নয়া চীন প্রতিষ্ঠার আগে হেইলোংচিয়াং প্রদেশের সবচেয়ে পুরনো সামরিক শিল্প কারখানা ছিলো এটি। ১৯০৪ সালে তা প্রতিষ্ঠার সময় নাম ছিলো হেইলোংচিয়াং যন্ত্রপাতি মেরামত কারখানা।
নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর এটি চীনের অস্ত্র শিল্প গ্রুপের ৬৭২ নম্বর কারখানায় পরিণত হয়। পরে তা নর্থ স্পেশাল ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেড হয়।
সাধারণত বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র পণ্যদ্রব্য উত্পাদন ও গবেষণা করে কোম্পানিটি। এর সঙ্গে সঙ্গে তা চীনের বিশেষ বোমা উত্পাদন, গবেষণা ও পরীক্ষারও কেন্দ্র। এ কোম্পানি বেসামরিক লিফ্ট ও গাড়ির ডিস্ক ব্রেকও উত্পাদন করে থাকে।
মি. হো ইউয়ুন ছিং এসএলইউ'র একজন শিক্ষার্থী হিসেবে অনেক গর্বিত। ছাত্রজীবনের কথা তিনি সবসময় মনে রাখেন। ক্যাম্পাসে আয়োজিত নানান সেমিনার ও পরামর্শ সম্মেলনে অংশ নেয়ার পর তিনি নিজের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রবন্ধ লেখেন।
তিনি মনে করেন, তার আজকের এমন সাফল্যের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এখানে পেশাগত দক্ষতা, অনুশীলন ও নৈতিকতা উন্নত করার সুযোগ পান তিনি।
হেইলোংচিয়াং প্রদেশের হুয়া'আন মেসিনারি কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মি. লিউ চিন ছুন ১৯৮২ সালে শেনইয়াং শিল্প ইন্সটিটিউটের যন্ত্রপাতি বিভাগের অ্যামুউনিশন থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি হুয়া'আন কারখানায় যোগ দেন। সেখানে প্রতিদিন নানান ধরনের বোমা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে গবেষণা করেন তিনি।
১৯৮৫ সালের ১২ অক্টোবর রাতে হুয়া'আন কারখানার একটি গুদামে বিস্ফোরণ ঘটে। কয়েক টন ওজনের সরঞ্জাম বিস্ফোরণের কারণে আকাশে উড়ে যায় এবং মি. লিউ'র অনেক পরিচিত কর্মী এ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান।
এ ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত হন এবং পরে আরও গভীরভাবে নানান ধরনের বোমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন।
৮ বছর পর তিনি এ কারখানার গবেষণাগারের উপ-প্রধান হন। বিভিন্ন সামরিক পণ্যদ্রব্য ও উত্পাদন প্রযুক্তি সম্পর্কে আলোচনা ও প্রদর্শনীতে অংশ নেয়ার জন্য তিনি বহুবার কুয়েত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানি সফর করেন। এসব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
নয়া চীন প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীর কুচকাওয়াজে তার উদ্ভাবিত তিনটি উন্নত প্রযুক্তির ট্যাংক একসাথে থিয়ানআনমেন স্কয়ারে প্রদর্শন করা হয়।
মি. লিউ'র মা-বাবা সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র ছেলে। সারাদিন গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি মা-বাবার যত্ন নিতে পারতেন না। তার পিতা যখন মৃত্যুবরণ করেন সেসময়েও তিনি গবেষণার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
তিনি চীনের অস্ত্র গবেষণায় অনেক অবদান রেখেছেন। বর্তমানে তিনি চীনের অস্ত্র শিল্প পরিষদের সিনিয়র সদস্য, বোমা শাখা কমিটির সদস্য, হেইলোংচিয়াং প্রদেশের অস্ত্র শিল্প পরিষদের সদস্য।
গবেষণায় অসাধারণ সাফল্যের জন্য তিনি অনেক পুরস্কার ও সনদ লাভ করেছেন। তিনি কখনো গবেষণার কাজ বন্ধ করেন নি। বোমা নিয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশের পাশাপাশি বইও রচনা করেন তিনি।
বন্ধুরা, আপনারা এখন যে গানটি শুনছেন তার নাম 'মনের কথা বলি'। এ গানটি চীনের সৈন্যদের জন্য রচনা করা হয়।
আর এ সুন্দর গানের মধ্য দিয়েই শেষ করছি আজকের 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠান। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn
রেডিও'র মাধ্যমে আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে মিস করলে আমাদের বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.bengali.cri.cn।
এবার তাহলে বিদায়। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে একই সময় একই দিনে আবারও কথা হবে। যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)