Web bengali.cri.cn   
এমডিজি অর্জন সূচকে এলডিসির মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ
  2013-09-30 19:45:41  cri

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনের সূচকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে আছে আরেক এলডিসি ক্যাম্বোডিয়া।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সংলাপে উপস্থাপিত এক প্রবন্ধে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য 'সহস্রাব্দ লক্ষ্য অর্জন: এলিসিগুলোর সাফল্য কেমন' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

প্রবন্ধে বলা হয়, পর্যালোচনা করা ১৪টি লক্ষ্যের মধ্যে বাংলাদেশ আটটি লক্ষ্য অর্জন করবে। আরও চারটি সূচকেও দেশটির অগ্রগতি বেশ ভালো। তবে বনায়ন এবং জনসংখ্যা ও কর্মসংস্থান অনুপাত সূচকে এখনো সঠিক পথে এগোচ্ছে না বাংলাদেশ।

এতে বলা হয়, এমডিজি অর্জনে ৪৯টি স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি স্থানে রয়েছে এশিয়ার দেশগুলো। দ্বিতীয় ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভুটান ও নেপাল। আর সবচেয়ে কম অগ্রগতি নিয়ে ৪৯তম স্থানে রয়েছে সোমালিয়া।

প্রবন্ধে বলা হয়, এখনও পর্যন্ত তথ্য উপাত্তে দেখা যায়, ৪৬টি দেশ কমপক্ষে একটি লক্ষ্য অর্জন করবে। আর মোজাম্বিক, সিয়েরালিওন ও সোমালিয়ার একটি লক্ষ্যও অর্জন করতে পারবে না। আর ইকোইটেরিয়াল গিনি মধ্য আয়ের দেশ হলেও মানবিক উন্নয়নে কোনো অগ্রগতি নেই। তাই এ দেশটি ৪৭তম স্থানে রয়েছে।

প্রবন্ধে মন্তব্য করা হয়েছে, বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশের লক্ষ্য অর্জনে যথেষ্ট গতি না থাকলেও সঠিক পথেই রয়েছে।

২০১৫ সাল-পরবর্তীকালের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়ন কাঠামোতে সাতটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রবন্ধে। বিষয়গুলো হলো উত্পাদন সক্ষমতা ও কর্মসংস্থান, উত্পাদিত পণ্যের গুণগত মান, সংশ্লিষ্ট দেশের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা, বহুমাত্রিক বৈষম্য, বৈশ্বিক নীতিমালার সংস্থা, এমডিজি পরবর্তী অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জগুলো।

সিপিডির প্রধান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত প্রবন্ধ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি নিয়েল ওয়াকার, পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক এবং এনজিও কর্মী রাশেদা কে চৌধুরী বলেন।

রেহমান সোবহান বলেন, এমডিজি-পরবর্তী উন্নয়ন পরিকল্পনায় সম্পদ বণ্টনে ন্যায়বিচার থাকতে হবে এবং সামাজিক বৈষম্য কমাতে হবে। তাহলেই শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া প্রতিটি পরিবারের ঋণ পাওয়া ও বাজার সুবিধা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জীবনযাত্রায় গুণগতমানে পরিবর্তন আনতে হবে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কোন দেশ কতটা লক্ষ্য অর্জন করেছে তা তুলে ধরলে দেশ ও জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে। এ জন্য লক্ষ্য অর্জনের মানসম্পন্ন মূল্যায়ন দরকার।

তাছাড়া জাতিসংঘের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় পর পর নতুন লক্ষ্যগুলোর বিষয়ে সামাজিক নিরীক্ষা করার সুপারিশ করেন তিনি।

বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রতি আলোকপাত করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ সরবরাহ এবং প্রায় বিনামূল্যে মেয়েদের স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা একটি 'উন্নয়ন আশ্চর্য'।

অধ্যাপক মাহমুদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে ইউএনডিপির প্রতিনিধি নিয়েল ওয়াকার বলেন, এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নতি করেছে। মাতৃমৃত্যু, মেয়েদের স্কুলে নিবন্ধন সূচকে ইতিমধ্যে লক্ষ্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত থাকার বিষয়টিকে ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন সূচিতে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। সেই উন্নয়নসূচি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে বলেও তিনি মনে করেন।

পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক বলেন, ২০১৫ সাল-পরবর্তী সময়ে এমডিজি-পরবর্তী উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিও ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে।

রাশেদা কে চৌধুরী মন্তব্য করেন, সামরিক ব্যয় বৃদ্ধিই উন্নয়ন ব্যয়কে খেয়ে ফেলছে। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। (এসআর)

মন্তব্য
লিঙ্ক