সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ কার্যকরের পর সারা চীনে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনীতির কাঠামো ধাপে ধাপে পরিকল্পনা অর্থনীতি থেকে বাজার অর্থনীতিতে রুপান্তর হয়েছে। এ পরিবর্তন চীনের অর্থনীতির উন্নয়নে বিরাট প্রাণশক্তি যুগিয়েছে। পণ্য সরবরাহ সমৃদ্ধ হয়েছে। চীনে ফিলিস্তিনের সাবেক রাষ্ট্রদূত সাফারিনি কার্যমেয়াদ শেষ হওয়ার পরও চীনে থেকে গেছেন। তিনি বর্তমান চীনের বাজারকে সত্যিকার মুক্ত বাজার মনে করেন। তিনি বলেন, 'এখন চীনের বাজারে প্রবেশ করলে নানা রকম বিচিত্র পণ্য দেখা যায়। ব্যবসায়ীরা সাবলীলভাবে ইংরেজী ও রুশ ভাষায় দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পণ্যের জাত ও গুণগত মান ব্যাখ্যা করেন। আপনি তাদের সঙ্গে দরকষাকষি করতে।'
এখন চীন বস্তুগত পণ্যের ঘাটতির যুগ পুরোপুরি বিদায় করেছে। নিরঙ্কুশ পরিবার টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন ও কম্পিউটারসহ নানা ঘরোয়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি কিনেছে। আগে অনেকে ভাবতেও পারতো না যে, নিজের গাড়ির অধিকার হতে পারে। কিন্তু এখন তাও বাস্তবায়িত হয়েছে। ২৭ বছর বয়সী মা ইয়ুন লিয়াং একটি কোম্পানির কর্মী। গত মাসে তিনি নিজের জন্য একটি মোটর গাড়ি কিনেছেন। তিনি বলেন, 'এখন গাড়ি কেনা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। আমি মনে করি, দু'এক বছর কাজ করলে গাড়ি কেনা যায়। গাড়ি কেনার পর অফিসে যাওয়ার জন্য আর পাবলিক বাস ধরতে হয় না এবং উপকণ্ঠে ভ্রমণের জন্যও খুব সুবিধা।'
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮ সালে চীনের জি.ডি.পি ১৯৫২ সালের তুলনায় ৪০০ গুণ বেড়েছে। বিশ্বের চীনের অর্থনৈতিক অবস্থান চতুর্থ। মাথাপিছু জি.ডি.পি ৩০০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি।
ধনী হওয়ার পর চীনারা গাড়ি ও বাড়ি কেনার পাশাপাশি পর্যটনও পছন্দ করেন। উন্মুক্তকরণের মাত্রা সম্প্রসারণের সাথে সাথে চীনা পর্যটকদের পদচিহ্ন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পড়েছে। মিঃ হো সিন বিদেশে ভ্রমণ পছন্দ করেন। তিনি বলেন, 'আমি প্রায় প্রতি দু'এক বছরে একবার বিদেশ ভ্রমণ করি। আমি বৃটেন, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া গিয়েছিলাম। কয়েক দশক আগেও তা ভাবতে পারতাম না। তখন অন্যান্য প্রদেশে ভ্রমণ করাও সহজ ছিল না।'
কিন্তু আগামী বছর মিঃ হোর বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা নেই। কারণ তিনি আগামী বছর মে মাসে শাংহাইয়ে গিয়ে বিশ্ব মেলা উপভোগ করতে চান।
শাংহাই পৌর কমিটির সম্পাদক, শাংহাই বিশ্ব মেলার নির্বাহী কমিটির পরিচালক ইয়ু চাং শেং জানিয়েছেন, 'আগামী বছরের মার্চ মাসে শাংহাইয়ের সাবওয়ের দৈর্ঘ্য ৪০০ কিলোমিটার হবে। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন জনগণের জীবনযাপনের মান আর অর্থনীতি চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় তাত্পর্য রয়েছে।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) 1 2 |