|
২১ জানুয়ারী সাংহাই বিশ্ব মেলা উদ্বোধনের আরো ১০০ দিন বাকি রয়েছে। এ উপলক্ষে ফ্রান্সে চীনা দূতাবাস আর ফ্রান্সের বিশ্ব মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যুরো ২০ জানুয়ারী প্যারিসের চীনের সংস্কৃতি কেন্দ্রে যৌথভাবে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সাংহাই বিশ্ব মেলা ও ফ্রান্স এবারের বিশ্ব মেলায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পর্কে অবহিত করেছে। অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, সাংহাই বিশ্ব মেলা চীন ও বিশ্বের বিনিময় আর সহযোগিতার জন্য একটি কার্যকর প্লাটফর্ম হবে।
ফ্রান্সে চীন দূতাবাসের অস্থায়ী রাষ্ট্রদূত লিউ হাই সিং, আন্তর্জাতিক প্রদর্শন ব্যুরোর চেয়ারম্যান জিন পিয়েরে লাফোন, ফ্রান্সের বিশ্ব মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যুরোর চেয়ারম্যান জোস ফ্রেশাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এ দিনের প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে লিউ হাই সিং প্রথমে সাংহাই বিশ্ব মেলার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সাংহাই বিশ্ব মেলা হচ্ছে বিশ্ববাসীদের চীনকে জানানোর জানালা এবং বিভিন্ন দেশের আকর্ষণীয় শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ। তিনি বলেন, 'আর মাত্র ১০০ দিন পর বিশ্ব মেলা সাংহাইয়ে মহাসমারোহে উদ্বোধন হবে। এটা বিশ্ব বিশ্রুত এক মহাসম্মিলনী হবে। এ পর্যন্ত ২৪০টিরও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এ মেলায় অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ব মেলার ইতিহাসে অংশগ্রহণকারী দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সংখ্যার দিক থেকে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। অনুমান অনুযায়ী, ৭ কোটি মানুষ বিশ্ব মেলা দেখতে আসবেন। বিশ্ব মেলায় বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের সাংস্কৃতিক সফলতা, সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক সাফল্য ও ধ্যানধারণা প্রদর্শিত হবে। এটা হবে পৃথিবীকে চীনকে জানানোর জানালা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনী বৈজ্ঞানিক সাফল্য প্রদর্শনের মঞ্চ।'
ফ্রান্স হচ্ছে ইতিহাসে বিশ্বে সবচে বেশি ও মেলা আয়োজনকারী দেশ। ফলে বিশ্ব মেলার ওপর তার বিশেষ অনুভুতি আছে। সাংহাই বিশ্ব মেলার ওপর ফ্রান্স সরকার সারাক্ষণ দৃষ্টি রাখছে। ফ্রান্স হচ্ছে পৃথিবীতে সর্ব প্রথম সাংহাই বিশ্ব মেলায় অংশগ্রহণের সম্মতি প্রদান করা দেশের মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব মেলা চলাকালে ফ্রান্স একটি জাতীয় ভবন, দুটি বিশাল আঞ্চলিক ভবন ও একটি স্থানীয় প্রদর্শনী মঞ্চ স্থাপন করবে। লিউ হাই সিং বলেন, সাংহাই বিশ্ব মেলা চীন ও ফ্রান্সের আদানপ্রদান ও সহযোগিতার জন্য একটি নতুন প্লাটফর্ম সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, '২০০৮ সালে চীন ও ফ্রান্সের সম্পর্কের কঠিন অবস্থা দেখা দেয়ার পর পুনরায় দ্রুত উন্নয়নের কক্ষপথে ফিরে আসার পর এমন একটি সন্ধিক্ষণে সাংহাই বিশ্ব মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যখন গেলো বছর চীন ও ফ্রান্সের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং বছরের শেষ দিকে উভয়ের ভেতর নতুন জাগরণের সৃষ্টি হয়েছে। এটি হয়তো চলতি বছর আরো উচ্চ ও দ্রুত উন্নয়নের পর্যায়ে প্রবেশ করবে। আমি বিশ্বাস করি, এ ভালো প্লাটফর্ম অবশ্যই দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে। কারণ চীন ও ফ্রান্সের জনগণ সবসময় পরস্পরের প্রতি আস্থাবান এবং পরস্পরের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়ায়।'
বিশ্ব মেলা চলাকালে ফ্রান্স নানা ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে ফ্রান্সের সংস্কৃতি ও শিল্পকলা প্রদর্শন করবে। যেমন ফ্রান্স ভবনে চীনাদেরকে ফরাসী প্রথার বিয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করার আমন্ত্রণ জানাবে। এখন আপনারা চীনা কন্ঠ শিল্পী ইয়ে পেই লেই'র ফ্রান্স ভবনে গাওয়া 'সবচেয়ে রোমান্টিক বিয়ে অনুষ্ঠান' নামে গানটি শুনছেন। ফ্রান্সের বিশ্ব মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যুরোর চেয়ারম্যান ফ্রেশাস বলেন,
'বিয়ের পোশাক পড়ে ফ্রান্স ভবনে আসা দম্পতিরা একটি সযত্নে তৈরি বিয়ের প্রমাণ পত্র ও একটি মূল্যবান উপহার পাবেন। এ বিয়ের প্রমাণ পত্র পাওয়ার পর একটি বিশেষ লটারিতে অংশ নেয়ার সুযোগও পাবেন। বিজয়ীদেরকে এক সপ্তাহব্যাপী নিখরচায় ফ্রান্স ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হবে।'
আন্তর্জাতিক প্রদর্শন ব্যুরোর চেয়ারম্যান জিন পিয়েরে লাফোন মনে করেন, বিশ্ব মেলার মাধ্যমে চীন আর বিশ্বের যোগাযোগ আরো ঘনিষ্ঠ হবে। তিনি বলেন, 'বিশ্ব মেলা হচ্ছে বিনিময়ের সুবর্ণ সুযোগ। এখন আমরা একটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের পৃথিবীতে আছি। বিনিময়ে সমতা থাকা উচিত। বলা যায়, বিশ্ব মেলা বিনিময় ও সহযোগিতার জন্য একটি খুব ভালো প্লাটফর্ম সৃষ্টি করতে যাচ্ছে।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |