0302jingji.mp3
|
মুস্তাফা শাতির ২০০৫ সালে নিজের ভাগ্য ফেরানোর স্বপ্ন নিয়ে চীনে আসেন। শুরুর দিকে তিনি কুয়াংতোং প্রদেশে ব্যবসা করতেন। বছর খানেক পর তিনি ভাবলেন, কুয়াংতোংয়ের বাজার ও পরিবেশ তার উপযুক্ত নয়। যেই ভাবা, সেই কাজ। তিনি চলে গেলেন ফুচিয়ান প্রদেশের শিসি শহরে এবং সেখানে টানা আট বছর কাটিয়ে দিলেন।
শিসি শহরটি সম্পর্কে মুস্তাফা বলেন, "শিসি ব্যবসা করার উপযুক্ত জায়গা। এখানে বাজার অনেক বড়, পণ্য স্থানান্তরের অনেক সুবিধা। শহরটি অত্যন্ত নিরাপদ ও সহিষ্ণু। এখানকার আবহাওয়াও খুব আরামদায়ক। আমি এ শহর পছন্দ করি।"
আরবী ব্যবসায়ী মুস্তাফা শাতির
শিসি চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ছুয়ানচৌ উপসাগরের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত। প্রাচীন সামুদ্রিক রেশমপথের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছুয়ানচৌ উপসাগরের নানা বন্দরে এখান থেকে পণ্য যেত। এখনো এখানে বহু ব্যবসায়ী আসা-যাওয়া করেন এবং অনেক পণ্য এখান থেকে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। শিসি সম্পূর্ণ পোশাক শিল্পের চেইন, উন্নত বাজার ব্যবস্থা এবং সুসম্পন্ন আনুষঙ্গিক স্থাপনার দরুণ বিশ্ব পোশাক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। 'প্রাচ্যের মিশান' নামে পরিচিত শিসি বহু বিদেশি পোশাক-ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অনেক আরব ব্যবসায়ী বাণিজ্যিক সুযোগের সন্ধানে এখানে আসেন। শিসি পোশাক কেন্দ্র হচ্ছে এশিয়ায় সবচে বড় পোশাক বাজার এবং চীনের পোশাক রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ পণ্য কেন্দ্র।
শিসি পোশাক কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের পরিচালক ছিউ ইয়ু চেন বলেন, "বস্ত্র ও পোশাক শিল্প হচ্ছে শিসির মূল শিল্প। আমাদের সম্পূর্ণ বস্ত্র ও পোশক শিল্প চেইন আছে। এখানে আছে কাপড়ের বাজার, আনুষঙ্গিক উপকরণের বাজার ও রঙের কারখানা। মোদ্দাকথা, শিসিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে, বাজারও আছে। পোশাক কেন্দ্রের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২০০০ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি। রোজ ২০ থেকে ৪০ হাজার ক্রেতা এখানে আসেন। আরব ব্যবসায়ীরা এখানে মূলত পুরুষ ও শিশুদের পোশাক ক্রয় করেন। প্রতি বছর প্রায় দু'তিন শ' আরব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখানে তালিকাভুক্ত হন।"
মুস্তাফা শিসি পোশাক কেন্দ্রের সিন ইয়া দোকান থেকে পুরুষের ব্যবহার উপযোগী কিছু পাজামা পছন্দ করেছেন। তিনি বলেন, দুবাই মরুভূমিতে অবস্থিত; সেখানে সারা বছরই খুব গরম। শিসির পোশাকের নকশায় বৈচিত্র্য আছে, দামও ভালো। এ পোশাকগুলো দুবাইয়ে খুব জনপ্রিয়।
মুস্তাফা বলেন, "চীনের পণ্যের বাজার প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষমতা ভালো। দুবাইয়ে খুব ভালো বিক্রি হয়। কেবল আরবরা তা পছন্দ করেন তা নয়, দুবাইয়ে বসবাসরত ভারতীয়, পাকিস্তানিরাও চীনের উত্পাদিত পোশাক পড়তে পছন্দ করেন।"
শিসি পোশাক কেন্দ্রের সিন ইয়া দোকানের মালিক ছাই লি না জানান, মুস্তাফা হচ্ছেন তাঁর দোকানের পুরোনো ক্রেতা। বহু বছর আগেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় এবং সে থেকেই তাদের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন চলে আসছে। মুস্তাফা একজন হিসেবী ও সত্যবাদী মানুষ। ছাই লি না বলেন, "আমারা গত পাঁচ বছর ধরে ব্যবসা করছি। তিনি অনেক পোশাক কেনেন। মুস্তাফা একজন সত্যবাদী ব্যবসায়ী, কথা দিয়ে কথা রাখেন। টাকা-পয়সার লেনদেনের ক্ষেত্রে তিনি সময় মেনে চলেন। এখন আমরা বন্ধুর মতো।"
| ||||