v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-08 18:37:33    
তিব্বত আসল ঘটনা জানার পর বিভিন্ন দেশের নেট-ব্যবহারকারীদের আরো প্রতিক্রিয়া

cri

    সম্প্রতি সিআরআই অনলাইনের ৩৯টি বিদেশী ভাষার ওয়েবসাইটে তিব্বতের প্রকৃত ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশ করার পর তা বিভিন্ন দেশের নেট-ব্যবহারকারীদের মধ্যে দ্রুত আবেদন সৃষ্টি করেছে। তারা ই-মেইল, চিঠি ও টেলিফোনের মাধ্যমে প্রতিদিন তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাওয়া কিছু প্রতিক্রিয়া নিচে দেয়া হলো।

    ইউরোপ থেকে পাওয়া প্রতিক্রিয়া:

    ইতালির নেট-ব্যবহারকারী জিউসেপ এর আগে লাসা এসিছিলেন। তিনি বলেছেন, '২০০৭ সালে আমি তিব্বত গিয়েছিলাম। সেখানকার মানুষ শান্ত ও সুখী জীবন পছন্দ করেন। তাদের জীবনযাত্রার মানের অনেক উন্নতি হয়েছে। আমি তিন বার তিব্বত গিয়েছি। আমি দেখেছি, সেখানকার রাস্তাঘাট আগের চেয়ে আরো অনেক ভালো হয়েছে। শহর আরো সুন্দর হয়েছে। তিব্বতে এবারের সহিংসতা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা সেখানাকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে। এটা সত্যিই পরিতাপের বিষয়। তারা নিরীহ নাগরিকদের বিরুদ্ধে যে সহিংসতা চালিয়েছে, আমি এর তীব্র বিরোধিতা করি। আমি প্রত্যাশা করছি, অদূর ভবিষ্যত আবার তিব্বতে যাবো। আবার সেখানকার সুখ ও শান্তি দেখতে পাবো।'

    জার্মান নেট-ব্যবহারকারী বার্নড কোল্বউইটজ সিআরআই এর জার্মান ভাষার ওয়েবসাইটকে দেয়া চিঠিতে লিখেছেন, 'আমার দুঃখ লাগে, এই ভেবে যে, জার্মানীতে অনেক ভন্ড আছে। তারা বাইরে চীন গণ প্রজাতন্ত্রের ভূভাগীয় অখন্ডতা স্বীকার করলেও বাসায় ফিরে সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলে। এই কয়েক দিনে অনেক জার্মান তথ্য মাধ্যম চীনের তিব্বতে সংঘটিত ঘটনাকে পুঁজি করে চীনের সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে উস্কানি দিচ্ছে এবং একে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে আসন্ন পেইচিং অলিম্পিক গেমস প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।'

    লি নামে একজন জার্মান নেট-ব্যবহারকারী সিআরআই অনলাইনের জার্মান ভাষার ওয়েবসাইটে মন্তব্য করেছেন, 'গত কয়েক দিনে এন-টিভি, এআরডি, জিডিএফ ও দার স্পিজেলসহ জার্মানীর তথ্য মাধ্যমগুলো তিব্বতের লাসায় সংঘটিত সহিংস ঘটনার সম্পূর্ণ বিকৃতি তথ্য পরিবেশন করেছে। তারা নির্লমু মিথ্যাচার করেছে। ৫০ বছর আগে হলে হয়তো কেউ তাদের মিথ্যাচার বুঝতে পারতো না। কিন্তু বর্তমান যুগে তারা অবশ্যই নিজের মিথ্যাচারের জন্য অনুশোচনা করবে। আমি আশা করি, আরো বেশি মানুষ সিআরআই অনলাইনের রিপোর্ট পড়বেন।'

    জার্মান শ্রোতা মির্কো এল তাঁর চিঠিতে বলেছেন, 'সম্প্রতি চীনের তিব্বত অঞ্চলের ঘটনা ব্যাপক মানুষের মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে। আমি মনে করি, এটা হচ্ছে বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা ও শক্তিগুলোর একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে অলিম্পিক বর্ষে চীনে রাজনৈতিক দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করা এবং বিশ্ব থেকে চীনকে একঘরে করে রাখা। আমি আশা করি, চীন সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে এবং সাম্রাজ্যবাদীদের 'চীনকে তছনছ' করে দেওয়ার অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দেবে।

    জার্মানীর শ্রোতাবন্ধু হেলমুট মাট এ সম্পর্কে একটি ইমেইল পাঠিয়েছেন। ইমেইলে তিনি বলেন, প্রথমে আমি জানতে পারি নি যে, এ ঘটনা অবশ্যই কিছু সংখ্যক ব্যক্তির আসন্ন পেইচিং অলিম্পিক গেমসের বিরুদ্ধে চালানো দূরভিসন্ধিমূরক অভিযান । এ ঘটনার নেতিবাচক ও মিথ্যা রিপোর্ট বিশ্বে প্রচারের গতি থেকে বোঝা যায়, এবারের দাঙ্গাহাঙ্গামা ঘটনা সৃষ্টির পিছনে কত নির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করা ছিল। জার্মানী এবং বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় কিছু লোক চীনের বিরোধিতা করে এবং স্বাধীন তিব্বতকে সমর্থন করে । তবে একটি স্বাধীন তিব্বতের ধারণা কী হবে ? কেউ তা সঠিকভাবে জানে না ।

