Web bengali.cri.cn   
লিমার পেইচিং ভ্রমণ
  2013-11-14 19:53:58  cri


সুপ্রিয় বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন সুদূর পেইচিং থেকে সম্প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান 'মুক্তার কথা'। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু মুক্তা।

বাংলাদেশের সিআরআই সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাবের উপপরিচালক তাছলিমা আক্তার লিমা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের আটটি শ্রেষ্ঠ শ্রোতা সংঘের একজন প্রতিনিধি হিসেবে চীনে এসেছেন। ছয় দিনের পেইচিংয়ের ভ্রমনের মাধ্যমে তিনি পেইচিং এবং চীনকে অনেক পছন্দ করেছেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে তাঁর এবারের চীন ভ্রমণ সম্পর্কিত কিছু কথা বলবো।

সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব আমাদের অনুষ্ঠান বাংলাদেশে প্রচারের জন্য প্রচুর অবদান রেখেছেন। ক্লাবটি নিয়মিত শ্রোতা জরিপ, শ্রোতা সম্মেলন, চীনের চিত্র প্রদর্শনীয় আয়োজন করে। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেলায় আমাদের ম্যাগাজিন ও কর্মসূচী প্রদর্শন করেন এবং সদস্য বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন জেলা, গ্রাম বা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের অনুষ্ঠান প্রচার করেন। এছাড়াও তারা আমাদের কনফুসিয়াস ক্লাস রুমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করে এবং আমাদেরকে অনেক সাহায্য দিয়েছেন।

লিমা ২৬ অক্টোবরে পেইচিং সময় ভোরে দেড়টা পেইচিংয়ে পৌঁছেছেন। কিছু ক্ষণ ঘুমার পর তিনি চীনে প্রথম দিনের ভ্রমন শুরু করেন। প্রথম দিনে তিনি নিষিদ্ধ নগরে গিয়েছিলেন।

(সংগীত)

চীনের রাজধানী পেইচিংএর কেন্দ্রে একটি চকচকে

এবং দেখতে সুমহান প্রাচীন স্থাপত্যেরসংগ্রহশালা আছে। এটা হলো বিশ্ব বিখ্যাত পেইচিং নিষিদ্ধ নগর অথার্ত রাজ প্রাসাদ। পেইচিং রাজ প্রাসাদ হলো চীনের প্রাচীন প্রাসাদ স্থাপত্যগুলোর মধ্যে একটি উজ্জ্বল মুক্তা। উপরন্তু এটা হলো বতর্মানে পৃথিবীতে সংরক্ষিত সবচেয়ে বড় আকার, সবচেয়ে সম্পূর্ণ প্রাচীনকালের কাঠের তৈরী স্থাপত্যের সংগ্রহশালা। ১৯৮৭ সালে পেইচিং রাজ প্রাসাদ 'বিশ্ব উত্তরাধিকা তালিকায়' অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।

১৪০৬ সালে মিং রাজবংশের দ্বিতীয় রাজা জু লির নিদের্শে পেইচিং রাজ প্রাসাদের নিমার্ন কাজ শুরু হয়। এই নিমার্ন কাজ সম্পন্ন করতে ১৪ বছর লাগে। ১৯১১ সালে ছিং রাজবংশ সমাপ্ত হওয়া পযর্ন্ত প্রায় ৫০০ বছরে মোট ২৪ জন রাজা এখানে বসবাস করেন এবং দেশের বিষয়াদি পরিচালনা করেন। পেইচিং রাজ প্রাসাদের আকার এত বিরাট, শৈলী এত সুন্দর, স্থাপত্য এত সুমহান এবং আসবাবপত্র এত বিলাসী তা পৃথিবীতে খুব কম দেখা যায়। পেইচিং রাজ প্রাসাদের আয়তন ৭ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটারেরও বেশী।

যদিও আমাদের বন্ধু লিমা আগে নিষিদ্ধ নগরের কথা শুনেছিলেন, তবুও নিজস্ব এখানে এসে অনেক অবাক পেয়েছেন। তিনি প্রদর্শন ছাড়া আরো বেশি চীনের প্রাচীন মজা গল্প শুনেছেন।

