Web bengali.cri.cn   
শেয়ারবাজারে বড় কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাধ্যতামূলক হচ্ছে বাংলাদেশে
  2010-07-01 19:55:39  cri
বড় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আনতে একটি নতুন আইন করেছে বাংলাদেশের পুঁজি বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা এসইসি। এ আইনে যেসব পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা বা তার বেশি তাদেরকে আগামী বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার বলেছেন, বাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

নতুন এ নিয়মের ফলে বড় বড় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার বাজারের বাইরে থাকার আর সুযোগ থাকছে না।

কোন কোম্পানি এসইসির এ নতুন আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে কমিশন। যেসব কোম্পানি এ আইন মানবে না, কমিশন চাইলে তাদের পরিচালনা পর্ষদকে যেকোনো সময় কৈফিয়তের জন্য ডাকতে পারবে কমিশন এমনকি পরিচালনা পর্ষদে আর্থিক জরিমানা করার এখতিয়ারও রয়েছে কমিশনের।

বাংলাদেশে বর্তমানে শেয়ারবাজারের বাইরে ৫০টিরও বেশি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি রয়েছে, যাদের পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে একাধিক বহুজাতিক কোম্পানিও রয়েছে।

গত ১ জুন জারি করা এ আইনের গেজেটে বলা হয়েছে, কোনো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার অথবা এ গেজেট প্রকাশের তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে অবশ্যই ওই কোম্পানিকে বাজারে শেয়ার ছাড়ার আবেদন জমা দিতে হবে। তবে কোন কোম্পানির ব্যবসা পরিচালনার মেয়াদ তিন বছর না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য এ বাধ্যবাধকতা বলবত্ হবেন।

গেজেটে আরো বলা হয়েছে, কোনো প্রাইভেট কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা বা তার বেশি হলে ওই কোম্পানিকে ছয় মাসের মধ্যে পাবলিক লিমিটেড কম্পানিতে রূপান্তর করতে হবে।

এসইসির এমন উদ্যোগ বাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে সহায়তা করবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ সভাপতি সালমান এফ রহমান। একটি স্থানীয় সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, "এসইসির এমন উদ্যোগ বাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে সহায়তা করবে ঠিকই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয় হচ্ছে, তালিকাভুক্ত হতে ইচ্ছুক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা। বর্তমানে এসইসির যে বিধান রয়েছে, তাতে কোম্পানিগুলোর পক্ষে ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই শেয়ারের দাম নির্ধারণের বিষয়টি উন্মুক্ত রেখে এ বিধানটি কার্যকর করা যেতে পারে। কারণ কোনো কিছুকে বাধ্যতামূলক করাটা কখনোই যুক্তিসংগত নয়।"

তবে বাজারে শেয়ারের চাহিদা থাকলেও জোর করে কোনো কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনার ব্যাপারে মৃদু আপত্তি আছে অনেকের। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, এ ধরনের একটি আইন করার আগে কমিশনের উচিত ছিল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা। তিনি মনে করেন, জোরপূর্বক কোনো কোম্পানিকে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগে ফলাফল ভালো নাও হতে পারে।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সামর্থ্যের তুলনায় শেয়ারের যোগান কম বহু দিন থেকে। এরকম শেয়ার সংকটের কারণে এ বাজারে একটি অস্থিরতাও বিরাজ করে সবসময়। অনেক কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদের তুলনায় তার শেয়ার বিক্রি হয় অনেক বেশি দামে। ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা সব সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। ভাল শেয়ারের যোগান বৃদ্ধি এ অবস্থা থেকে উত্তরণ এবং শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে বলে বাজার সংশ্লিষ্টদের আশা।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040