    তিব্বতে সংঘটিত ঘটনাগুলো থেকে সেইসব লোকদের ইতিবাচক ভুমিকা দেখা যায় না। অনেক নিরীহ চীনা যে এ ঘটনায় হতাহত হয়েছে সেই বাস্তবতা বিশ্বের অবিবেচক সংবাদ মাধ্যম ও রাজনীতিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে নি। চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ৪'র এক রিপোর্ট দেখার পর আমি জেনেছি, দৃম্বৃতকারীরা পাঁচ জন নীরিহ নারীকে আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে, তার জন্য আমি দারুণভাবে শোকাবিভূত। আমাদের দেশে চীনের তিব্বতের লোকজনের রাজনৈতিক স্বশাসনের ক্ষমতা থাকার কথা জানা লোকসংখ্যা খুব কম। তোমাদের ওয়েবসাইটে ২০০৬ সালের তিব্বত সাংস্কৃতিক সপ্তাহের সংশ্লিষ্ট বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। তা খুব ভালো । তার মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ তিব্বতের ঐতিহাসিক রীতিনীতি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সার্বিকভাবে জানতে পেরেছে। আমি বিশ্বাস করি, চীন থেকে তিব্বতকে বিভক্ত করার অপচেষ্টাকারী চীনে বিশেষ করে তিব্বতে থাকা বিছিন্নতাবাদী লোকদের ধ্বংস করতে হবে । এর পাশাপাশি আমি আশা করি, চীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব তিব্বতের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেবেন। লোকজন আগের মতই নির্বিঘ্নে তিব্বতে বসবাস করতে পারবেন এবং তাদেরকে জীবনের নিরাপত্তার জন্য ভাবতে হবে না । আমি আরো আশা করি, আমাদের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম পুনরায় তাদের রিপোর্টের ধারা পরিবর্তন করবে । সংবাদ মাধ্যম সম্পর্কে আমার অসন্তুষ্টির কারণ হলো : ভুল খবর তাড়াতাড়ি প্রকাশিত হয়ে যায়, তবে মিথা খবর প্রচারের কথা আস্তে আস্তে জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়। তিব্বতের দুর্ঘটনার মাধ্যমে পেইচিং অলিম্পিক গেমস বয়কটের আচরণও আমার অসন্তুষ্টির কারণ।

    স্পেনের বার্সিলোনা শ্রোতা জ্যাকুইন তার ইমেল বার্তায় বলেন, ছিংহাই-তিব্বত রেলপথ চালু হওয়া থেকে বোঝা যায়, তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নতি ও স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এটা চীন সরকারের অগ্রাধিকার নীতি ও চীনা জনগণের সমর্থন থেকে বিচ্ছিন্ন করার সতো ঘটনা নয়। সুতরাং মাতৃভূমি থেকে তিব্বতকে বিভক্ত করার অপচেষ্টা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী ।

    ইতালির শ্রোতা জরদানো টেলিফোন ও ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে লাসায় সহিংসতার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন , লাসায় এবারের সহিংসতার ব্যাপারে চীন সরকারের সংযমী ব্যবস্থার খুব প্রশংসনীয়।

     নেট নাগরিক মিঃ ইয়্যু ফ্রান্সে বসবাসকারী একজন চীনা প্রবাসী । তিনি ১৪ মার্চ লাসার সহিংস ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন । তিনি বলেন , সহিংসতায় বহু নিরীহ মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে তিনি মর্মাহত। তিনি বলেন , গত কয়েক দশকে চীন সরকারের নেতৃত্বে তিব্বতের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতকারী তথাকথিত স্বাধীন তিব্বত অপপ্রয়াসের মাধ্যমে পেইচিং অলিম্পিক গেমসকে নসাত্ করার যে অপেচেষ্টা চালিয়েছে তা ব্যর্থ হতে বাধ্য। তিনি বিশ্বাস করেন , চীন সরকার অবশ্যই এই ঘটনা সুষ্ঠুভাবে নিষ্পত্তি করতে পারবে ।

     চেক প্রজাতন্ত্রের শ্রোতা জিনড্রিচ টোমিসেক ইস্পারেন্টো ভাষাভাসী। তিনি ইস্পারেন্টো ওয়েব সাইটে পাঠানো একটি ইমেল বার্তায় বলেন , লাসা ও অন্যান্য কয়েকটি জায়গায় কিছু সংখ্যক দুস্কৃতকারী যে সহিংসতা সৃষ্টি করেছে , তাতে তিনি মর্মাহত হয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মশাল হস্তান্তর অনুষ্ঠান ও প্রস্তুতিমূলক কাজ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে না পারে , সর্বান্তকরণে তিনি তা কামনা করেন। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি কাজ ও সফলতা হবে বলে কামনা করেন তিনি।

    মোনাকোর শ্রোতা হেলেন ফরাসী ভাষা ওয়েব সাইটে পাঠানো একটি ইমেল বার্তায় বলেন , কিছু দিন আগে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সঙ্গে তিব্বতের সহিংসতাকে যুক্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, যার কোনো যুক্তি নেই । অলিম্পিক গেমস ক্রীড়া প্রতিযোগিতা , রাজনীতির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই । সুতরাং অলিম্পিক গেমসের সঙ্গে কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে তিব্বতের সহিংসতাকে যুক্ত করার যে অপচেষ্টা চালিয়েছে তা সত্যিই বিভ্রান্তিকর। পেইচিং অলিম্পিক গেমস সফল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন ।

1 2 3 4 5