Web bengali.cri.cn   
চীনের শেনইয়াং লিকং বিশ্ববিদ্যালয়
  2015-09-09 18:16:24  cri

চলতি বছর চীনের সিনচিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ১.৩ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তির পরিমাণ প্রথমবারের মতো ৮০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

সিনচিয়াং শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ক অফিস থেকে জানা গেছে, সিনচিয়াংয়ের প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে। চলতি বছর সেখানকার ১৩০০টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ১৩ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। এ হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৩৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৪৪.৫ শতাংশ।

উল্লেখ্য, সিনচিয়াংয়ের দক্ষিণাঞ্চলে চলতি বছর প্রথমবারের মতো উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার বিশেষ সহায়তা নীতি চালু করা হয়। স্থানীয় অঞ্চলের ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী সিনচিয়াং ও চীনের অন্যান্য অঞ্চলের উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন, তাদের মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন, যা ২০১৪ সালের চেয়ে ২.০৫ শতাংশ বেশি।

বন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা শিক্ষা সম্পর্কিত খবর শুনলেন। এখন চীনের লিয়াওনিং প্রদেশের শেনইয়াং শহরের লিকং বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্য জানবেন।

শেনইয়াং লিকং বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো নাম ছিলো চীনের উত্তর-পূর্ব সামরিক বাহিনীর শিল্প উচ্চ বিদ্যালয়, যা ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৬০ সালে শেনইয়াং প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ২০০৪ সালে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে তা শেনইয়াং লিকং বিশ্ববিদ্যালয়ে (এসএলইউ) পরিণত হয়।

এ বিশ্ববিদ্যালয়টি লিয়াওনিং প্রদেশের শেনইয়াং শহরে অবস্থিত। ক্যাম্পাসের স্থাপত্য দারুণ চমত্কার। আর এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ভীষণ আকর্ষণীয়।

৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয় শিল্প প্রধান ইন্সটিটিউট থেকে বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে।

এতে মোট ১৭টি ইন্সটিটিউট ও ২টি শিক্ষা বিভাগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এখানে রয়েছে ডক্টরেট পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র, মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রধান বিষয় ৫৭টি এবং স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রধান বিষয় ৫৩টি। পেশাগত শিক্ষকের সংখ্যা ১০৭০ জন।

চীনের শিল্প একাডেমির একাডেমিশিয়ান মি. ইয়াং শাও ছিং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ একজন অধ্যাপক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের সংখ্যা ৫৭৫ জন, তাদের মধ্যে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী ২৫০ জন।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আয়তন ১১.৫ লাখ বর্গমিটার। লাইব্রেরির আয়তন ৩৯ হাজার বর্গমিটার এবং এতে বইয়ের সংখ্যা ১২.৯ লাখেরও বেশি। ক্যাম্পাসের মধ্যে রয়েছে স্টেডিয়াম ও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার নানান মাঠ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষ ফুটবল দল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এসএলইউ'র শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯ হাজারেরও বেশি। বিগত ৬০ বছরে চীনের বিভিন্ন খাতের ১ লাখেরও বেশি ব্যক্তি এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেছেন।

শেনইয়াং লিকং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চীন-রুশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি সহযোগিতা কেন্দ্র ও শহর পর্যায়ের উদ্যান বিজ্ঞান ।

এসএলইউ ২০১০ সালে লিয়াওনিং প্রদেশের সরকার, চায়না অর্ডন্যান্স ইকুয়েপমেন্ট গ্রুপ, চায়না নর্থ ইন্ড্রাস্ট্রিজ গ্রুপের সঙ্গে সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করে।

এসএলইউ এ পর্যন্ত রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, জার্মানি, জাপান ও ফিনল্যান্ডসহ বিশ্বের ১২টি দেশের ৬০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতমূলক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

এসএলইউ রাশিয়া ও বেলারুশ জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একাডেমির ৯টি গবেষণাগারের সঙ্গে ৪টি উন্নত সাজসরঞ্জাম প্রযুক্তির পরীক্ষাগার নির্মাণ করেছে। রাশিয়ার তমক্স স্টেট ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সহযোগিতায় সেখানে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছে। সেখানে বিখ্যাত রুশ লেখক আলেক্সান্দার পুশকিনের নামে রুশ ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও রয়েছে।

