২০১০ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন অর্থাত চর্তুথ দাভোস ফোরাম ১৩ সেপ্টেম্বর চীনের উত্তর উপকূলীয় শহর---থিয়েচিনে শুরু হয়েছে। চীনের প্রধানমন্ত্রী ও ওয়েন চিয়া পাও ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জোর দিয়ে বলেন, চীনের উন্নয়ন উন্মুক্ত উন্নয়ন। চীনের অর্থনীতি উন্মুক্ত অথর্নীতি। চীন দৃঢ়ভাবে ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন চালিয়ে যাবে । চীন বহির্বিশ্বের দিকে উন্মুক্তকরণের পক্ষে অনুকূল যে কোনো নীতিতে অবিচল থাকবে।
' টেকসই প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া' এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য। বিশ্বজুড়ে ব্যাবসা, রাজনীতি ও শিক্ষা মহল থেকে আসা ১৫০০জনেরও বেশী প্রতিনিধি এবারের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। ফোরাম চলাকালে প্রতিনিধিদের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির পুর্নরুদ্ধারের পটভূমিতে টেকসই উন্নয়ন অর্জনের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।
ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বলেন, বিশ্ব মন্দার আঘাতে চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এক সময় ব্যাপকভাবে পড়ে গেছে। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এমন কি কোনো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যায়। অনেক শ্রমিক তাদের চাকরি হারায়। এই কঠিন পরিস্থিতিতে অর্থনীতি চাঙ্গা করে তোলার জন্য চীন সরকার ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে। যার ফলে চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন,
চীনের এই ব্যাপক পদক্ষেপ কেবল স্বদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও অপেক্ষাকৃত দ্রুত প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে তাই নয় বিশ্বের অর্থনীতির পুর্নরুদ্ধারের গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রেখেছে। যখন বিশ্বের প্রধান প্রধান উন্নত দেশে অর্থনীতির হ্রাস দেখা দিয়েছে তখন চীনসহ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব মন্দার সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য এটা একটি সুসংবাদ।
২০০৯ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের শুরুতে চীনের অর্থনীতি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। সে বছরের প্রথমার্ধে অর্থনীতির বৃদ্ধিহার শতকরা ১১ দশমিক ১ ভাগ ছিল। শহরাঞ্চলের কর্মসংস্থানের সুযোগও ক্রমেই বেড়েছে। বিশেষ করে চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বলেন, চীনের অথর্নীতি উন্মুক্ত অর্থনীতি। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর পাশাপাশি, বৈদেশিক চাহিদা সম্প্রাসরণ ও স্থিতিশীল করতে হবে। এ প্রসঙ্গে নিতি বলেন,
আমাদেরকে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন অনুসরণ করে চলতে হবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা সম্প্রসারণ করতে হবে। সুপ্ত শক্তির দিক থেকে চীন বিশ্বের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ বাজার। বাজারের সুপ্ত শক্তি পুরোপুরি কাজে লাগানো এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা কার্যকরভাবে সম্প্রসারণ করা চীনের অর্থনীতির স্থায়ী ও স্থিতিশীল উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য একান্ত প্রয়োজন।
পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী, বতর্মানে বিশ্বজুড়ে ৫০০টি শক্তিশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৭০টি চীনে বিনিয়োগ করতে এসেছে। গত জুলাই মাসের শেষ দিক পযর্ন্ত চীন ১০ কোটি ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের বিদেশী পুঁজি গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়অ পাও বলেন , চীন বিদেশী ব্যবসায়ীদেরকে চীনে পুঁজিবিনিয়োগে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়। আমাদের বিশ্বাস, তারা চীনে সুযোগ পেতে পারবে।