দ্বিতীয় দিনে আমরা থিয়ান থান অর্থাত্ টেম্পল অব হেভেনে গিয়েছিলাম। থিয়েন থান হচ্ছে বতর্মানে চীনে সংরক্ষিত সবচেয়ে অক্ষত আর সবচেয়ে বড় আকারের পূজা স্থাপত্যের সংগ্রশালা। শস্যের জন্যে অনুকূল আবহাওয়া, জনসাধারণের জন্যে শান্তি আর সুস্থ্য কামনা করার জন্যে চীনের নানা যুগের সম্রাটরা প্রত্যেক বছর বিশেষ পূজা অনুষ্ঠান পালন করে। এ সব অনুষ্ঠানের মধ্যে স্বর্গের কাছে পূজা করার অনুষ্ঠান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চীনের রাজা 'স্বর্গের ছেলে'বলে মনে করা হয়। রাজারা 'স্বর্গের ছেলে'হিসেবে জনসাধারণকে শাসন করেন এবং দেশকে পরিচালনা করেন। স্বর্গ পূজা করার অনুষ্ঠান তাদের বিশেষ অধিকারে পরিণত হয়। সাধারণ মানুষের এই অধিকার ছিল না। কিন্তু এখান থিয়ান থান একটি পার্কে পরিণত হয়েছে। এখানে আপনি দেখতে পারেন যে, পেইচিংয়ের অনেক নাগরিকরা চর্চা করেন। লিমা থিয়ান থানে এ দৃশ্য দেখে বলেছেন,

(থিয়ান থান)

....

লিমা মনে করেন নিষিদ্ধ নগর থিয়ান থানের মধ্যে অনেক ব্যবধান রয়েছে। তিনি বলেছেন,

(থিয়ান থান)

....

তিয়েন থাইনের নিমার্নে চীনের প্রাচীনকালের স্থপত্যশিল্পীদের অতুলনীয় সৃষ্টি শক্তি প্রতিফলিত হয়। যেমন স্থাপত্যের রং প্রয়োগে বিরাট অগ্রগতি অর্জিত হয়। চীনের রাজ প্রাসাদের স্থাপত্যগুলোতে প্রধানত: হলুদ রংয়ের লিওলি টালি ব্যবহার করা হয় । হলুদ রং রাজার ক্ষমতার প্রতীক। তবে তিয়েন থাইনের স্থাপত্যে আকাঁশের রং—নীল রং ব্যবহার করা হয়। নীল রং স্থাপত্যের প্রধান রং হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমরা ভেতরে গিয়ে গিয়ে থিয়ান থান পার্কের দৃশ্য লিমাকে অনেক আকর্ষণ করেছে। তিনি বলেছেন,

(থিয়ানথান২)

....

থিয়ানথানের সবচেয়ে ভেতরে ছিনিয়ান নামের ভবন বলা হয় পেইচিংয়ের ১ নম্বর ভবন। এটা হল একটি তিন ছাঁইচের গোল ভবণ। তিন তলার গোল পাথরের প্ল্যাথর্ফমে এই ভবণ নিমির্ত হয়। অক্ষ থেকে বুঝা যায়, ছিনিয়েন তিয়েন হল প্রত্যেক শ্রীষ্মকালে রাজারা ভাল ফসল কামনা করার জায়গা। সুতরাং এই ভবন কৃষির সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। যেমন, ভবনের চারটি বিরাট স্তম্ভ বসন্ত, শ্রীষ্ম, শরত এবং শীতের প্রতিনিধিত্ব করে।চীনের পূর্বপুরুষরা এক দিনে ১২টি পযার্য়ের সময় ভাগ করেন বলে প্রথম তলার ছাঁইচ দাঁড়িয়ে করা ১২টি স্তম্ভ ১২টি পযার্য়ের সময়ের প্রতীক। মধ্য তলার ১২টি স্তম্ভ ১২ মাসের প্রতীক, এক সঙ্গে মিলে ২৪টি স্তম্ভ। এ থেকে বুঝা যায়, চীনের চান্দ্র বর্ষে ২৪টি ঋতু আছে। লিমা ছিনিয়ান ভবন দেখে বলেছেন,

(থিয়ানথান ৩)

তৃতীয় দিনে আমরা দু'টি জায়গা গিয়েছিলাম। প্রথমে আমরা পেইচিংয়ের কাছাকাছি একটি গ্রামে গিয়েছিলাম। পেইচিংয়ের গ্রাম অবশ্যই বাংলাদেশের অনেক ব্যবধান রয়েছে। লিমা বলেছেন, পেইচিংয়ের গ্রামে অনেক সুন্দর। তিনি আরো বলেছেন,

(গ্রাম১)

আমরা একজন ধনি কৃষকের বাড়িঘরে গিয়েছিলাম। লিমার অনেক ভাল লাগে। লিমা বলেছেন,

(গ্রাম ২)

তখন সব শ্রোতা প্রতিনিধি খুবই খুশি ছিলেন। তাঁরা মহাপ্রাচীরে যাওয়ার পথে গাড়ীতে গান গেয়েছিলেন। লিমাও একটি সুন্দর বাংলা গান গেয়েছিলেন।

(লিমা গান)

আরেকজন রোমানিয়ার শ্রোতার গান শোনাবো।

(গান)

1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক