Web bengali.cri.cn   
বিশ্ব মেলার মূল বিষয়-১
  2009-11-10 09:35:22  cri
যুগে যুগে মানব জাতি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয় । সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে নানা ধরণের নতুন দৃষ্টিভঙ্গীও আবির্ভুত হয় । বিশ্ব মেলা যার উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষকে নতুন জ্ঞান দেয়া তার জন্মের পর আবহমান যন্ত্র ও বাতাসের দিক প্রদর্শক যন্ত্রের মত তার মূল বিষয়ে প্রতিফলিত হয়েছে নানা যুগের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রধান দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনের ধারা ।

১৮৫১ সাল থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ব মেলার কোনো নির্ধারিত মূল বিষয় ছিল না । তবে বিশ্ব মেলা বরাবরই " বিদ্যাই হলো শক্তি" এবং " বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হলো অসীম সৃজনী শক্তির অধিকারী " এ দু'টো শ্লোগান প্রচার করতো । এ সময়পর্বের প্রতিটি বিশ্ব মেলায় যে নতুন নতুন পণ্যদ্রব্য প্রদর্শিত হত তাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি অর্জনে মানবজাতির অনন্ত বাসনার পরিচয় থাকতো ।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানব জাতির নতুন নতুন কৌতুহল জাগিয়ে তুলে । এক একটি স্বপ্ন যখন বাস্তবে পরিণত হয় তখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাফল্যের দ্বারা দর্শকদের আকর্ষণের প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকা বিশ্ব মেলার পক্ষে অপরিহার্য ।

১৯৩৩ সালে "এক শতাব্দির অগ্রগতি" ছিল যুক্তরাষ্ট্রের চিকাগো বিশ্ব মেলার মূল বিষয় ।এ মেলায় অতীতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাফল্যের যে সারসংকলন করা হয় তার অর্থ দাঁড়ায় যে , পরবর্তী বিশ্ব মেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাফল্যকে আর ফলাও করে প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হবে না । বরং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশ্ব মেলা নতুন কিছু প্রদর্শনের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবে ।

১৯৩৫সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বিশ্ব মেলা যুদ্ধ ও শান্তি এবং মানুষে মানুষে ও রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সম্পর্কের ওপর নিবিড় দৃষ্টি রাখে । কেন না , এ দু'টো মহাযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মানবজাতি স্পষ্টত:ই উপলব্ধি করেছে যে , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কেবল উন্নতি নয় , যুদ্ধ ও দুর্গতিকেও বয়ে আনতে পারে । যেমন , রকেট উদ্ভাবিত হওয়ার পর গোলার চেয়ে অধিক ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র তৈরী করা হলো । জৈব জ্বালানী ও খনিজ জ্বালানী ব্যবহারের পর তৃতীয় প্রজন্মের জ্বালানী হিসেবে আণবিক শক্তি মানবজাতির জন্য সুন্দর জীবন নিয়ে আসার আগেই পারমানবিক বোমার বিস্ফোরণে মানব জাতি শিউরে উঠলো

এ সময়পর্বে দুধারি তরবারির মত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব জনগণকে এ কথা বুঝতে সাহায্য করেছে , দয়া ও নিষ্ঠুরতা , ভালোবাসা ও ঘৃণা এবং সৌন্দর্য ও কদর্যতা যেন পাশাপাশি থাকে ।যারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আয়ত্ব করে অথচ মনুষ্যত্ব ও সভ্যতাকে তোয়াক্কা করে না তারাই শুধু দুর্যোগ সৃষ্টি করবে । কালক্রমে মানুষের মনে শান্তি উপভোগের প্রবল আকাংক্ষা জেগে উঠে । তারা বিশ্ব মেলায় যে আর নতুন শিল্পজাত দ্রব্য দেখতে চায় না তা প্রতিফলিত হয়েছে পরবতীকালের বিশ্ব মেলার মূল বিষয়ে । যেমন ১৯৩৫ সালের বেলজিয়ামের ব্রাসেলস বিশ্ব মেলার মূল বিষয় ছিল নিরলস প্রচেষ্টায় শান্তি অর্জন ।১৯২৭ সালে ফ্রান্সের প্যারিস বিশ্ব মেলার মূল বিষয় ছিল আধুনিক বিশ্বের শিল্পকলা ও প্রযুক্তি।১৯৫৮ সালে বেজিয়ামের ব্রাসেলস বিশ্ব মেলার মূল বিষয় ছিল বিজ্ঞান,সভ্যতা ও মনুষ্যত্ব। ১৯৬২ সাল যুক্তরাষ্ট্রের সিয়েটো বিশ্ব মেলার মূল বিষয় ছিল মহাকাশ যুগের মানবজাতি।১৯৬৪ সাল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ব মেলার মূল বিষয় ছিল সমঝোতার মধ্য দিয়ে শান্তির দিকে অগ্রসর ।১৯৬৭ সাল ক্যানাডার মণ্ট্রিল বিশ্ব মেলার মূল বিষয় ছিল মানব জাতি ও বিশ্ব ।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040