বন্ধুরা, তিব্বতের গণতান্ত্রিক সংস্কার শুরু হওয়ার ৫০ বছরে তিব্বতী জনগণের জীবন-যাত্রার মান ব্যাপক উন্নত হয়েছে। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লাসা শহরের পোতালা প্রাসাদের কাছাকাছি তিব্বতের প্রাচীন এলাকায় একজন ৭৪ বছর বয়সী বসবাস করেন। উনি হচ্ছেন ই সি লুও চুই । তিনি বর্তমানে এখানে সুন্দর ও সুখী জীবন যাপন করছেন।
ই সি লুও চুই খুবই অতিথি পরায়ন বাইরের কোন মানুষ তিব্বতে আসলে তিনি তাকে নিজের বাসায় আসার আমন্ত্রণ জানান। এ সম্পর্কে ই সি লুও চুই বলেন: " আগে আমার এমন সুন্দর বসতবাড়ি ছিল না। এখন আমাদের জীবন-যাত্রার মান বেশ উন্নত হয়েছে। সরকারের সাহায্যে নিজের একটি নতুন বসতবাড়ি হয়েছে।
আমি বাইরের মানুষকে জানাতে চাই যে, আমাদের জীবন এখন কত সুন্দর ও সুখের হয়েছে।" পুরানো তিব্বতের একটি ক্রীতদাস পরিবারে ই সি লুও চুই'র জন্ম । সুতরাং, ক্রীতদাস পরিবারের কারণে ই সি লুও চুই'র ছোটবেলার জীবন কেটেছে খুবই দুঃখ কটে। তিনি পুরানো স্থাত স্মরণ করে বলেন, সেসময় প্রায় কিছু প্রতিদিন যথেষ্ট খাবার খেতে পারতাম না। এমন কি শীতকালে সারা পরিবারের জন্য একটি গরম কাপড়ও ছিল না। এ ছাড়াও ক্রীতদাসরা সাধারণত গরু ও ঘোড়ার খামারে থাকতো। সেসময়ের জীবন যাত্রার কথা বর্ণনা করার কোন ভাষা নেই। ১৯৫০ সালে তিব্বতের লোকসংখ্যা ছিল ১০ লাখ। তাদের মধ্যে ৯ লাখেরই নিজেদের বসতবাড়ি ছিল না।
২০০৬ সালে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কৃষক ও পশুপালকদের নিরাপত্তা আবাসিক প্রকল্প চালু হয়। এ ক্ষেত্রে চীন সরকার প্রায় ১১ বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করেছে। এখন ৯ লাখ কৃষক ও পশুপালক সব নিরাপদা ও আরামদায়ক নতুন বাড়িতে হস্তান্তর করেছে। এর সঙ্গে সঙ্গে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কৃষক ও পশুপালকদের জন্য নিরাপত্তা খাবার পানির প্রকল্পও হাতে নিয়েছে।
এ প্রকল্পের সুবিধায় আরো বেশি তিব্বতী অধিবাসীদের বাড়িতে পানির পাম্প বসানো হয়েছে। সুতরাং এ পর্যন্ত তিব্বতীদের মধ্যে কাঁধে করে পানি বয়ে আনার ইতিহাস ইতোমধ্যেই অনেক অতীত হয়ে গেল। শান্তিপূর্ণ মুক্তির পর, বিশেষ করে ১৯৫৯ সালে গণতান্ত্রিক সংস্কার চালু হওয়ার পর, তিব্বত থেকে পুরোপুরিভাবে পুরনো তিব্বতের রাজনীতি ও ধর্মের মিশ্রণে থাকা প্রাচীণ সামাজিক ব্যবস্থা বাতিল হয়ে গেছে। হাজার হাজার ক্রীতদাস এখন দেশের সত্যিকার মালিকে পরিণত হয়েছে।
ই সি লুও চুইও প্রথমবারের মত তিব্বতের জাতিগত প্রতিরক্ষা বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পান। লেখাপড়া শেষের পর তিনি সুষ্ঠুভাবে লাসার ইতিহাসে প্রথম দফা পরিবহ পুলিশ দলের একজন সদস্যে পরিণত হয়েছেন। ই সি লুও চুই বলেন, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জীবন তাঁর মনে প্রগাঢ় ছাপ ফেলেছে। সেখানকার স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়ার চাহিদা পূরণ ছাড়া তিনি তিব্বতী ভাষা শেখার সুযোগও গ্রহণ করেছেন। এটি তাঁর ভবিষ্যত সুন্দর জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হয়েছে।
1 2 3 |