গর্ভবতীদের কি কি জিনিস বেশি খাওয়া নিষিদ্ধ এবং বাচ্চার জন্মেরপর প্রসূতিদের শরীরচর্চা প্রসঙ্গ
গর্ভধারণকাল হচ্ছে ভ্রূণের সহজে বিকৃত হওয়ার এক বিপদ্জনক সময়, এ সময় ভ্রূণ খুব দ্রুতগতিতে বড় হয়ে থাকে বলে এ সময়ে তরুণী গর্ভবতীদের পুষ্টি আহরনের ওপর বেশি মনোযোগ দেয়ার সঙ্গেসঙ্গে ক্ষতিকর জিনিস গ্রহণ এড়িয়ে চলার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালানো উচিত । কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি ।এগুলো বেশি খাওয়া নিষিদ্ধঃ এক,চীনের তেলে ভাজা ইউথিয়াও নামে রুটি । ইউথিয়াও প্রক্রিয়া করার সময়ে ফিটকিরি এতে মিশাতে হবে । ফিটকিরি এলুমিনিয়ামজাতের অজৈব পদার্থ,তেলে ভাজা ইউথিয়াও বেশি খেলে অতিরিক্ত এলুমিনিযাম আহরণ করার ফলে ভ্রূণের গুরু-মস্তিস্কের ক্ষতি হয়। যার ফলে জন্মগত বুদ্ধিহীনতার মাত্রাবেড়ে যায় । দুই,ফল । ফলের শতকরা ৯০ ভাগ হল পানি,তার পর ফলের সুগার, গ্লুকোজ,আখের সুগার আর ভিটামিন । এসব সুগার সহজে মানুষ গ্রহণ করেন । বেশি ফল খেলে শরীরের ওজন দ্রুত বেড়ে যায় । তাই সাধারণ সময়ে খাবারের একঘন্টা আগে বা পরে গর্ভবতীরা পরিমান মতো ফল খেতে পারেন ।তিন,পালংশাক, পালংশাকের প্রধান উপাদান হল অক্সালিক এসিড । অক্সালিক এসিড দস্তা আর ক্যালসিয়াম দুটোরই ক্ষতিসাধন করে, বেশি পালংশাক খাওয়ার ফলে গর্ভবতীদের শরীরে দস্তা আর ক্যালসিয়ামের অভাব হয় এবং মায়ের স্বাস্থ্য আর ভ্রূনের বড় হওয়ার ক্ষেত্রেক্ষতি হয় ।চারঃ শানচা অর্থাত বৈঁচিজাতীয় বিশেষ ফল। গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয় যে,বৈঁচি ফলটি রক্ত-নালী সম্প্রসারণ করার ও গর্ভকোষ সতেজ করার ক্ষেত্রে ভুমিকা পালন করে এবং গর্ভকোষ সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে,যার ফলে গর্ভপাত বা অকাল প্রসব হয়,বিশেষ করে যে মহিলাদের গর্ভপাত বা অকাল প্রসবের ইতিহাস আছে তাদের বেশি ফল খাওয়া নিষেধ । পাঁচঃ লোনা মাছ। লোনা মাছের ভিতরে এক ধরণের উপাদান মানুষের শরীরে মিশে যাবার মাধ্যমে আরেক ধরনের উপাদানে পরিণত হয়,যা সহজে ক্যান্সার ডেকে আনে ।পরীক্ষা থেকে জানা গেছে, সহজে ক্যান্সার ডেকে আনতে পারে এমন উপাদানটি গর্ভের ফুলের মধ্য দিয়ে ভ্রূণের শরীরে ঢুকতে পারে ।ছয়ঃ চা ও কফি। কফির মধ্যে নেশা সৃষ্টিকারী পদার্থ ক্যাফেইন আছে । ক্যাফেইন স্নায়ুকে উত্তেজিত করতে পারে, হৃদপিন্ডের স্পন্দন দ্রুততর করতে পারে, রক্ত-চাপ বাড়াতে পারে এবং গর্ভের ফুলের মাধ্যমে ভ্রূণের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে । ক্যাফেইন ভিটামিন বি-১ গ্রহনের ক্ষেত্রেবাধা দেয়ায় গর্ভবতীরা শরীর ফুলে যাওয়া রোগে আক্রান্ত হতে পারেন । সাতঃ ঠান্ডা পানীয় । অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয় গ্রহনেরফলে পাকস্থলীর নড়াচড়ায় গোলমাল হতে পারে । অন্ত্রের নড়াচড়া বেড়ে যাওয়ায় গর্ভকোষে সংকোচন হয় এবং যার ফলে গর্ভপাত বা অকাল প্রসব হতে পারে । তাছাড়া কোকজাতীয় পানীয়ের ভেতরকার ক্যাফেইন,রাসায়নিক বস্তু প্রভৃতি ভ্রূণের বড়হওয়ার ক্ষেত্রেঅনুকূল নয় ।

এবারে বাচ্চা জন্ম দেয়ার পর প্রসূতিদেরশরীর চর্চা সম্পর্কে কিছু বলা যাক
গর্ভধারণ ও প্রসব কালের মধ্য দিয়ে প্রসূতিদের সবকটি অবয়ব গর্ভধারনেরআগের অবস্থায় ফিরে যেতে সাধারণত ৬ সপ্তাহ সময় লাগে । এ জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রসূতিদের বাচ্চা জন্ম দেয়ার ৪২ দিন পর একবার শারিরীক পরীক্ষা করতে হবে ।এই পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । প্রসূতির শরীরের নানা অঙ্গপ্রতঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেছে কিনা তা পরীক্ষা করা ছাড়াও নবাগত শিশুর বড় হওয়ার সূচক স্বাভাবিক কিনা তার পরীক্ষাও করতে হবে ।শল্য চিকিত্সার মাধ্যমে হোক বা স্বাভাবিকভাবে হোক বাচ্চার জন্ম হওয়ার পর রক্ত-চাপ এবং স্ত্রী-রোগপরীক্ষা করাতে হবে । সাধারণত ৬ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভকোষ গর্ভধারনেরআগের অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করতে পারে । বেশির ভাগ বাচ্চা মায়ের দুধ খাবে বলে মায়ের স্তনেরওপরীক্ষা করাতে হবে । বাচ্চার জন্ম যদি স্বাভাবিকভাবে হয় তাহলে মায়েরা দু-এক দিনের মধ্যে সহজভাবে কিছু শরীরচর্চা করতে পারেন । শল্য চিকিত্সার মাধ্যমে যে প্রসূতি বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন, পেটের কাটা জায়গা সেলাইয়ের কারণে আরও অসুস্থ অনুভব করতে পারেন বলে পেটের মাংসপেশীর ব্যায়াম ছাড়া তারা হাতপায়ের ব্যায়াম করতে পারেন ।