Web bengali.cri.cn   
চীন-দক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতার নতুন ধারণা ও কৌশল(ছবি)
  2009-11-06 19:22:44  cri

 চীন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন মৈত্রী সংস্থার সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ ও সহযোগিতা ত্বরান্বিতের জন্য চীনের গণ বৈদেশিক মৈত্রী সমিতি গত ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত পেইচিংয়ে চীন-দক্ষিণ এশিয়া মৈত্রী সংস্থাগুলোর প্রথম ফোরামের আয়োজন করে। এবারের ফোরামের প্রসঙ্গ ছিল 'চীন-দক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতার নতুন ধারণা ও নতুন কৌশল। এবারের ফোরামের লক্ষ্য হল দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা উন্নয়নের পাশাপাশি বহুপক্ষীয় যোগাযোগ ও সহযোগিতার নতুন পদ্ধতি খোঁজা, চীন দক্ষিণ এশিয়ার চীন মূখী মৈত্রী সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্র ও পদ্ধতি বাড়ানো এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার পরিকল্পনা নির্ধারণ করা। দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বিপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার ১৯টি চীন মূখী মৈত্রী সংস্থার ৫০জনেরও বেশি প্রতিনিধি এবং চীনের ২৭টি অঞ্চলের বৈদেশিক মৈত্রী সমিতির প্রতিনিধিরা এবারের ফোরামে অংশ নিয়েছেন।

চীনের গণ বৈদেশিক মৈত্রী সমিতির চীন এশিয়া ও আফ্রিকার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যান ফেং জুওকু বলেছেন, চীন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু বেসরকারী যোগাযোগ সরকারী যোগাযোগের চেয়ে অনেক কম। যদিও গত কয়েক বছরে চীন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বেসরকারী বাণিজ্য ও সংস্কৃতির যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হচ্ছে, তবুও তা যথেষ্ট নয়। তিনি আশা করেন, চীন দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে এ অঞ্চলের একীকরণ ত্বরান্বিতের জন্য একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। এ কারণেই চীনের গণ বৈদেশিক মৈত্রী সমিতি এবারের ফোরামের আয়োজন করে। তা আশা করে, এবারের ফোরামের মাধ্যমে চীনের বৈদেশিক মৈত্রী সংস্থাগুলো দক্ষিণ এশিয়ার চীন মূখী মৈত্রী সংস্থার সঙ্গে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক মৈত্রী সংস্থার মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা আরো জোরদার হবে। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সুষ্ঠু সম্পর্ক রয়েছে। বহু বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার চীন মূখী মৈত্রী সংস্থা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ চীনের সঙ্গে মৈত্রী জোরদারের ক্ষেত্রে অনেক অবদান রেখেছেন। এবারের ফোরামের মাধ্যমে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন মৈত্রী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে চাই। কারণ এসব সংস্থার একটি অভিন্ন লক্ষ্য রয়েছে যে, চীনের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা।'

ইউননান প্রদেশ হল চীনের দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী সবচেয়ে বড় একটি প্রদেশ। ইউননান অনেক আগে থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ রাখছে। ইউনান প্রদেশের বৈদেশিক বিষয়ক কার্যলয়ের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা অফিসের পরিচালক চিন ছেং বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইউননান প্রদেশের অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে গত দুই বছরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের গতি বেশি দ্রুত। তিনি মনে করেন, এ ধরণের ফোরাম নিয়মিতভাবে আয়োজিত হবে। এর মাধ্যমে চীনের নানা স্থানের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা হবে। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'আমরা মনে করি, এবারের ফোরামের মাধ্যমে সবাই নিয়মিতভাবে মতামত বিনিময় করতে পারবো। এতে আমরা কার্যকর মতামত ও প্রস্তাব উদ্ধার করে ক্রমাম্বয়ে তা বাস্তবায়ন করতে পারবো।'

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সাক্ষাত্কার দিচ্ছেন

তিন দিনব্যাপী ফোরামে চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীরা চীন-দক্ষিণ সম্পর্কের উন্নয়নে বেসরকারী মৈত্রী সংস্থা কীভাবে আরো ভাল ভূমিকা পালন করবে, কীভাবে এসব সংস্থার মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ ও সহযোগিতা বজায় থাকবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার চীন মূখী মৈত্রী সংস্থার অধিবেশন প্রতিষ্ঠা ও দক্ষিণ এশিয়ার চীন মূখী মৈত্রী সংস্থাগুলোর মৈত্রী জোরদারসহ বিভিন্ন অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এবারের ফোরামের অংশগ্রহণকারী চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান --- বাংলাদেশের সেনা বাহিনীর সাবেক প্রধান সেনাপতি মাহবুবুর রহমানও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি এবারের ফোরামের আলোচনার সাফল্যের প্রসংশা করেছেন। এখন শুনুন সিআরআই'র সাংবাদিক আবাম ছালাউদ্দিন ও ছাই ইউয়ের নেয়া তাঁর সাক্ষাত্কার।

বাংলাদেশ-চীন গণ মৈত্রী সমিতিও চীনের বহু বেসরকারী সংস্থার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এ সংস্থার মহাসচিব এস কে সিক্তার ভবিষ্যতে চীনের সঙ্গে যোগাযোগের পরিকল্পনা বর্ণনা করেছেন। এখন শুনুন সিআরআই'র সাংবাদিক আবাম ছালাউদ্দিনের নেয়া জনাব সিক্তারের সাক্ষাত্কারটি।

ইউনান প্রদেশের বৈদেশিক বিষয়ক কার্যালয়ের নীতি গবেষণালয়ের পরিচালক চু ওয়েনচুং মনে করেন, এবারের ফোরামের মাধ্যমে চীনের নানা স্থানের বৈদেশিক মৈত্রী সমিতিগুলোর সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার মৈত্রী সংস্থাগুলোর সমঝোতা বেড়েছে। তারা বহু দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগের বিষয়ে এক মত হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'ভৌগোলিক সুবিধার কারণে ইউননান চীনের দক্ষিণ এশিয়ায় যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। আমরা আর্থ-বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের মধ্য দিয়ে নিজেদের পরিবর্তন করতে চাই। এবারের ফোরামের মাধ্যমে আমরা জেনেছি যে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোরও এ ধরণের চাহিদা রয়েছে। ফোরামে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিনিধিরা পৃথক পৃথকভাবে আমাদেরকে ইউননানের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কথা জানিয়েছেন।'

তিন দিনের আলোচনার মাধ্যমে ফোরামে চীন দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে বেসরকারী সহযোগিতা উন্নয়নের দিক নির্ধারন এবং এ ফোরাম নিয়মিতভাবে আয়োজন ও দক্ষিণ এশিয়ার চীন মূখী মৈত্রী সংস্থা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চীনের গণ বৈদেশিক মৈত্রী সমিতি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের চীন মূখী মৈত্রী সংস্থাগুলোকে মৈত্রীর স্মারক ক্রেষ্ট প্রদান করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার ১২টি সংস্থার মধ্যে ১৩টি সংস্থা মৈত্রী স্মারকলিপিতেও স্বাক্ষর করেছে। এটি আঞ্চলিক একীকরণ ত্বরান্বিতের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। (ছাই ইউয়ে)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040