জাতিসংঘ ভবনের স্বর্ণ সভা কক্ষ হচ্ছে জাতিসংঘের অধিবেশন আয়োজনের স্থান। এখানকার আসনের বিন্যাস বছরে একবার বদলে যায়। প্রতিটি আসনেই সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় মর্যাদাকে তুলে ধরা হয়। ১৯৭১ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের ২৬তম সাধারণ পরিষদে ২৭৫৮ নং সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘে চীন গণ প্রজাতন্ত্রের বৈধ অধিকার পুনরুদ্ধার হয়েছে।
জাতিসংঘে চীনের সাবেক প্রধান প্রতিনিধি লিং ছিং জাতিসংঘে চীনের বৈধ মর্যাদা পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট ছিলেন। তিনি স্মরণ করে বলেন, 'সারা বিশ্বের একমাত্র আন্তর্জাতিক সংগঠন – জাতিসংঘ আর এই জাতিসংঘে চীনের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে চীনের কূটনৈতিক ক্ষেত্রের একটি বড় বিজয়। কারণ চীনের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে বিশ্ব শান্তি রক্ষা করা, অভিন্ন উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং তৃতীয় বিশ্বকে সমর্থন করা। এটা হচ্ছে আমাদের মৌলিক নীতি। এ ধরনের একটি রাজনৈতিক শক্তি জাতিসংঘে প্রবেশ করা মানেই বিশ্বে আমাদের প্রভাব বলয়কে বাড়িয়ে দেয়া।'
জাতিসংঘে চীনের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের ভেতর দিয়ে চীন ও জাতিসংঘের সহযোগিতার এক নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। চীনের বহুপক্ষীয় কূটনীতিও তখন থেকেই শুরু হয়ে যায়। ১৯৭৮ সালের আগে প্রায় ৩০ বছরে চীনের নেতৃবৃন্দ কেবলমাত্র ছ' বার বহুপক্ষীয় কূটনৈতিক কর্মসূচীতে উপস্থিত হতে পেরেছিলেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত চীন ১০০টিরও বেশি সরকারী পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সংস্থা, ৩০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক কনভেনশন এবং জাতিসংঘের ২২টি শান্তি রক্ষী কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছে। চীন মোট দশ হাজার শান্তিরক্ষী কর্মীকে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছে। চীন বিশ্বের শান্তি রক্ষা এবং অভিন্ন উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার একটি সক্রিয় শক্তি হিসেবে দিনে দিনে আরো গঠনমূলক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
নতুন শতাব্দী প্রবেশের পর চীন 'সুষম বিশ্বের' তত্ত্ব উত্থাপন করেছে। চীনের বর্তমান পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইয়াং চিয়ে ছি এ সম্পর্কে বলেছেন, 'বর্তমান বিশ্ব কূটনীতি শূন্য হওয়া উচিত নয়। পারস্পরিক কল্যাণ ও অভিন্ন সাফল্য অর্জনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা উচিত। চীনের কূটনীতি সবসময় চীনা জাতির সুষম, সহযোগিতা, পারস্পরিক কল্যাণ ও সকলের সাফল্য অর্জনের ধ্যানধারনা অনুসরণ করে।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) 1 2 |