
এ সম্পর্কে তিনি বলেন:" কারণ আমার চাকরি হচ্ছে প্রশাসনিক ক্ষেত্রের একটি উল্লেখযোগ্য ভাল কাজ, সেজন্য আমার বেতন সেসময় আমার সহকর্মীদের চেয়েও বেশি ছিল । তবে পুনরায় লেখাপড়ার পর, আমার চাকরি নেই বেতনও নেই। সেসময়ের জীবনের কথা স্মরণ করলে আমার বলতে গেলে একটু দুঃখই লাগে।"
ওয়াং সি চুও মা তার নিরলস প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বছরে তিব্বতে গিয়ে গবেষণার সুযোগ পান। এ খবর পেয়ে ওয়াং সি চুও মা বেশ অনেক আনন্দ বোধ করেন। ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে তিনি তিব্বতের রাজধানি লাসায় পৌঁছান। সেখানকারের সুন্দর দৃশ্য ওয়াং সি চুও মার মনে বেশ প্রগাঢ় ছাপ ফেলেছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:" লাসায় পৌঁছার পর, সেখানকার বাতাস এবং আকাশ সব প্রাকৃতিক দৃশ্য নিয়ে গঠিত একটি খুবই সুন্দর ছবি।গাড়িতে করে পোতালা প্রাসাদের মধ্য দিয়ে যাবার সময় সত্যিকারভাবে সুন্দর দৃশ্য দেখে যে অনুভূতি হয়েছে তা কোনো ভাষা দিয়ে বর্ণনা করতে পারবো না। তবে একটি কথা বলতেই হবে, আর তা হলো লাসা সত্যিই সুন্দর , সত্যি সত্যিই অপূর্ব সুন্দর !"

এবারের লাসায় আসার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হচ্ছে তিব্বতের পর্যটন শিল্পের ওপর গবেষণা করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, তিব্বতের পর্যটন শিল্পের বেশ উন্নতি হয়েছে। যা তিব্বতের বেশ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম একটিতে পরিণত হয়েছে। পর্যটন শিল্প তিব্বতের গ্রামাঞ্চলে প্রবেশ করায় স্থানীয় কৃষক ও পশুপালকদের জীবন-যাত্রার মান উন্নয়নের জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
লাসায় ১০ মাসের গবেষণার পর, " পর্যটন এবং তিব্বতের গ্রামের পরিবর্তন" নামক ওয়াং সি চুও মা'র একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক তিব্বতবিদ্যা মহলের ওপর সজাগ দৃষ্টি বেড়েছে। এ কারণে চুও মা জার্মানির ১১তম আন্তর্জাতিক তিব্বতবিদ্যা সেমিনারে উপস্থিত থাকার সুযোগ পান।

ওয়াং সি চুও মার জন্য এখন এ সব তিব্বতী অধিবাসীরা তাঁর আত্মীয়স্বজনের মতো । কোন উত্সব হলে তারা চুও মার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং শুভ কামনার কথা জানায়। তারা আশা করে, সুযোগ পেয়ে ওয়াং সি চুও মা আবারও লাসায় চলে আসবেন।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের যথাসাধ্য প্রচেষ্টায় চুও মার আকাংক্ষা বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি পেইচিং তিব্বতবিদ্যা গবেষণা কেন্দ্রে যোগ দিয়েছেন। এখানে তিনি আরও বিশাল প্ল্যাটফর্ম পেয়েছেন। কারণ এ কেন্দ্রের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে তিব্বতবিদ্যার ওপর নিবিষ্ট মনে গবেষণা করা। এ সম্পর্কে চুও মা বলেন:" এ তিব্বতবিদ্যা গবেষণা কেন্দ্রে কাজ করা আমার জন্য একটি ভাগ্যের ব্যাপার। এটি আমার তিব্বতবিদ্যা গবেষণার জন্য একটি উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে। এতে আমি গভীরভাবে তিব্বতবিদ্যার ওপর গবেষণা করতে সক্ষম হয়েছি। এমন কি, এ সুযোগে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তিব্বতবিদ্যা গবেষণার অবস্থা সম্পর্কেও জানতে সক্ষম হয়েছে ।"

চলতি বছর ওয়াং সি চুও মা পুনরায় তিব্বতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, নিজের প্রচেষ্টা ও গবেষণার মাধ্যমে স্থানীয় কৃষক ও পশুপালকদের জীবন-যাত্রার মান ব্যাপকভাবে উন্নত করতে তিনি আশাবাদী। যাতে তিব্বতের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা এবং তিব্বতের সমৃদ্ধি ও এর সার্বিক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।--ওয়াং হাইমান
1 2 |