বাংলাদেশের শেরপুর জেলার কনজাংশন রেডিও লিসনার্স ক্লাবের অলক কুমার দে তাঁর রচনায় লিখেছেন, সময় কারোজন্য অপেক্ষা করেনা, সে চলে তার নিজগঠিতে। প্রতিটি মানুষের জীবনে এমন কিছু ঘটনা বা এমন কিছু মুহুর্ত থাকে যা সেই সময়কেও হার মানায়। মানুষের অর্ন্তদৃষ্টিতে কিছু স্মৃতি এমন ভাবে ভেষে উঠে যে মনে হয়না দিন অনেক চলেগেছে। ১৯৯০ সালের ৭ জুন নিস্তব্দ জোস্না স্নাত রাতে বে খেয়ালীভাবে রেডিওর নপ ঘুরাছি হঠাত্ ভেসে এলে কিছু অচেনা বাংলা কন্ঠ। খুব ভাল লাগল। কথা গুলো অন্য রকম বিধায়# বাড়ির সবাইকে ডেকে তা শুনালাম। অনুষ্ঠান শুনে সবাই মুগ্ধহলো অনুষ্ঠানের এক পর্যায় জানতে পারলাম চীন থেকে এএই অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে আর এই অনুষ্ঠানের উপস্থাপক উপস্থাপিকা সবাই চীনের। চীনাদের কন্ঠে বাংলা এটা সত্যি অদ্ভূত। সবার মুখে অনুষ্ঠানের প্রশংসা শোনে নিজেকে কেমন যেন আবিস্কার বলে মনে হলো। আমি বুধহয় কিছু একটা আবিস্কার করতে পেরেছি। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে চিঠি লিখার ঠিকানা বলা হলো। কিন্তু মানসিক উত্তেজনার কারণে ঠিকানা সংগ্রহ করতে পারলামনা। পর দিন সময় সুচি অনুযায়ী নপ ঘুড়িয়ে পেয়ে গেলাম প্রিয় সিআরআই। সেদিন থেকেই নিয়মিতভাবে অনুষ্টান শোনতে শুরু করি। চিঠি লিখায় আমার কোন অভ্যেস নাথাকলেও কাচা হাতেই একটি চিঠি পাঠালাম সিআরআই বরাবর। আমার দূর্ভাস্য প্রথম চিঠির উত্তর রেডিওতে শুনতে পাইনি। ৩০শে অক্টোবর ১৯৯০ ডাকডিয়ন এসে আমর হাতে একটি চিঠি ধরিয়ে দিল। ঘামের উপর চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল লেখাটি দেখেতো আমার চোখ ছানাবড়া। আমার মন শরীর থেকে শুরু করে শিরা উপশিরা পর্যন্ত আনন্দে লাফিয়ে উঠলো। আমার লাফালাফি দেখে অনেকেই মনে করেছিল আমি বুধহল চীনে যাবার আমন্ত্রণ পেয়েছি। কেউ কেউ তো প্রশ্নই করেছিল কি অলক? তুমিনাকি চীনে যাচ্ছ। আমার জীবনে পাওয়া প্রথম চিঠি সেটি তাও আবার চীন থেকে। আমি ভূলতে পারিনি সেই দিনটির কথা মনে হয় এইতো গত কাল। অথচ কতগুলো দিন চলে গেছে। চীন সম্পর্কে জানার আগ্রটা আমার বেড়ে গেল। প্রতিদিন সিআরআই'র হাত ধরে কল্পনায় ঘুরিফিরি চীনের বিভিন্ন স্থান। আমি ভালবাসী সিআরআই, ভালবাসী চীনাদের, আরো আমাদর এই ভালবাসা বেচে থাকুক অনন্ত কাল। ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা পর জন্ম বলে যদি কিছু থেকে থাকে তবে পরবর্তীতেও যেন আমি সিআরআই'র শ্রোতা হতে পারি এটাই আমার প্রার্থনা। অলক কুমার দে, আপনাকে নিয়মিতভাবে এত বেশি সময় আমাদের অনুষ্ঠান শোনার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আশা করি, আপনি ও আপনার ক্লাবের সবাই নিয়মিত আমাদের অনুষ্ঠান শুনবেন এবং আমাদেরকে চিঠি লিখবেন।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভ্রাতৃ রেডিও লিসনার্স ক্লাবের সভাপতি এস,এম,জাকির হোসেন তাঁর রচনায় লিখেছেন, বাংলা বিভাগের জন্ম আমার জন্ম একই সালে। ১৯৬৯ সালে চীন আন্তর্জাতিক বেতার প্রথম বাংলা ভাষায় অনুষ্ঠান করে। আমি সিআরআইকে কাছে পাই ১৯৮০ সালে। তখন সবেমাত্র হাই স্কুলে যাই। প্রথমে ঠিকানা পাই এক বন্ধুরন কাছে। তখন তার নাম ছিল রেডিও পিকিং। তারপর নাম হল রেডিও বেইজিং এখন সিআরআই। পুবের জানালা নামক বাংলা অনুষ্ঠান প্রচারের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা পত্রিকার শেষে পাঠাতে নিবন্ধ প্রতিযোগিতার ঘোষণা পড়ে এই প্রবন্ধ লিখতে বসলাম। ১৯৮০ সালে প্রথম চিঠি লিখে প্রাপ্তী স্বীকারে পেলাম পকেট ক্যালেন্ডারসহ ভিউকার্ড এবং অনুষ্ঠান সূচী। হাতে পেয়ে কি আনন্দই পেয়েছিলাম। যা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। সেই থৈকে সিআরআইকে আমি আমার পরিবারের একজন ভাবী। তাই আজ গুড়ি গুড়ি করে আমিও ৪০ বত্সরে পা দিয়েছি। বর্তমান সিআরআই এক সুটন্ত ঘোড়ার ছুটছে। সিআরআই'র অনুষ্ঠান শুনে চীন সমন্ধে অনেক কিছুই জানা যায়। তাছাড়া বিশ্বের যতগুলি দেশ বাংলা অনুষ্ঠান প্রচার করে তার মধ্যে সিআরআইকে আমি প্রথম স্থানে রাখি। চীনা সহকর্মীরা তাদের নিজের কন্ঠে সু মধুর বানী প্রচার করে যা শুনতে আমাকে খুবই ভাল লাগে। আমি ১৯৮০ সালে সিআরআইকে যখন প্রথম কাছে পাই তার পর থেকে গ্রামের যুবক যুবকীদের সিআরআই সমন্ধে উত্সাহীত করি এবং সেই থেকে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরাও সিআরআই'র বাংলা অনুষ্ঠান শুনে। এরপর ১৯৮৪ সালে একটা শ্রোতা সংঘ গঠন করি। তখন শ্রোতা সদস্য ছিল ২৫জন। বর্তমানে আমাদের এই ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ৫০০জন। সবাই পত্র না লিখলেও অনুষ্ঠান শুনতে ভূল করে না। আমাদের এই শ্রোতা ক্লাবে ছাত্র, ছাত্রী, কৃষক, শ্রমিক, দিন মজুর, ইন্জিনার, ডাক্তার, অধ্যপক, শিক্ষক, চাকুরীজিবী সবাই আছেন। ১৯৮৪ সালে ক্লাব গঠনের পর থেকে আপনাদের কাছে নাম ঠিকানাসহ কর্মকর্তাদের নামের তালিকা কাঠাই। ২০০৫ সালে সিআরআই থেকে স্বীকৃতি পাই তার নম্বর CRI-1-052-05। সে থেকে এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করে আসছি।