সুবর্ণা: পেইচিংয়ে এখন রাতে তাপমাত্রা এক বা দুই ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যাচ্ছে। দিনের বেলায়ও তাপমাত্রা খুব কম থাকে। আমরা এখন সিয়াংশান পার্কের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। ঠাণ্ডা অনুভব করছি। পার্কের বাইরের দৃশ্য অসাধারণ সুন্দর। সিয়াংশান পাহাড় পেইচিংয় শহরের পশ্চিম দিকে সিশান পাহাড়ের পূর্ব পর্বতমালায় অবস্থিত; শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এখানকার পার্কের আয়তন ১৬০ হেক্টর। পাহাড়ের বড় আকারের পাথরগুলোক দূর থেকে দেখে ধুনুচির মতো মনে হয়। চীনা ভাষায় ধুনুচিকে বলে সিয়াংলু; এ কারণে পাহাড়টির নাম হয়েছে সিয়াংশান। প্রতি বছরের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বর মাসের শুরু পর্যন্ত এখানে 'লাল পাতা উত্সব' আয়োজিত হয়। কারণ, সিয়াংশান পাহাড়ের গাছগুলোর পাতা এ-সময় সবুজ থেকে লাল রঙে পরিণত হয়।
প্রকাশ: হ্যাঁ, সিয়াংশান পাহাড়ের 'লাল পাতা উত্সব' পেইচিংয়ের একটি বিখ্যাত ও জনপ্রিয় উত্সব। প্রতিবছর এ-উত্সব চলাকালে বহু পর্যটক এখানে এসে পাহাড়ের লাল পাতার দারুণ সৌন্দর্য উপভোগ করেন। ভোগৌলিকভাবে পেইচিং শহর দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে সমতল এবং উত্তর ও পশ্চিম দিকে উঁচুনিচু। অর্থাত উত্তর ও পশ্চিমে পাহাড়াঞ্চল। সিয়াংশান পাহাড়ের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি এবং আবহাওয়াও শহরাঞ্চলের চেয়ে ঠাণ্ডা। শরত্কালে আবহাওয়া যত ঠাণ্ডা হবে, গাছগুলোর পাতাও হবে তত লাল। পেইচিং শহরে সিয়াংশান পাহাড়ের লাল পাতা সবচেয়ে সুন্দর।
সুবর্ণা: সিয়াংশান পার্ক শুধু শরত্কালেই এতো সুন্দর তা নয়; চীনের চার ঋতুতেই এখানে ভিন্ন রকমের সৌন্দর্য্য দেখা যায়। বসন্তকালে এখানে নানা রঙয়ের ফুল ফোটে; গ্রীষ্মকালে নিবিড় বনের সৌন্দর্য্য অসাধারণ; শরত্কালে আছে লাল পাতার সুন্দর এবং শীতকালে তুষারপাতের পর সাদা পোশাক পরিহিত পাহাড়ও দারুণ সুন্দর লাগে।
প্রকাশ: হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। প্রাচীনকাল থেকে চীনারা 'লাল পাতা দৃশ্য' উপভোগ করো আসছে। চীনের থাং রাজবংশের বিখ্যাত কবি তুমু তাঁর কবিতায় লাল পাতার দৃশ্য সম্পর্কে লিখেছেন, 'ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পাথর-পথ বেয়ে পাহাড়ে আরোহণ করি/ সাদা মেঘলোকে দেখা যায় ঘরবাড়ি/ বসে বসে সন্ধ্যাবেলায় উপভোগ করি লাল পাতার দৃশ্য/ শরত্কালের পাতার রঙ বসন্তকালের ফুলের চেয়েও লাল।'