|
প্রথম ধর্মরাজ এই প্রাসাদ নির্মাণ করেন ।তিনি লো-দ্রুকপা নামে ভূটানের বৌদ্ধধর্মের একটি বিশেষ শাখার প্রবর্তক।লো-দ্রুকপা অনুসারীরা ভূটানের বিশেষ প্রভাবশালী দল ।এই প্রাসাদের মূল নাম ছিল ক্রাশিস-চোস-জং যার অর্থ হলো বিশেষ সম্প্রদায়ের দুর্গ ।সাদা রংয়ের ভবনটির মূল কাঠামো দোতলা ।চার কোণায় রয়েছে চারটি তিনতলা টাওয়ার ।প্রতিটি টাওয়ারের ছাদ তিনস্তর বিশিষ্ট সোনালি রংয়ের ।এছাড়া রয়েছে একটি বড় কেন্দ্রীয় টাওয়ার ।
মূল থিম্ফু জং বা ডো-গুয়েন জং নির্মিত হয়েছিল ১২১৬ সালে । ধর্মগুরু গাইয়ালোয়া লানাংপা নীল পাথরে এটি নির্মাণ করেন ।ডো-গুয়েন জং নামের অর্থ হলো নীল পাথরের জং ।এই স্থানটি বর্তমান থিম্ফু থেকে একটু দূরে দেচেরি ফোড্রাং এ অবস্থিত ।এর কয়েক বছর পর ধর্মগুরু ফাজো দ্রুকম শিগপো এটি অধিকার করেন । ফাজো দ্রুকম শিগপো ভূটানে প্রথম দ্রুকপা কাগুই ধর্মরীতির প্রবর্তক ।১৬৪১ সালে শাবদরং গাওয়াং নামগুয়েল, ফাজো দ্রুকমের উত্তরসূরীদের কাছ থেকে এই প্রাসাদ অধিকার করেন ।কিন্তু পরে তার কাছে মনে হয় এই প্রাসাদটি যথেস্ট বড় নয় ।তখন তিনি প্রশাসনিক কাজের জন্য নিম্ন জং নামে পরিচিত আরেকটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন এবং এই প্রাসাদটি বৌদ্ধ সন্নাসীদের জন্য ছেড়ে দেন ।১৭৭১ সালে আগুনে মূল প্রাসাদ ভবনটি নষ্ট হয়ে যায় ।সে সময় মূল ভবনের যাবতীয় শিল্প সম্ভার নিম্ন জং ভবনে স্থানান্তরিত করা হয় ।১৩তম দ্রুক দেশী যিনি ১৭৪৪ থেকে ১৭৬৩ সাল পর্যন্ত ভূটান শাসন করেন তিনি নিম্ন জং ভবনের অনেক সংস্কার করেন। ১৮৬৬ সালে ভবনটি আবার পরিবর্ধন করা হয় ।১৮৯৭ সালে ভবনটি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।১৯০২ সালে ভবনটি পুনর্নির্মাণ করা হয় ।১৯৫২ সালে ভূটানের রাজা জিগমে দরজি ওয়াংচুক দেশের রাজধানী থিম্ফুতে স্থানান্তরিত করেন । সে সময় প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই ভবনের পরিবর্ধন ও সংস্কার কাজ চলে ।তিনি ভূটানের ঐতিহ্যবাহী রীতিতে এই প্রাসাদের ভিতরের শিল্প সম্ভার ও অন্যান্য অংশ সাজানোর আদেশ দেন ।১৯৫২ সাল থেকে এই প্রাসাদ ভূটান সরকারের প্রধান কেন্দ্র । ১৯৫৩ সালে রাজ পরিবার নবনির্মিত দেচেনচোলিং প্রাসাদে বসবাসের জন্য চলে গেলেও এই ভবনের গুরুত্ব হ্রাস পায়নি।
এখানে রয়েছে সিংহাসন কক্ষ,রাজার দপ্তর,সরকারী সচিবালয়,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়।রাজা এবং ভূটান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলো এই ভবনেই অবস্থিত।এর কাছাকাছি অন্যান্য ভবনে অন্যান্য সরকারী বিভাগ রয়েছে । তাশিচো জংয়ের পশ্চিম অংশে নেইখাং লাখাং নামে একটি টাওয়ারে রয়েছে শাক্যমুনি বুদ্ধর একটি প্রাচীন মূর্তি।সেই সঙ্গে রয়েছে বৌদ্ধ তন্ত্রযানের অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি ।এই প্রাসাদের কারুকার্য ও অন্যান্য শিল্প সম্ভার পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র ।এই প্রাসাদের চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশও অত্যন্ত সুন্দর ।(শান্তা)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |