চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছাং ওয়ান ছুয়ানের আমন্ত্রণে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী Chuck Hagel ৭ এপ্রিল ছিং তাও পোঁছে তার চীনা সফর শুরু করেন। তার প্রথম গন্তব্যস্থান ঠিক চীনের প্রথম বিমানবাহী জাহাজ লিয়াও নিং এবং তিনি ছিলেন প্রথম জন বিদেশী মানুষ যে লিয়াও নিং জাহাজের উপর যান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চীন তার মঙ্গলকামনা ও সামরিক স্বচ্ছতা জানায় তবে ৮ এপ্রিল চীন-জাপানের বিতর্ক, দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যা এবং তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র বিক্রিসহ নানা বিষয় নিয়ে দুজন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বিরল জোরালো বিতর্ক করেন।
ভূভাগের বিষয়ে জাপান ও ফিলিপাইন বার বার প্ররোচনামূলক তত্পরতা করে এবং এ বিষয় নিয়ে ছাং ওয়ান ছুয়ান বলেন "বর্তমানে চীন-জাপান সম্পর্ক গুরুত্বর কষ্ট সম্মুখীণ হয় এবং এটা সব জাপানের দায়িত্ব। আমরা আশা করি জাপানের রোচনামূলক তত্পরতা উপেক্ষা করবে না। ফিলিপাইন একজন শিকার ভান করে এবং বার বার নিজের প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করে। আন্তর্জাতিক আইন ব্যবহার করতে ভান করে এবং নামমাত্র আন্তর্জাতিক সালিস নিষ্পত্তি করে ফিলিপাইন এবং আমার মতে তারা ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। "
Hagel জবার দিয়ে বলেন "জাপান ও ফিলিপাইন দীর্ঘসময়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ এবং দু'দেশের সঙ্গে আত্মরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র এবং আমরা উচিত্ চুক্তির অনুযায়ী নিজের দায়িত্ব পালন করা।"
আসলে চীনা সফরের আগে Hagel চীনের প্রদি কিছু অবন্ধুসুলভ কথা বলেন। ৮ এপ্রিল Hagel-এর সঙ্গে সাক্ষাত্কালে চীনের সামরিক কমিশন ভাইস প্রেসিডেন্ট ফান ছাং লং সরাসরি তার অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেন। ফান ছাং লং বলেন ,আসিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সঙ্গে বেসরকারি সাক্ষাত্কাল এবং জাপান সফর চলাকালে মন্ত্রী Hagel বলিষ্ঠ বক্তব্য দেন এবং আমিসহ চীনা জনগণ এ বক্তব্যের অসন্তুষ্ট লাগে। তিনিও মুখের সামনে Hagel-এর কিছু বক্তব্য খন্ডন করেন।
চীনা সামরিক একাডেমি চীন-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গবেষণালয়ের প্রধান ইয়াও ইউয়ুন চু বলেন অকপট দুটি বাহিনীর মধ্যে বিনিময়ের সাধারণ একটি পদ্ধতি। চীন ও মার্কিন বাহিনী দুটি বড় দেশের বাহিনী এবং দু বাহিনীর মধ্যে যেমন রয়েছে সহযোগিতার অবকাশ তেমন রয়েছে স্বার্থের সংঘর্ষ। ইয়াও ইউয়ুন চু বলেন "একটি বড় দেশের বাহিনী হিসেবে মতভেদ এড়ানোর দরকার নেই। সরাসরি সমস্যা সম্মুখীণ হওয়া আমাদের মনোভাব এবং এ মনোভাব Hagel এবার সফরের একটি হাইলাইটে পরিণত হয়। "
চীনের প্রেসিডেন্ট ও সামরিক কমিশনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও Hagel-এর সাথে সাক্ষাত্কালে আবার জোর দিয়ে বলেন, দু'পক্ষ উচিত্ সংঘর্ষ ও সংঘাত না করা, পরস্পরকে সম্মান করা এবং সহযোগিতা করার নীতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবনিষ্ঠ সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ঠিক দিকে উন্নীত হতে নিশ্চিত করা।
সম্প্রতি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে অনুমোদন করা হয় 'তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক আইনের গুরুত্ব ও তাইওয়ানকে নৌবাহিনীর জাহাজ হাতবদল ' নামে একটি প্রস্তাব এবং Hagel-এর সাথে সাক্ষাত্কালে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছাং ওয়ান ছুয়ান চীনের অবস্থান আবার ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন "তাইওয়ানকে অস্ত্র বিক্রি চীন-যুক্তরাষ্টের তিনটি যৌথ ইস্তাহার লঙ্ঘন করে। মার্কিন জাতীয় সংসদে এ প্রস্তাব পাস না দেয়া এবং তাইওয়ানকে অস্ত্র বিক্রির সব প্রস্তাব বন্ধ করার জন্য তাগিদ দেয় চীন। "
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কেং ইয়ান সেং বলেন, বর্তমানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বড় দেশের সম্পর্ক এবং নতুন ধরণের সামরিক সম্পর্ক নির্মাণের পটভূমিতে চীনের তীব্র বিরোধীতা চিন্তা না করে তাইওয়ানকে অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব পাস করে বলে চীন-মার্কিন সম্পর্ক এবং তাইওয়ান প্রণালীর দু পারের সম্পর্কের উন্নয়নকে ক্ষুন্ন করে।
কেং ইয়ান সেং আবার বলেন, তাইওয়ান সমস্যা চীনের ভুভাগীয় অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের এবং চীনের কেন্দ্রীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। চীন আশা করে যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখিত harmfulness স্বীকৃতিপ্রদান করে এবং চীনের কেন্দ্রীয় স্বার্থ ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগি সম্মান করবে।
৯ এপ্রিল, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, চীনের প্রেসিডেন্ট, চীনা সামরিক কমিশনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীনের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর বিশেষ পুলিশ একাডেমীকে পরিদর্শন করেন এবং ফ্যালকন কমান্ডোকে পতাকা উপস্থাপনা করেন। সন্ত্রাস দমন বিষয়ক চীনা শাক্তি বহির্ভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন চীনা সন্ত্রাস দমনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে চীনের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী উচিত্ দৃঢ়ভাবে ও তীব্রভাবে সহিংসা ও সন্ত্রাস অপরাধ কর্মকান্ডকে দমন করা, দেশের নিরাপত্তা ও সমাজিক স্থিতিশীলতা এবং জনগণের সুখি জীবন রক্ষা করা।