বিশ্বের স্বর্গের মত সিতি বাগানের দৃশ্য, পুরোপুরিভাবে সংরক্ষিত গ্রামের আকার, উত্কৃষ্ট হুই স্টাইলের বসতবাড়ী এবং বৈশিষ্ট্যময় ও গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক তাত্পর্য ক্রমান্বয়ে আরো বেশি মানুষকে গভীরভাবে আগ্রহী ও আকষর্ণ করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের সিতি গ্রামে বেড়াতে যাওয়ার সংখ্যাও বাড়তে থাকে। ই জেলার সিতি পর্যটন সেবা কোম্পানির পথপ্রদর্শক স্যুই নিং চুয়ান বলেন,
বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা বেশি। তারা বলেন, তাদের প্রাচীন দুর্গ পাথর দিয়ে নির্মীত হয়। তা সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে বজায় রয়েছে। কিন্তু এখানকার বাড়িঘর সবই কাঠের। আগুণ ও কাঠের পোকা এ কাঠের শক্র। তা কয়েকশ' বছর টিকিয়ে রাখা এতো সহজ নয়।
সিতি গ্রামের পর্যটন টিকিটের দাম ৮০ ইউয়ান। এখানে ভ্রমণ বা পরিদর্শন করা খুব সুবিধাজনক। বিমান, ট্রেন ও এক্সপ্রেস সড়কপথে সরাসরি হুয়াংশান শহরে পৌঁছা যায়। পাশাপাশি হুয়াংশান শহর থেকে সিতি পর্যন্ত দূরত্ব শুধু ৫৪ কিলোমিটার। ট্রেনে করে ১ ঘন্টারও কম সময় লাগে। সিতি গ্রামে এখন দুটো ৪ তারা হোটেল ছাড়া অনেক বৈশিষ্ট্যময় গ্রামীণ হোটেল রয়েছে। এখানে থাকলে স্বস্থ্যকর ও আরামদায়ক ছাড়া চীনের ৮ রকম প্রসিদ্ধ খাবারের মধ্যে অন্যতম হুই খাবার খাওয়া যায়। এখানে অনেক স্থানীয় অধিবাসী স্থানীয় উপকরণ দিয়ে লোক রীতিনীতির দ্রব্য ও হস্তশিল্পজাত দ্রব্য তৈরী করেন। যেমন অক্ষতিকর চা, কাঠের ভাস্কর্য ও কাগজ-চাপা ইত্যাদি। দাম বেশি নয়। বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনকে উপহার দিলে এর স্মারক তাত্পর্য রয়েছে।
কয়েক বছর আগে গ্রামবাসী লি কুও ইয়ু নিজের পুরনো বাসায় একটি গ্রামীণ হোটেল খুলেছেন। তার ব্যবসা খুবই ভালো। চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের সময় চীনের তাইওয়ান অঞ্চলের চিয়া নিং এবং তার ব্রিটিশ স্বামী লি কুও ইয়ু'র হোটেলে একটি চীনা স্টাইলের লোক রীতিনীতির বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। লি কুও ইয়ু বলেন,
অতিথি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন। ফরাসী, আমেরিকান ও জাপানীরা সবাই আমার হোটেলে ছিলেন। অতিথিদের শতকরা একশ' ভাগ এ জায়গাটি পছন্দ করেন। কারণ এখানকার খাবার আদিকালের, প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর। পৃথিবীতে এ রকম একটি জায়গা আছে, তা তাদের কল্পনারও বাইরে। এমন কি ছোট্ট একটি বোর্ডেরও ইতিহাস আছে। পথপ্রদর্শক হোক বা একজন সাধারণ কৃষক হোক, সবাই অনেক গল্প বলতে পারেন।
চীনের প্রাচীনকালের রাজপ্রাসাদ বা স্থাপত্য দেখলে রাজধানী পেইচিংয়ের পুরনো রাজপ্রাসাদে যেতে হবে। চীনের প্রাচীনকালের লোক রীতিনীতির স্থাপত্য দেখতে চায়লে, ই জেলার সিতি গ্রামে আসতে হবে। হয়তো আমরা সিতি থেকে চীনের প্রাচীনকালের কিছু ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার ও লোক স্মৃতির ছোয়া পেতে পারি। তারপর বাস্তবসম্মত ইতিহাসের আদিকালের চেহারা অনুভব করার মধ্য দিয়ে চীনা সভাতার উন্নয়নের গতিধারা খুঁজে বের করতে পারি। 1 2 |