

এর আগে ২০০৫ সালের 'মেক পভার্টি হিস্টোরি' প্রচারাভিযানের পর এটাই হচ্ছে উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোর যৌথ আয়োজনে সবচেয়ে বড় উদ্যোগ। বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং নোবেলজয়ী মানবাধিকারকর্মী দক্ষিণ আফ্রিকার ডেসমন্ড টুটুর মতো ব্যক্তিত্বরা জোটের এ উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রধান জাস্টিন ফোরসিথ এ ব্যাপারে বলেন, "আমরাই হতে পারি বিশ্ব থেকে ক্ষুধা চিরতরে দূরীকরণের প্রথম প্রজন্ম। আমরা ২০০৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যকে ইতিহাসে পরিণত করতে পারিনি। তবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার এক বিশাল পদক্ষেপ নিতে পেরেছি। আমরা লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র্য দূর করেছি। তবে এ অগ্রগতির সবচেয়ে দুর্বল অংশ হচ্ছে ক্ষুধা।"
ডেসমন্ড টুটু বলেন, ক্ষুধা চিকিত্সার অযোগ্য কোনো রোগের মতো নয় কিংবা এড়ানো যায় না এমন কোনো বিয়োগান্ত বিষয়ও নয়। তিনি বলেন, কোনো শিশু আর পেটে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যাবে না, এটা আমরা নিশ্চিত করতে পারি। পারি অনেক জীবন বাঁচাতে। আমরা উদ্যোগী হলে সব কিছুই করা সম্ভব। আমাদের কথা শুনতে বা সে মোতাবেক পদক্ষেপ নিতে নেতাদের বলতে পারি আমরা।"
'দি এনাফ ফুড ফর এভরিওয়ান ইফ' প্রচারাভিযানে জড়িত ব্যক্তিদের বিশ্বাস, পৃথিবীতে সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যের ব্যবস্থা করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণই যথেষ্ট। তাঁরা বলছেন, সক্ষম সবাই যদি শিশুদের ও গরিব পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত সাহায্য দেয় এবং দরিদ্র দেশগুলোর সরকার যদি বড় বড় কোম্পানির কর ফাঁকি বন্ধ করতে পারে, তবে মানুষকে আর না খেয়ে থাকতে হবে না। প্রচারাভিযানের উদ্যোক্তাদের দাবি, গরিব কৃষকদের তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা চলবে না; জ্বালানিচালিত গাড়ি উত্পাদনের পরিবর্তে বেশি বেশি শস্য ফলাতে হবে; এবং পর্যাপ্ত খাদ্যের নিশ্চয়তার প্রশ্নে সরকার ও বড় কোম্পানিগুলোকে তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সত্ ও স্বচ্ছ হতে হবে।
আন্দোলনের নেতারা জি-এইট সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষুধার সমস্যাটি নিয়ে কথা বলার জন্য সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জোটের চেয়ারম্যান বেন জ্যাকসন বলেন, বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য ও সংক্রামক রোগ কমাতে পারার কারণে সবার গর্বিত হওয়া উচিত। কিন্তু রুঢ় বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিবছর এইডস, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার মতো রোগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ মারা যায় ক্ষুধার কারণে। তাঁর মতে, এ সমস্যার মূল উত্পাটনে সরকার, নাগরিক সমাজ ও জনকল্যাণে আত্মনিয়োজিতদের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। সবাই মিলে এমন এক বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে, যেখানে কোনো শিশু আর না খেয়ে থাকবে না। (সূত্র: বিবিসি)

| ||||