এসএলইউ'র স্লোগান হলো, 'মানুষকে দক্ষ করবার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া, সংস্কার ও উদ্ভাবন করা, বৈশিষ্ট্যে অবিচল থাকা এবং গুণগতমান উন্নত করা'।

লেখাপড়ায় উত্সাহ দেওয়া এবং নৈতিকতা ও প্রতিভা উন্নত করার পাশাপাশি এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরক্ষা শিল্প বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং এ বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে চীনে উচ্চমানের গবেষণা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালায়।

চীনের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে এখানে একটি বিশেষ জাদুঘর রয়েছে, এর নাম 'অস্ত্র জাদুঘর'। ২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে এসএলইউ'র প্রশাসনিক বিভাগ পুরনো ক্যাম্পাসের সাজসরঞ্জাম ও অস্ত্র প্রদর্শনী কক্ষ ব্যাপকভাবে মেরামত করে। ২০০৭ সালের মে মাসে এসএলইউ'র অস্ত্র প্রদর্শনী হল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয় এবং ২০০৮ সালের মার্চ মাসে 'অস্ত্র জাদুঘর' নামকরণ করা হয়, যা পেইচিং সামরিক জাদুঘরের পর চীনের দ্বিতীয় বড় অস্ত্র জাদুঘর।

এ জাদুঘরের আয়তন ৫০০০ বর্গমিটার। এর মধ্যে বিভিন্ন সরঞ্জাম, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র, উপগ্রহ, ট্যাংক, বিমান, হাল্কা অস্ত্র, বোমাসহ ৪৩০ ধরনের অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়।

জাদুঘরের প্রদর্শনী হল আলাদাভাবে বিমান, নৌ ও স্থল বাহিনীর হাল্কা বোমা প্রদর্শনী এলাকা, বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনী এলাকা, রকেট ইঞ্জিনিয়ারিং সাজসরঞ্জাম প্রদর্শনী এলাকা, বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযান প্রদর্শনী এলাকাসহ ৭টি এলাকায় বিভক্ত।

এতে ব্যাপক ছবি, বস্তু, বহুমুখী মিডিয়া পদ্ধতিতে আধুনিককালের যুদ্ধের দৃশ্য বর্ণনা করা হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক অস্ত্রের ধারণা, সামর্থ্য ও তা তৈরির প্রযুক্তি তুলে ধরা হয়।

চীনের নিজস্ব গবেষণায় তৈরি উপগ্রহ—তুংফাংহোং১ এর মধ্যে প্রদর্শন করা হয়। জানা গেছে, তখন চীনে মোট দু'টি এ উপগ্রহ তৈরি করা হয়, একটি সফলভাবে মহাশূন্যে উত্ক্ষেপণ করা হয়, আরেকটি এ জাদুঘরে প্রদর্শন করা হয়। এ উপগ্রহের ওজন ১৭৩ কেজি।

বন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা শেনইয়াং লিকং বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্য জানলেন।এখন আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বিখ্যাত শিক্ষার্থীর পরিচয় তুলে ধরবো।

চীনের হেইলোচিয়াং প্রদেশের ছিছিহার নর্থ স্পেশাল ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মি. হো ইউয়ুন ছিং ১৯৮৩ সালের অগাস্ট মাসে তত্কালীন শেনইয়াং শিল্প ইন্সটিটিউটের যন্ত্রপাতি নির্মাণ বিষয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং তত্কালীন চিয়ানহুয়া যন্ত্রপাতি কারখানায় চাকরি করা শুরু করেন।

তিনি এ কারখানার শাখা অফিসের প্রযুক্তি কর্মী থেকে প্রধান পদে নিযুক্ত হন এবং পরে যন্ত্রপাতি কারখানার উপ-প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করেন। কয়েক বছর পর তিনি এ কারখানার উপ-প্রধান হন এবং কারখানা থেকে কোম্পানি রূপান্তরিত হওয়ার পর তিনি ডেপুটি-জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। অবশেষে তিনি এ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হন।


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040