Web bengali.cri.cn   
কুয়াং চৌয়ে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি নাগরিক আলি ও তার মেয়েবন্ধু মারিয়ার ভালবাসার গল্প
  2013-09-11 16:11:55  cri


আলি আবু মেরিহিল ফিলিস্তান থেকে আগত একজন যুবক। আলি ব্যবসায়ী নন, তবে তিনি নিজের কাজ পছন্দ করেন। কুয়াং চৌয়েই তার পরিচয় হয় তার সঙ্গে, পরে যিনি তার মেয়েবন্ধু হন। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ দু'জনের ভালবাসার গল্প শুনাবো আপনাদেরকে।

দেড় বছর আগে এক সম্মেলনে আলি চীনা তরুণী মা সিয়াও হুয়ান (মারিয়া)-এর সঙ্গে পরিচিত হন। প্রথম দর্শনেই প্রেম হয়ে যায় তাদের মধ্যে। মারিয়া চীনা হলেও আলি মনে করেন, মারিয়ার কিছু বৈশিষ্ট্য আরব মেয়েদের মতো। আলি বলেন: "তার সঙ্গে থাকলে আমার ভাল লাগে। প্রথম বার তাকে দেখেই আমি বুঝতে পারি যে, তার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে হবে।"

ত্রিশ বছর বয়সী আলি তিন বছর আগে কুয়াং চৌ আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি যদিও শিল্প ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা বিষয় পড়েছেন, তবে কুয়াং চৌয়ে তিনি সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। আলি বলেন, তথ্যমাধ্যমে ব্যাপারে তার অনেক আগ্রহ আছে। তিনি বলেন:

"সাধারণত আমাদের ম্যাগাজিন - 'আরবদের কণ্ঠে' কোয়াং চৌয়ে বসবাসরত আরব মানুষদের জীবনযাপন তুলে ধরা হয়। যেমন এখানে বসবাস করলে তাদের কী সমস্যা হতে পারে এবং তারা কীভাবে এ সমাজের সঙ্গে একীভূত হতে পারে। আমাদের ম্যাগাজিন যেন কুয়াং চৌয়ে বসবাসকারী আরবদের ও দূতাবাদের মধ্যে একটি সেতু।"

আলি একজন নিষ্ঠাবান মানুষ এবং কখনও ভাবেননি যে, প্রথম দর্শনে তার জীবনে প্রেম ঘটতে পারে। কিন্তু তিনি যখন মারিয়াকে দেখেন তখন তার মন যেন অন্যের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তিনি উপলব্ধি করেন যে, এ মেয়েকে তার জীবনসঙ্গী করতে হবে। আলি বলেন:

"মারিয়া একজন ভালবাসাপূর্ণ ও ভালো মেয়ে। যদিও আরব ও চীনের সংস্কৃতি ও ভাষা ভিন্ন, তবে তার সঙ্গে থাকলে আমি কখনো ব্যবধান বোধ করি না। ভালবাসা আমাদের মধ্যে ব্যবধান কমিয়েছে।"

যদিও আলি ও মারিয়া পরস্পরকে ভালবাসে, তবে প্রথমে মারিয়ার পরিবার তাদের ভালবাসা গ্রহণ করে না। মারিয়া একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারে বড় হয়েছেন এবং তার মা-বাবা তাদের মেয়েকে একজন স্থানীয় ছেলের সঙ্গে বিয়ে করতে চান। তারা কখন ভাবেননি যে, তাদের মেয়ে একজন ফিলিস্তিন ছেলেকে ভালবাসবে। ফিলিস্তিন তাদের জন্য শুধু খবরে শোনা একটি দেশের নাম। মারিয়া বলেন:

"প্রথমে আমি বাবাকে মিথ্যা কথা বলি। আমি আলিকে আমার বস হিসেবে বাবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেই। তবে বাবা মুহুর্তমধ্যে আবিষ্কার করেন যে, আলি আমার ছেলেবন্ধু। আমার বিদেশির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার বিরোধিতা করেন মা-বাবা। প্রথমে মা মর্মাহত হন। আমি সবসময় মাকে জানাই যে, আলি কীভাবে আমার যত্ন নেয় এবং আমার প্রতি নজর রাখে। অন্য দিকে, ছোটবেলা থেকে বাবা সবসময় আমাকে সমর্থন করেন। তিনি আমাকে বিশ্বাস করেন এবং শেষে তিনি এমনকি মাকে রাজি করানোর জন্য আমাকে সাহায্য করেন।"

পরিবার তাদের ভালবাসার বিরোধিতা করলেও মারিয়া আলিকে একজন বিশ্বস্ত মানুষ বলে হৃদয়ে স্থান দিয়েছেন। তিনি বলেন:

"আগে আমি আমার হবু ছেলেবন্ধুর রূপ কল্পনা করতাম এবং আলিকে দেখার পর মনে হয়, সে আমার কল্পনার মানুষের মতো। উপযুক্ত মানুষ দেখলে কোনো ভাষা ছাড়াই বোঝা যায় ও-ই সঠিক মানুষটি।"

অন্য প্রেমিক-প্রেমিকাদের মতো আলি ও মারিয়াও ছোটখাট ব্যাপার নিয়ে খুনসুটি করেন। তবে আলি সবসময় শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন। মারিয়া তাদের মধ্যকার একটি ছোট গল্প আমাদেরকে শোনান। তিনি বলেন: "একবার আলি একটি চা-সেট উপহার হিসেবে আমাকে দেয় এবং সেটে ছিল একটি কুকার। সে মনে করে, ওটা রান্নার কুকার। তবে আসলে ওটা জীবাণুমুক্ত করা কুকার। এ উপহার আমার দরকার ছিল না এবং আমার মনে হয় সে কখনও আমাকে ভাল লাগা উপহার দেয়নি। পরে আমি দেখি সে মাইক্রোব্লগে লিখেছে 'আজ আমি দুঃখিত। কারণ আমি আমার মেয়েবন্ধুকে যে উপহার দিয়েছি সেটা সে পছন্দ করেনি। আজ আমি আনন্দিতও। কারণ আমি জানতে পেরেছি একটা জিনিস আমার মেয়েবন্ধু পছন্দ করে না।"

1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক