|
গত শতাব্দির নববইয়ের দশকের প্রথম দিকে সেভিল্লা ছিল দক্ষিণ স্পেনের একটি মাঝারি গোছের শহর । এর লোকসংখ্যা ছিল মাত্র সাত লাখ ।১৯৯২ সালে কলম্বাসের আমেরিকা মহাদেশ আবিস্কারের ৫০০ বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বিংশ শতাব্দির সর্বশেষ বিশ্ব মেলা সেভিল্লা শহরে অনুষ্ঠিত হয় ।
১৪৯২ সালে নৌ পরিব্রাজক কলম্বাস সেভিল্লার কার্তুজা দ্বীপ ছেড়ে আটল্যান্টিক মহাসাগার পাড়ি দিয়ে আমেরিকা মহাদেশের সন্ধান পেয়েছিলেন । তখন থেকে পাঁচ শ' বছরের পর সেভিল্লার কার্তুজা দ্বীপে অনুষ্ঠিত বিশ্বমেলার মূল বিষয় ছিল আবিস্কারের যুগ ।
অতীতের মহাকীর্তির চিত্র পুনরায় বিশ্ববাসীর চোখের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে স্পেন চেষ্টার ত্রুটি করে নি । স্পেন সরকার রাজধানী মাদ্রিদ থেকে সেভিল্লা পর্যন্ত স্পেনের প্রথম এক্সপ্রেস রেলপথ নির্মাণের জন্য মোটা অংকের অর্থ বরাদ্দ করেছিল । আগে সাধারণ রেলপথে রাজধানী মাদ্রিদ থেকে সেভিল্লা যেতে ১০ ঘন্টা লাগত । নতুন এক্সপ্রেস রেলপথে মাত্র তিন ঘন্টা লাগে । রেলগাড়ির সর্বোচ্চ বেগ ঘন্টায় ২২০ কিলোমিটার । ফলে সেভিল্লা যেতে দেশীবিদেশী দর্শকের যথেষ্টা সুবিধা হয়েছিল ।
এক নতুন নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ায় সেভিল্লার চেহারা সম্পুর্ণভাবে বদলে গেছে । সেভিল্লার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে ৭টি সেতু । কার্তুজা দ্বীপে নির্মিত হয়েছে সেভিল্লা বিশ্ব মেলার এক শ'টিরও বেশী প্রদর্শনী ভবন ।
১৯৯২ সালের ২০ এপ্রিল সেভিল্লা বিশ্ব মেলা শুরু হয় । ১১২টি দেশ ও ২৩টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এ মেলায় যোগ দিয়েছিল । ছ' মাস ধরে এ মেলা চলেছিল । এর দর্শকের সংখ্যা চার কোটিরও বেশী । দুই তৃতীয়াংশ দর্শকই স্পেনিস ।
অনেক দেশের প্রদর্শনী ভবনের স্থাপত্য প্রযুক্তি দর্শকের মনে গভীর দাগ কেটেছে । কোনো কোনো প্রদর্শনী ভবন স্থায়ীভাবে সেখানে রাখা হয়েছে ।
অতীতে দক্ষিণ স্পেন গরীব আর উত্তর স্পেন সচ্ছল বলে পরিচিত ছিল । কিন্তু সেভিল্লা বিশ্ব মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এ অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে । বিশ্বের অনেক খ্যাতনামা কোম্পানির কারখানা স্থাপিত হয়েছে কার্তুজা দ্বীপে । কার্তুজা দ্বীপকে এক সময় ইউরোপের সিলিকোন ভ্যালি বলে অভিহিত করা হয়েছে ।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |