চীন ও ভারতের জনসংখ্যা মোট ২.৫ বিলিয়নেরও বেশি। চীন ও ভারত একই কন্ঠে কথা বললে সারা বিশ্ব শুনবে। চীন ও ভারত হাত হাত মিলিয়ে সহযোগিতা করলে সারা বিশ্বও মনোযোগ করবে। বিশ্বের ব্যাপারে চীন ও ভারতের উচিত কৌশলগত সহযোগিতা করা, শান্তি ও সহাবস্থানের পাঁচ নীতি অনুসরণ ও উন্নয়ন করা,সার্বভৌমত্বের সমতা,ন্যায়নিষ্ঠতা ও ন্যায় এবং অভিন্ন নিরাপত্তা অবিচল থাকা, অভিন্ন উন্নয়ন আর সহযোগিতার মাধ্যমে অভিন্ন স্বার্থ অর্জন করা, যাতে দু'দেশ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ সংরক্ষণ করা যায়।
চীন ও ভারতের উচিত নিজের উন্নয়নে বিশ্বের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আর প্রশাসনে আরো বেশি অবদান রাখা,জলবায়ু পরিবর্তন,খাদ্যশস্য,জ্বালানী সম্পদ ও নেটওয়ার্কের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সমস্যায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থের জন্য প্রস্তাব প্রদান করা। চীন-রুশ-ভারত, ব্রিকস দেশ, জি ২০, শাংহাই সহযোগিতা সংস্থাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থাপনায় চীন ও ভারতের কৌশলগত সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদ ও জাতিসংঘে ভারতের আরো বেশি ভুমিকাকে সমর্থন করবে চীন।
প্রতিবেশি দেশের মধ্যে খুব সম্ভবত সমস্যা ও দ্বন্দ থাকে। চীন ও ভারতের উচিত সীমান্ত সমস্যাসহ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান সমস্যা মোকাবিলা করা; শান্তিপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরামর্শের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়সঙ্গত যুক্তিযুক্ত ও দু'পক্ষের গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত খুঁজে বের করা। পাশাপাশি মতভেদ বরং মৈত্রী ও সহযোগিতাকে গুরুত্ব দেয়া এবং দু'দেশের উন্নয়নের অগ্রগতি ও দু'দেশের সম্পর্ক রক্ষা করা। আমি বিশ্বাস করি, দুটি প্রাচীন সভ্যতা দেশ হিসেবে চীন ও ভারত প্রতিবেশী দেশের বন্ধত্বপূর্ণ সহাবস্থানের পথ অনুসন্ধান করতে সক্ষম।
ভদ্র মহোদয়া ও মহোদয়গণ, বন্ধুরা,
ভারতের অনেক লোক চীনের উন্নয়নের ওপর মনোযোগী এবং চীনের সমৃদ্ধ উন্নয়নের প্রতি আশাবাদী। বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ ও সংস্কার নীতি চালু করার ৩০ বছরের পর চীনের অর্থনীতি ও সমাজ উন্নয়নে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে, জনগণের জীপনযাপনের মানও উন্নতি হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চীনের উন্নয়নে উপকৃত হয়েছে। তবে বিশ্বের কয়েকটি দেশের লোক মনে করে যে, চীন সমৃদ্ধ হওয়ার পর হয়তো আধিপত্যবাদী পথে অনুসরণ করবে এবং অন্যান্য দেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে। এ সম্পর্কে আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই যে, চীন দৃঢ়ভাবে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে থাকবে।
চীনা জাতি ঐতিহাসিকভাবে শান্তি চায়। শান্তি, সম্প্রীতি ও সুষম ইচ্ছা গভীরভাবে চীনা জাতির মানসিক জগতে আবদ্ধমূল হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে চীন শক্তিশালী হলেও দুর্বলকে আঘাত করতো না, ধনী হলেও দরিদ্র্যদের দূরে সরিয়ে না দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে এবং মনে করে দেশ বড় হলেও যুদ্ধে জড়িত হলে, বিলুপ্ত হয়ে যাবে। শান্তি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, শান্তি বজায় রেখে বিভিন্ন মত গ্রহণ করার তত্ত্ব চীনে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। প্রাচীনকাল থেকেই চীন একটি শক্তিশালী ও উন্নত দেশ,তবে চীন বিশ্বের কাছে শান্তির বাণী প্রচার করে থাকে। বিশ্বের নানা দেশে চা, রেশম ও চীনামাটিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র রপ্তানী করা হয়। চীনা জাতি ঐক্যবদ্ধ পৃথিবীকে সমর্থন করে, তা ভারতের জনগণের ইচ্ছার সঙ্গে মিল থাকে। চীনা জাতি নিরহঙ্কারকে শ্রদ্ধা করা,তা ভারতের জনগণের বিশ্বপ্রীতির ধারণার সঙ্গে মিল হয়। আমরা শান্তিকে বিশ্বের বড় পথ হিসেবে দেখি এবং বিশ্বের শান্তি নিরাপত্তা ও সুষম সহাবস্থানের প্রতি আশাবাদী।
| ||||