0119yinyue.mp3
|
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন। আমি–পেইচিং থেকে প্রচার করছি সুরের ধারা আসর। এ অনুষ্ঠানটি শোনার জন্য আপনাদের স্বাগত জানাই।
শ্রোতাবন্ধু, আপনি কোন শহরে থাকেন? আপনার শহরের কোন কোন বিশেষ জিনিষ আপনাকে আকর্ষণ করে? নিঃসন্দেহে প্রত্যেকটি শহরের নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আজ আমরা সংগীতের তালে তালে বিভিন্ন শহরে ঘুরে বেড়াবো।
পেইচিং
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন 'পেইচিং, পেইচিং' নামের একটি গান। গানটি গেয়েছেন ওয়াং ফাং। এ গানটি হচ্ছে টেলিভিশন নাটক 'পেইচিং প্রেমের গল্প' এর প্রতিপাদ্য সংগীত। এ গানে বলা হয়েছে, 'যখন আমি এখানকার প্রতিটি রাস্তায় হাঁটি, তখন আমার মন একটুও শান্ত হয় না। তখন ইঞ্জিনের শব্দের পাশাপাশি আমার নিজের হৃত্স্পন্দনের আওয়াজও শোনা যায়। আমি এখানে হাসি, এখানে কাঁদি, এখানে বেঁচে থাকি, এখানেই মরে যাই। পেইচিং, পেইচিং।"
প্রিয় বন্ধু, আপনারা যারা ছোট শহরে বড় হয়েছেন, তারা বড় শহরে চাকরি করতে চান। যারা চীনে বড় হয়েছেন, অনেকে বিদেশে গিয়ে অন্যান্য মহানগর দেখতে চান। প্রত্যেক মানুষের মনেই একটি স্বপ্ন আছে। আপনার স্বপ্ন কি? সেটা কোথায় বাস্তবায়িত হবে?
নিউইয়র্ক
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনচ্ছেন হংকংয়ের কণ্ঠশিল্পী চাং শুয়ে ইয়ো'র গাওয়া 'নিউইয়র্কের গাড়িচালক পেইচিংয়ের স্বপ্ন চালাচ্ছে' নামের একটি গান। গানের কথা এমন, "হ্যামবার্গার খাচ্ছে, মনে মনে মিস করছে ডাম্প্লিং। চায়না টাউনে স্বদেশের স্বাদ খুঁজছে। সারা দিন রাস্তায় গাড়ি চালায়। বিদেশের চাঁদ গোল কিনা? অপরিচিত ধুলো আমাকে হাসায়। মনে আনন্দ আছে কিনা আমিও জানি না। নিউইয়র্কের গাড়িচালক পেইচিংয়ের স্বপ্ন নিয়ে গাড়ি চালাই। প্রতিটি সাদা মেঘ যেন তোমার মুখ। তোমাকে খুবই মিস করি।"
প্রতিটি শহরেরই একটি করে গল্প আছে। কিছু শহরের মৌলিক সুর হচ্ছে সুখ-শান্তি। কিছু শহরের মৌলিক সুর আবার দুঃখ-বেদনা। যাই হোক না কেন, শহরের অধিবাসীরা নিজের শহরকেই ভালোবাসে। বহু বছর ধরে বাইরে থাকলেও নিজের শহরের কথা মনে পড়ে তার।
ম্যাকাও
বন্ধুরা, এবার আপনারা শুনছেন হংকংয়ের কণ্ঠশিল্পী লিউ দে হুয়া'র গাওয়া 'ম্যাকাওয়ের গান'। এ গানটি হচ্ছে ম্যাকাও চীনের মূলভূখণ্ডের কোলে প্রত্যাবর্তনের দশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে রচিত প্রতিপাদ্য সংগীত। ম্যাকাওয়ের লেখক লি আন সিউ ম্যাকাওয়ের প্রধান প্রধান দর্শনীয় স্থানের নাম এ গানে তুলে ধরেছেন। গানে উল্লেখ করা হয়েছে, সাদা পদ্মফুল হচ্ছে ম্যাকাওয় শহরের প্রতিনিধি। তিনি বলেছেন, "সাদা পদ্মফুল ফুটেছে। সে বাতাস ও বৃষ্টি ভয় করে না। মায়ের কোলে সুস্থভাবে বড় হয়ে যায়। বিশ্বে এ একমাত্র সাদা পদ্মফুল, যে কিনা চিরকালই চীনের দক্ষিণাঞ্চলে সুন্দরভাবে ফুটতে থাকে।"
