Web bengali.cri.cn   
নতুন কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা বাংলাদেশে
  2010-07-22 20:30:06  cri

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সপ্তাহে নতুন কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা করেছে। চলতি ২০১০-১১ অর্থবছরে কৃষি খাতে ১২ হাজার ৬১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এই নীতিমালায়। দেশের ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে হিসেব নিয়ে নির্ধারিত এই লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থ বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। সদ্য গত ২০০৯-১০ অর্থ বছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ শতাংশ, বা ১১ হাজার ১১৭ কোটি টাকার, কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়।

চলতি বছর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংকের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য ২ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা, বেসরকারি ব্যাংকের জন্য ৩ হাজার ৪৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, বিদেশি ব্যাংকের জন্য ৫৮২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের জন্য ৭৭১ কোটি টাকা।

এই নীতিমালায় চলতি অর্থবছর ঋণ বিতরণে নতুন কিছু ক্ষেত্র ও খাত চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হল কমলা, আগর, স্ট্রবেরি, পান, মধু চাষ ইত্যাদি। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে টিস্যু কালচার ও উচ্চমূল্যের ফসল উত্পাদনের জন্য কৃষিঋণ বিতরণের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নীতিমালা ঘোষণা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ তেমন আক্রান্ত হয়নি। তার অন্যতম কারণ ভালো কৃষি উত্পাদন। তিনি বলেন, কৃষি খাত দুই ভাবে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করে -- এ খাত একদিকে খাদ্য সরবরাহ ঠিক রাখে অন্যদিকে মানুষের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

গভর্নর বলেন, "বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিতে এখন বিভিন্ন দেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা সৃষ্টির বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। আর আমরা আগেভাগেই কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে গুরুত্ব দিয়েছি অভ্যন্তরীণ চাহিদা তৈরি করতে। এসব ক্ষেত্রে আমাদের এখন অনেকেই অনুসরণ করছে।"

নতুন নীতিমালায় আরো ব্যাপকভিত্তিতে পাট চাষ এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাম চাষের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কার করেছে, যা পাট চাষের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। পাট চাষের ক্ষেত্রে এই যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তাতে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সরকারও চেষ্টা করছে।

সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মতে, দেশের ২৭টি জেলায় পাম চাষ করা সম্ভব। ইতিমধ্যে কোনো কোনো এলাকায় পামগাছ রোপণ করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাম চাষে আগ্রহী হতে পারে সেজন্য এ নীতিমালায় তাদের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

কৃষক-বান্ধব বর্তমান গভর্নর দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে কৃষিখাতের উন্নয়ন এবং কৃষকের কল্যাণে ধারাবাহিকভাবে নানা পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন। এর আগে কৃষিঋণ বিতরণকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য তিনি এক ক্রুসেড ঘোষণা করেছিলনে। কৃষকদের জন্য মাত্র ১০ টাকার প্রাথমিক জামানতে ব্যাংক হিসেব খোলার তাঁর সিদ্ধান্ত এবং সেটার কড়াকড়ি বাস্তবায়ন ছিল একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মধ্যদিয়ে জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি কৃষকরা ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসতে পেরেছেন। এ সুবিধার আওতায় ইতোমধ্যে ৮৮ লাখ কৃষক ব্যাংক হিসেব খুলেছেনও।

এটা আশা করা করা অমূলক হবে না যে, সদ্যঘোষিত কৃষিঋণ নীতিমালাও কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন বড় অবদান রাখবে। আর কৃষির উন্নয়ন মানে জাতীয় অর্থনীতিরই উন্নয়ন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040