চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় ২৪ এপ্রিল তার প্রতিষ্ঠা শতবার্ষিকী উদযাপন করে। দেশে-বিদেশে বসবাসরত ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা প্রায় পঞ্চাশ হাজার ছাত্রছাত্রী এ উদযাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তাইওয়ান প্রণালীর দুপারের দুটি ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বারের মতো একসাথে প্রতিষ্ঠা শতবার্ষিকী উদযাপন করেছে। চীনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ মানের প্রতিনিধিত্বকারী ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় এখন বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সারিতে প্রবেশের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

'ছিংহুয়া হচ্ছে চীনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছিংহুয়ার একজন ছাত্র হিসেবে আমি গর্ব বোধ করি।'

'বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা শতবার্ষিকী উদযাপনীতে যোগ দিতে পেরে খুব খুশি আমি। অনেক সহপাঠী দেখেছি। তাদেরকে দেখে যেন নিজের ভবিষ্যত দেখা যায়।'

আপনারা এইমাত্র শুনলেন ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সাধারণ ছাত্রের কথা। তাতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা বোঝা যায়।

ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমে ছিল 'যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুত বিদ্যালয়'। প্রতিষ্ঠার এক শ বছরে ১ লাখ ৭০ হাজার ছাত্রছাত্রী এখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এটা হচ্ছে চীনের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিভাবান ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণার এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এখন ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় ১৬টি ইনস্টিটিউটের ৫৬টি বিভাগের অধিকারী একটি সার্বিক আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়।

যদিও ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় চীনে শ্রেষ্ঠ স্থানে আছে এবং তার জ্বালানি ও তথ্যসহ কিছু বিভাগ বিশ্বের উন্নত মানে পৌঁছেছে, কিন্তু বিশ্বের প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় পঞ্চাশতম স্থানে আছে। এখন এ বিশ্ববিদ্যালয় দশ বছরের মধ্যে বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য গু বিন লিন বলেন, 'ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টিপাত করে আমরা অবশ্যই দেশ ও জাতিকে আশাহত করবো না, উন্নয়নের পদ্ধতি উদ্ভাবন করবো, নির্মাণের পদক্ষেপ দ্রুততর করবো, এ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সারিতে প্রবেশ করে নতুন উজ্জ্বলতা সৃষ্টি করবো।'

চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও ভাষণ দিচ্ছেন

চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণে বলেন, 'চীনের বৈশিষ্ট্যের আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করতে হবে। শিক্ষাদানের পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে। বাস্তব অনুশীলন পর্যায়ের শিক্ষা জোরদার করতে হবে এবং প্রতিভাবান ব্যক্তি প্রশিক্ষণের নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে। বিভিন্ন স্তরের সরকার শিক্ষা খাতে আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ দেবে, শিক্ষা খাতে আরো বেশি সামাজিক সম্পদ ব্যয়কে উত্সাহিত করবে, শিক্ষার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়ার সুষ্ঠু সামাজিক পরিবেশ গড়ে তুলবে।'

প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় উদযাপনী সম্মেলন, আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যদের সম্মেলন এবং নতুন ছিংহুয়া ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ ধারাবাহিক কার্যক্রম আয়োজন করে। তাইওয়ানের সিনচু ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইয়ে মিং ছুয়ান উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সময় বলেন, 'আমরা আশা করি, তাইওয়ানের দুপারের ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় হাতে হাত রেখে সহযোগিতা করে আরো উন্নত হবে এবং ভবিষ্যতে বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)