চলচ্চিত্রে খাবার পরিবেশন করা নিয়ে চীনের চলচ্চিত্র অনুরাগীদের মধ্যে আলোচনা তৈরি হয়। তারা মনে করেন, আমাদের চলচ্চিত্রে পশ্চিমা দর্শকদের খাবার পরিবেশন করার দরকার আছে কিনা? খাবার পরিবেশনা করার এই আচরণ যুক্তিসঙ্গত এবং গ্রহণযোগ্য কিনা?
আসলে এসব প্রশ্নের উত্তর অনেক সহজ। উত্তর হলো অবশ্যই এসবের দরকার আছে।
আসলে ভাবতে হবে, হলিউড কিভাবে বিশ্বে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে? এর উত্তর অনেক সহজ। হলিউডের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র বা স্বাধীন চলচ্চিত্র, যাই হোক না কেন, পরিপক্ক শিল্পে 'সর্বজনীনতা' খুঁজে পাওয়া যায়।
বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের দিক থেকে বলা যায়, চীনের অনেক চলচ্চিত্র নির্মাণের মান দিন দিন পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। তবে এসব চলচ্চিত্রে সর্বজনীনতার অভাব রয়েছে।
আসলে এমন ধরনের অবস্থা ফ্রান্সেও দেখা যায়। ফ্রান্সের স্থানীয় চলচ্চিত্রের সংখ্যা প্রতি বছর কম নয়।
তবে এর বিষয়বস্তু অতিরিক্ত স্থানীয়করণের ফলে বিদেশে প্রচার করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এটা স্বাভাবিক। আবার ফ্রান্সের চলচ্চিত্রের মধ্যে যেসব চলচ্চিত্রে দেশটির বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয় এবং বিদেশে ভালো বিক্রি হয়, সেসব চলচ্চিত্রের সংখ্যাও কম নয়।
ফ্রান্সের একটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র 'দ্য ইনটাচেবলস'। যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ ফ্রান্সের বৈশিষ্ট্যময় এই কমেডির কপিরাইট কিনে নেয়। এই চলচ্চিত্র চীনেও অনেক জনপ্রিয়তা পায়।
সিঙ্গাপুরের চলচ্চিত্র পরিচালক ছেন চে ই'র প্রথম চলচ্চিত্র 'ইলো ইলো' ২০১৩ সালে কান চলচ্চিত্র উত্সবে পুরস্কার পায়। তারপর চলচ্চিত্রটি চীনের তাইওয়ানের 'গোল্ডেন হর্স অ্যাওয়ার্ড' লাভ করে।
বিদেশি তথ্য মাধ্যম এ চলচ্চিত্রের যে বৈশিষ্ট্যের কথা বেশি করে প্রশংসা করেছে তা হলো এর সর্বজনীনতা।
গত শতাব্দীর ৯০'র দশকের শেষ দিকে সিঙ্গাপুরের একটি সাধারণ পরিবারে ঘটে যাওয়া একটি গল্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দর্শকের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাই বলা যায়, চীনের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করার প্রক্রিয়ায় সর্বজনীনতার ওপর গুরুত্বারোপ করলেই হলিউডের চলচ্চিত্রের মতো উচ্চ মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে চীনের স্বাধীন চলচ্চিত্র অনেক বিরল। জাপানের কার্টুন চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রাঙ্গানে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া অপরাধবিষয়ক চলচ্চিত্র নির্মাণ করা শুরু করে। বর্তমানে চীনের জন্য বাজারের সম্ভাবনাময় স্বাধীন চলচ্চিত্র খুব দরকার।
এর মাধ্যমে বিশ্বের কাছে নিজেদের চলচ্চিত্রের পরিচয় তুলে ধরা যাবে এবং বিশ্ব এসব চলচ্চিত্র সম্পর্কে জানতে পারবে।
'আলোছায়া' পরিবেশনায় লিলি লাবণ্য ও এনামুল হক টুটুল।