Web bengali.cri.cn   
চীনে আরব ব্যবসায়ী মুস্তাফা শাতির স্বপ্নপূরণ
  2015-03-02 15:46:17  cri

শিসিতে মুস্তাফার নিজস্ব কোম্পানি আছে; দুবাইয়ে তাঁর দুটি দোকান আছে। তিনি বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য করেন। তাঁর ব্যবসার ক্ষেত্র পশ্চিম এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিস্তৃত। প্রতিদিন তিনি অনেক ইমেইল পড়েন, ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করেন, পণ্য বাছাই ও প্রেরণ করেন। কঠোর পরিশ্রমে এখন তার ব্যবসা অনেক ভালো। প্রতি বছর শিসি থেকে প্রায় ৬০০ কন্টেনার মালামাল তিনি ক্রয় করেন।

দু'বছর আগে মুস্তাফা শিসি শহরের ব্যস্ততম এলাকায় একটি আরবী রেস্তোরাঁ খুলেছেন। তিনি মিশর, ইরান ও ভারত থেকে উঁচু বেতন দিয়ে ভালো ভালো বাবুর্চি নিয়োগ করেন। এ রেস্তোরাঁয় একদম খাঁটি মধ্যপ্রাচ্যের খাবার সরবরাহ করা হয়। শিসিতে আসা-যাওয়া করেন এমন আরব ব্যবসায়ীরা এ রেস্তোরাঁয় খেতে পছন্দ করেন। মুস্তাফা সাধারণত পোশাক ক্রয় করার পর তাড়াহুড়া করে এ রেস্তোরাঁয় চলে আসেন। ব্যস্ত সময়ে তিনি নিজেও ক্রেতাদের কাছ থেকে খাবারের অর্ডার নেন। তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ খোলার পর তিনি আরো বেশি ব্যস্ত হয়েছেন এবং প্রতিদিনই তিনি অনেক ক্লান্ত থাকেন। তবে এ সুযোগে অনেক নতুন বন্ধু যেমন তার জুটেছে, তেমনি ব্যবসার আনন্দও তিনি পাচ্ছেন। তিনি বলেন, "আমরা শিসিতে সবচেয়ে ভালো মানের মধ্যপ্রাচ্য স্টাইলের রেস্তোরাঁ করেছি। শিসিতে আসা বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য আমরা সবচেয়ে আরামদায়ক পরিবেশ, সবচেয়ে বিখ্যাত ও সুস্বাদু খাবার এবং আন্তরিক সেবা দিয়ে থাকি। আমরা এখানে একসাথে বসে পানীয় ও তামাক খাই এবং গল্প করি, এ আনন্দ অর্থ দিয়ে হিসাব করা যায় না।"

সূর্যাস্তের সময় মুস্তাফার রেঁস্তোরা ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর। ঠিক সে সময় একটি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসে। মুস্তাফা বলেন, শিসিতে কেবল একটিই অসুবিধা: এখানে কোনো মসজিদ নেই। তিনি বলেন, "শিসিতে কোনো মসজিদ নেই। আমি আমার নিজের এবং আমার বন্ধু ও অন্যান্য মুসলমান ক্রেতাদের জন্য রেস্তোরাঁর ভেতরেই নামাজের জন্য একটি স্থান ঠিক করেছি। কিন্তু শুক্রবারের জুম্মার নামাজের জন্য দশ-বারো কিলোমিটার দূরের চিন চিয়াং মসজিদে যেতে হয়। শিসি ছিল সামুদ্রিক রেশমপথের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বিদেশি ব্যবসায়ী, বিশেষ করে মুসলিম ব্যবসায়ীদের আনাগোনা এখানে প্রাচীনকাল থেকেই ছিল। আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে শিসিতে একটি মসজিদ হবে।"

ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রসঙ্গে মুস্তাফা বলেন, "আগামী বছর আমি এক তারা মানের হোটেল খুলবো। সবচেয়ে ভালো উপকরণ দিয়ে আরামদায়ক অথচ ইসলামি স্টাইলের হোটেল প্রতিষ্ঠা করবো। প্রতি বছর অনেক আরব ব্যবসায়ী শিসিতে আসেন। আমি আশা করি, আমার সে হোটেল হবে তাদের জন্য ঘরবাড়ির মতো।"

আট বছর আগের যুবক মুস্তাফা এখন পরিণত মানুষ। এখন তিনি পোশাকের দোকান, বাণিজ্যিক কোম্পানি, রেস্তারাঁ ও হোটেলের মালিক। তিনি মনে করেন, শিসি তাঁকে অনেক সুযোগ দিয়েছে, দিয়েছে স্বপ্ন পূরণের প্লাটফর্ম।

মুস্তাফার মতো দশ সহস্রাধিক আরব ব্যবসায়ী শিসিতে দীর্ঘকাল ধরে বস্ত্রজাত পণ্য, চা, হস্তশিল্পসহ নানা পণ্যের ব্যবসা করছেন। তাঁরা হচ্ছেন নতুন যুগের সামুদ্রিক রেশমপথ প্রতিষ্ঠার সাক্ষী এবং এ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী।

শিসি শহরের বৈদেশিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ব্যুরোর প্রধান ইয়াং সি আন বলেন, "অনেক আরব ব্যবসায়ী শিসিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। আমরা আশা করি, নতুন যুগের সামুদ্রিক রেশমপথ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে চীন ও আরবের বাণিজ্যের পরিমাণ আরো বাড়বে, বাণিজ্যিক তথ্য বিনিময় বাড়বে, লোকজনের যাতায়াত বাড়বে এবং দু'পক্ষের বিকাশের স্বপ্ন আরো ভালোভাবে বাস্তবায়িত হবে।" (ইয়ু/আলিম)


1 2
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040