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরাম হিসেবে জি-৮-এর প্রভাবকে ছাপিয়ে গেছে জি-২০। (জিনিয়া ওয়াং)

 

সুপ্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠান। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি ওয়াং ছুই ইয়াং জিনিয়া। আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। এখন শুনবেন ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে একটি প্রতিবেদন।

ন্যাটোর পঁচিশতম শীর্ষ সম্মেলন ২১ মে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শিকাগোতে শেষ হয়েছে। এবারের সম্মেলন হচ্ছে এ সংস্থার বৃহত্তম শীর্ষ সম্মেলন। ২৮টি ন্যাটো দেশ এতে অংশ নেয়। আফগানিস্তান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তা বাহিনীতে অংশগ্রহণকারী ২২টি ন্যাটোর অংশীদার দেশ সম্মেলনে যোগ দেয়। এছাড়া, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারাও এ সম্মেলনে অংশ নেন। দু'দিনের আলোচনার পর তিনটি বিষয় নিয়ে নেতাদের মধ্যে মতৈক্য হয় এবং 'শিকাগো শীর্ষ সম্মেলন ঘোষণা' গৃহীত হয়। এবার শীর্ষ সম্মেলন বেশ সাফল্য অর্জন করেছে।

অর্থনৈতিক সংকট, বিশেষ করে ইউরোপের ঋণ সংকটের কারণে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর ওপর ব্যয় সংকোচনের চাপ রয়েছে। আর্থিক সংকটের মধ্যে একটি নতুন যুগে কিভাবে নতুন ন্যাটো প্রতিষ্ঠা করা যায়, তা ছিল এবারের আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সম্মেলনে ন্যাটো নেতারা ২০টিও বেশি সামরিক সহযোগিতা প্রকল্প অনুমোদন করেন।

এবারের শীর্ষ সম্মেলনে ১৩টি দেশ নতুন সদস্যপদ লাভ করে। নতুন যোগদানকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।

আফগানিস্তান সম্পর্কিত বিষয়ে শিকাগো শীর্ষ সম্মেলনে জানানো হয়, দু'বছর আগে লিসবন শীর্ষ সম্মেলনে প্রণীত সেনা প্রত্যাহার রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রত্যাহার কাজ চলছে। ন্যাটো জানিয়েছে, ২০১৪ সালে যুদ্ধবাহিনী প্রত্যাহার করার পর আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর একটি ক্ষুদ্র আংশ মোতায়েন থাকবে।

আফগানিস্তান সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কয়েকটি অমীমাংসিত সমস্যা আছে। রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান মতভেদ ন্যাটো সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছে। আমরা সবাই জানি যে, ২০১০ সালে লিসবন শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সহযোগিতা করবে ন্যাটো ও রাশিয়া। তবে রাশিয়ার কাছে ব্যালিষ্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র আইনগত নিশ্চয়তা দিতে প্রত্যাখ্যান করেছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অচলাবস্থায় পড়েছে।

শ্রোতা বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আগামী সপ্তাহের একই সময় আবার আমরা আপনাদের সামনে হাজির হবো। ততদিন ভালো থাকুন। যাই চিয়ান। (জিনিয়া ওয়াং)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040