|
গত চল্লিশ বছরে মঙ্গোলিয়ার ৪২.৫ শতাংশ ভূমি বিভিন্ন মাত্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। বন ও তৃণভূমির আয়তন ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়াই হচ্ছে মরুকরণের প্রধান কারণ। জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মঙ্গোলিয়ার বনাঞ্চলের আয়তন প্রায় ১৪ লাখ হেক্টর কমেছে। বর্তমানে বনাঞ্চলের আয়তন কেবল সারা দেশের ভূখন্ডের ৮.২ শতাংশ। মঙ্গোলিয়ার প্রায় ৭০ শতাংশ তৃণভূমি বিভিন্ন মাত্রায় মরুকরণের শিকার হয়েছে। তা ছাড়া খরা ও মরুকরণের কারণে মঙ্গোলিয়ার ভূ-পৃষ্ঠতলের পানি সম্পদও অনেকটা কমেছে। এটা হলো ঘন ঘন বালু-ঝড় হওয়ার প্রধান কারণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবছর মঙ্গোলিয়ায় চার পাঁচ বার বালু-ঝড় হয়। এর মাত্রা ও ক্ষতির দিকটাও তীব্রতর হয়েছে। প্রতি সেকেন্ডে বাতাসের গতি থাকে ২৪ কিলোমিটার। এ গতির বাতাসে বাড়ির ছাদ উড়ে যায় এবং তাঁবুগুলো উপড়ে পড়ে যায়। মঙ্গোলিয়ার গুরুতর বালু-ঝড়ের কারণে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
মঙ্গোলিয়া সরকার বালু-ঝড় এবং তৃণভূমির মরুকরণ নিয়ন্ত্রণের ওপর খুব গুরুত্ব দেয়। বন রক্ষার ক্ষেত্রে মঙ্গোলিয়া সরকার ২০০৫ সালে 'সবুজ প্রাচীর' নামক সংরক্ষিত বনাঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা অনুমোদন করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরবর্তী ৩০ বছরে ৩০০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ৫০০ থেকে ১০০০ মিটার প্রস্থের বনাঞ্চল গড়ে তোলা হবে। যদি এ পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে মরুভূমির প্রাকৃতিক পরিবেশের অনেক উন্নতি হবে। তা ছাড়া মঙ্গোলিয়া সরকার বিদেশ থেকে আমদানীকৃত কাঠের শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর আদায় না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এভাবে অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে কাঠ আমদানী করার বিষয়ে উত্সাহ প্রদান করছে।
২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে মঙ্গোলিয়া 'প্রাকৃতিক পরিবেশ আইন'-এর সংশোধনী বিল অনুমোদন করেছে। এ আইনে মঙ্গোলিয়ার সকল নাগরিকের প্রাকৃতিক পরিবেশ, বন এবং প্রাণী রক্ষার দায়িত্ব থাকবে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |