চীন ও কাজাখস্তানের সীমান্তরেখায় অবস্থিত পশ্চিম চীনের সিনচিয়াংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বন্দর-হরগোস সীমান্ত বন্দরের ১২৮ বছর পূর্তি হয়ে গেছে ।
এতে গত এক শ' বছর ধরে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য উন্নয়নের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে । এ সীমান্ত বন্দরের মাধ্যমে দিয়ে পশ্চিম চীন , মধ্য এশিয়া ও ইউরোপকে যুক্ত করা হচ্ছে । ব্যবসা ও বাণিজ্যের দিক থেকে এ সীমান্ত বন্দর অদ্বিতীয় ভূমিকা পালন করছে । এ বন্দর সাধারণতঃ মধ্য এশিয়ার ব্যবসা ও বাণিজ্যের সংযোগস্থল বলে অভিহিত করা হয় ।
এক শনিবার বিকেলে সাক্ষাত্কার নেয়ার জন্য সংবাদদাতা এ সীমান্ত বন্দরে এলেন । বন্দরে আসা যাওয়ার জন্য মালবাহী গাড়ি ও মানুষের ভিড় ছিল । এ বন্দরের ব্যবস্থাপনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান লিউ চিয়ান লিন বলেন , হরগোস এমন একটি বন্দর , যার মাধ্যমে রফতানি করা হচ্ছে । রফতানি পণ্যের মধ্যে জুতা , টুপি , নিত্য ব্যবহার্য পণ্য , পশুজাত দ্রব্য , ফলমূল ও শাক-সবজি অন্তর্ভুক্ত ।
হরগোস সীমান্ত বন্দর চীন ও কাজাখস্তানের সীমান্ত রেখায় অবস্থিত । এ বন্দরের মাধ্যমে দু'দেশকে যুক্ত করা হয় । কাজাখস্তান মধ্য এশিয়ার এমন একটি দেশ , যেখানে লোকসংখ্যা বেশি এবং অর্থনীতি উন্নত । সিনচিয়াংয়ের হরগোস সীমান্ত বন্দরের মাধ্যমে কাজাখস্তানের আলমা-আতা , কিরগিজস্তানের রাজধানী বিসকেক এবং উজবেকিস্তানের তাসখন্দকে যুক্ত করা হয়েছে ।
হরগোস সীমান্ত বন্দরের ব্যবস্থাপনা কমিটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের প্রথম ৪ মাসে হরগোস বন্দরের মাধ্যমে ২ লাখ টন মাল আমদানি ও রফতানি করা হয়েছে ।
এর বাণিজ্যিক মূল্য ৩৭ হাজার মার্কিন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে । বিশ্বজুড়ে আর্থিক সংকটের কারণেও এ সীমান্ত বন্দরের ক্ষতি হয় নি । বন্দরের ব্যবস্থাপনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান লিউ চিয়ান লিন বলেছেন , হরগোস বন্দর রফতানি পণ্য বিষয়ক ইতিবাচক নীতি প্রণয়ন করেছে, বৈদেশিক বাণিজ্যের অবকাঠামো ব্যবস্থার নির্মাণকাজের নিরন্তর পূর্ণাঙ্গ করে তুলেছে এবং কৃষি পণ্যের রফতানি বাড়ানোর ব্যবস্থা আরো জোরদার করেছে ।
হরগোস বন্দর কৃষি পণ্যের রফতানি বাড়িয়ে দিয়েছে । সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী এ অঞ্চলে স্বচ্ছ প্ল্যাস্টিকের আবরণের জমিতে ফলমূল ও শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে , এ সব পণ্য রফতানির ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে । বিশ্বজুড়ে আর্থিক সংকট মোকাবিলার ব্যাপারে কাজাখস্তানের সঙ্গে আলাপ-পরামর্শ জোরদার করার মাধ্যমে দু'দেশের বাণিজ্যিক বিরোধ দূর করা হয়েছে । ফলে স্থানীয় পণ্যদ্রব্য কাজাখস্তানের চাহিদার সঙ্গে খাপ খেয়েছে । এর সঙ্গে সঙ্গে পণ্যদ্রব্যের গুণগত মানও অনেক উন্নত হয়েছে ।
এ বছরের রফতানি পণ্যের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই পাইপ । এ সব পাইপ চীনে পশ্চিমের প্রাকৃতিক গ্যাস পূর্বে পাঠানো দুই নং প্রকল্পের জন্য বন্দোবস্ত করা হয়েছে । এ প্রাকৃতিক গ্যাসবাহী পাইপের মাধ্যমে যেমন মধ্য এশিয়ার তুর্কমেনিস্তান ও কাজাখস্তান থেকে আমদানি গ্যাস তেমনি সিনচিয়াংয়ের উত্তোলিত গ্যাস পূর্ব চীনে পাঠানো যাবে ।
এ প্রাকৃতিক গ্যাসবাহী পাইপের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস হংকং ও শাংহাইয়েও সরবরাহ করা যাবে । হরগোস সীমান্ত বন্দর ব্যবস্থাপনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান লিউ চিয়ান লিন বলেন , এ প্রাকৃতিক গ্যাসবাহী পাইপের মাধ্যমে বছরে ৬০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস সরবরাহ করা যাবে । এ সব গ্যাস চীনের সব বেসামরিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের এক বছর ব্যবহারের জন্য যোগান দেয়া যাবে ।
1 2 |