ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধগনরী জেলার কসসোপলীটানা অডিয়েন্সের সম্পাদক মৃত্যুন্ঞ্জয় বেরা তাঁর রচনায় লিখেছেন, আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগের কথা। সেদিনটা আমার খুব মনে পড়ে। শ্রাবনের ঘনকুন্ঞ্জ মেঘরাশি সেদিনের সন্ধ্যাটা যেন আরো বেশি গাঢ় করে তুলেছিল। পড়াশোনায় মন বসছে না। হাতের কাছে টেবিলের উপরে রাখা বুশ রেডিওটার নব খোরাতে লাগলাম আনমনে। সহসা এক হায় গায় এসে স্পষ্ট চীনা কন্ঠে শুনলাম রেডিও পিকিং থেকে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠান। সেই থেকে শুরু। তখন আমার বয়স ১৫, নবম শ্রেণীর ছাত্র। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠান শুনতাম। সেই সময়ে একটি কবিতা লীখে পেলাম সুন্দর একটি টেবিল ক্লথ। এরপর আমার আগ্রহ আরো বেড়ে গেল। নিত্যনিয়ত চীনকে জানার এক অদশ্য বাসনা বারবার আমাকে রেডিও'র কাছে টেনে নিত। পড়াশোনায় আরো বেশি করে অনুপ্রেরণা লাভ করলাম। পড়াশোনার জন্য বেশ কয়েক বছর বাইরে কাটালেও মাঝে মাঝে ঠিকই সময় করে অনুষ্ঠান শুনতাম ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম ও পুরস্কার লাভ করতাম। পড়াশোনার পর বেকার হীবনে সিআরআই'র বাংলা অনুষ্ঠানই ছিল একমাত্র সঙ্গী। এখন আমি লব্ধ প্রতিষ্ঠা এক শিক্ষক। নিয়ম করে অনুষ্ঠান শুনি, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকি আর ছাত্রছাত্রীদের নয়া চীনের গল্প শোনাই। চীনের যাবতীয় তথ্যাদিও ছাত্রছাত্রীদের কাছে উজাড় করে দিই। ইতিমধ্যেই নানান রদবদলের মাধ্যমে সিআরআই'র বাংলা অনুষ্ঠান সমৃদ্ধশালী হয়েছে। শ্রোতাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে গঠিত আমার প্রতিষ্ঠিত শ্রোতাক্লাব কসমোপলীটন অডিয়েন্স বর্তমান অনুষ্ঠান ছাড়াও নানান সামাজিক ক্রিয়াচলাপের সাথে জড়িত। সম্প্রতি শ্রোতাক্লাবের উদ্যোগে সিআরআই'র বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ৪০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আমরা এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজ করি। সবার স্বতঃ স্কূর্ত প্রয়াস ও উপস্থিতিতে আনন্দ সুখর হয়ে ওঠে ঐ অনুষ্ঠান। বন্ধু মৃত্যুন্ঞ্জয় বেরা, আপনি আমাদের অনুষ্ঠান ছাড়াও চীন প্রচার করেন। আপনি চীন ও ভারতের জনগণের মৈত্রীর জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। আপনার মত এত ভাল শ্রোতা আরো বেশি রয়েছে। আমরা এখানে আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের পার্গানাস জেলার তাপান কুমার সার্কার তাঁর রচনায় লিখেছেন, আমি সিআরআই প্রথমে শুনি ১৯৭১ সালে। দাদা ও আরো অনেক অনুষ্ঠান শুনছিলেন। তখন নাম ছিল রেডিও পিকিং। চীনারা নিজেরা খবর পড়তেন। তখন আমি খুব ছোট ছিলাম, মাঝে মধ্যে অনুষ্ঠান শুনতাম। তারপর ১৯৮৬ সাল, আমি তখন কলেজে পড়ি, সেইসময় থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠান শুনে আসছিলাম এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকতাম। দু'বারের মত পুরস্কারও পেয়েছি। আগে অনুষ্ঠান হত আর্ধা ঘন্টার। ২০০৪ সালের জুলাই মাস থেকে এক ঘন্টার অনুষ্ঠান প্রচার শুরু হয়েছে এবং দিনে ৪বার হচ্ছে। এতে শ্রোতাদের ভীষন সুবিধা হচ্ছে। কেউ প্রথম বার না শুনতে পারলে, পরের বার সে অনুষ্ঠান শোনার সুযোগ পাচ্ছে। এই সুবিধা আমার মনে হয় আর কোনো বেতারের নেই। আগে সিআরআই বেতার থেকে আমি, তুমি ও সে পত্রিকা বের হত। ২০০৮ সাল থেকে পূবের জানালা পত্রিকা বের হচ্ছে। এই পত্রিকা থেকে শ্রোতারা অনেক কিছু অজানা তথ্য জানতে পারছে।২০০৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে সিআরআই'র বাংলা ভাষার ওয়েবসাইট চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে অনেক শ্রোতা বন্ধু বাংলা ওয়েবসাইট থেকে অনেক কিছু জানতে পারছে। বিশেষ করে যাদের এই সুবিধা আছে। বইয়ে পড়েছি চীন এক বিশাল ও বিচিত্র দেশ। তাই ছোট বেলা থেকে চীন সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেড়েছে। রেডিও মারঘাত্ ঘতটুকু জানার চেষ্টা করেছি। তার হয়ত কিছুটা জেনেছি। কিন্তু চোখে দেখা ও শুনার মধ্যে বিস্তর পার্থজ্য রয়েছে। চীনকে চোখে দেখার আমার অফুরন্ত আজাঙ্খা রয়েছে। জানিনা এই আশা কোনদিন পূর্ণ হবে কিনা? আগে অনুষ্ঠান শুনতাম নিয়মিত, কোনদিন বাদ দি নাই। কিন্তু বর্তমানে আমি একজন স্কুল শিক্ষক। নিজের কাজ সংসারের কাজ রয়েছে। তারপর আমার একটি ছোট ছোট ছেলে রয়েছে। তার বয়স দু বছর হল। ওকে সবচাইতে বেশি সময় দিতে হয়। তার মধ্যেও সময় করে আপনাদের অনুষ্ঠান নিয়মিত শোনার চেষ্টা করি। ভবিষ্যতে আমার ছেলেও যাহাতে আপনাদের অনুষ্ঠান শোনে এবং যোগাযোগ রাখে, তাকে বলব সে ব্যবস্থা করতে বর্তমানে বাংলা বিভাগে যে ৩৭জন চীনা কর্মী আর ১০জন বাঙালী বিশেষজ্ঞ রয়েছে তাদের প্রত্যেকের জন্য রইল আমার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আমি আশা করবো, চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগ ভবিষ্যতে দিনগুলো আরো উজ্জ্বলতর হয়ে উছবে। বন্ধু তাপান কুমার সার্কার, আপনি বেশি সময় আপনার ছোট ছেলে দিয়েছেন। আপনি ঠিক করেছেন। বিচ্চি ও শিশুদেরকে বেশি মোনযোগ দেয়া হল মা বাবার দায়িত্ব। আশা এবং বিশ্বাস করি, আপনার কথার মত ভবিষ্যতে আপনার ছেলেও আমাদের নিয়মিত শ্রোতায় পরিণত হবে। আশা করি, আপনার ছেলে সুস্থ্যভাবে বেরে উঠবে।