বন্ধুরা, আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সুরের ধারা আসর শুনছেন। এতোক্ষণ আমি আপনাদের জন্য পেইচিং, নিউইয়র্ক ও ম্যাকাও সম্পর্কিত তিনটি গান শুনিয়েছি। এবার চলুন আমরা প্যারিসে যাই।
প্যারিস
আপনারা শুনছেন 'প্যারিসের রাত্রি বৃষ্টি' নামে গান। গেয়েছেন সুন চি হান। গানে বলা হয়েছে, "গল্পের শেষে আমরা প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে আছি। তুমি আর আমি এ শরত্কালের বৃষ্টির রাতে বিদায় নেবো। আমাকে এক পাঁচমেন্ট কাগজের উপন্যাসের মতো প্যারিসের রাস্তায় বিক্রি করা হয়েছে। বৃষ্টির রাতে তুমি চলে যাচ্ছো, আমি শতবার অনুরোধ করলেও ব্যর্থ।
একেকটি শহরের একেক রকম স্মৃতি থাকে। মাঝে মাঝে কেবল একজন মানুষের জন্য আমরা একটি নতুন শহরে চলে আসি, অথবা একটি মানুষের জন্য বাধ্য হয়েই অন্য শহরে চলে যাই। এটাই মানুষের জীবন।
তুরস্ক
বন্ধুরা, এখন শুনুন 'নীল তুরস্ক' নামের শ্রুতিমধুর গানটি। গেয়েছেন তাইওয়ানের কণ্ঠশিল্পী চৌ ছুয়ান সিয়াং। গানে বলা হয়েছে, "তোমার রহস্য, তোমার সৌন্দর্য এখনো আমাকে আকর্ষণ করে। কিন্তু আমার প্রেম কবর দেয়া হয়েছে। আমি লুকিয়ে আছি দুঃখে ভরা নীল তুরস্কে। আমি এখনো বিশ্বাস করি, ভালোবাসা থাকলে বিস্ময় ঘটে।"
তাইওয়ান এক মনোমুগ্ধকর স্থান। আমার অনেক বন্ধু তাইওয়ানে বেড়াতে গিয়েছেন। ফিরে এসে তারা আমাকে বলেছেন, 'যাও, সুযোগ থাকলে একবার তাইওয়ানে ঘুরে এসো। সত্যি দেখার মতো জায়গা তাইওয়ান।" বন্ধুদের কথা শুনে আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, হ্যাঁ, একদিন চীনের সে দ্বীপ অঞ্চল দেখতে যাবো আমিও।
তাইপেই
বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন 'শীতকালে বৃষ্টি দেখতে তাইপেই আসো' নামের আনন্দময় গানটি। গেয়েছেন মাং থিং ওয়েই। তাইপেই হচ্ছে তাইওয়ানের রাজধানী। গানের কথা এমন, "শীতকালে বৃষ্টি দেখতে তাইপেই আসো। অন্য দেশে থেকে কেঁদো না। স্বপ্ন হচ্ছে এক মাত্র লাগেজ। কেউ আমার মত তোমাকে বুঝতে পারবে না। আমি আগের মতোই আছি। এ শহর তোমার কাছে অনেক পরিচিত না হলেও আমি আছি।"
বন্ধুরা, গান শুনতে শুনতে অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা। এবার আপনাদের শোনাবো গীতিকার মো ওয়েন ওয়েই ও চাং হোং লিয়াংয়ের গাওয়া 'হিরোশিমার প্রেম' নামের একটি গান।
হিরোশিমা
এই শ্রুবণমধুর গানের কথা লিখেছেন চাং হোং লিয়াং। এ গানটি এখনো চীনের কারাওকে এলাকায় সবচেয়ে বেশি বার গাওয়া গান। এ গানে বলা হয়েছে, "চব্বিশ ঘন্টার প্রেম হচ্ছে আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় সুন্দর স্মৃতি। তোমাকে ভালোভাবে ভালোবাসার সময় নেই। তোমাকে ভালোভাবে ঘৃণা করারো সময় নেই আমার। এবার আমি বুঝতে পেরেছি একজনকে ঘৃণা করা সহজ ব্যাপার নয়। "
বন্ধুরা, এতোক্ষণ শুনলেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সুরের ধারা আসর। এ অনুষ্ঠান শোনার জন্য ধন্যবাদ আপনাদের। ভালো থাকুন; কল্যাণে থাকুন সবাই। আবার কথা হবে। (ইয়ু / মান্না)
| ||||