
চীনের রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে চীনের কুয়াং সি প্রদেশের উত্তর উপসাগরীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের জি ডি পি'র প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে ১৬.৩ শতাংশ হয়েছে। যা কুয়াং সি প্রদেশের গড় মানের চেয়ে ২.৮ শতাংশ বেশি এবং সারা দেশের গড় মানের চেয়ে ৯.২ শতাংশ বেশি। কথা হচ্ছে উত্তর উপসাগরীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে এতো লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে , যা তার স্ববৈশিষ্ট্য আঞ্চলিক সুবিধা এবং ব্যাপকভাবে বৈদেশিক সহযোগিতা উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত। বন্ধুরা, আজকের " চীনকে জানুন" অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।

চীনের কুয়াং সি প্রদেশের উত্তর উপসাগরীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল নান নিং, পেই হাই, ছিন চৌ এবং ফাং ছেং কাংসহ চারটি শহরকে নিয়ে গঠিত। যা হচ্ছে চীনের পশ্চিমাঞ্চলে শুধুমাত্র একটি উপকূলীয় অঞ্চল। তার পিছনে হচ্ছে চীনের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল এবং সামনে হচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া।

সুতরাং, চীনের কুয়াং সি প্রদেশের উত্তর উপসাগরীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নের কর্মসূচী হচ্ছে চীন ও আসিয়ানের উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতার আনুষঙ্গিক , বাণিজ্যিক ও প্রক্রিয়াকরণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং তথ্য বিনিময়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত হওয়া। একই সঙ্গে এ অঞ্চল হবে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের মহা-উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার অঞ্চল।

অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্মুক্তকরণ ও উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে উত্তর উপসাগরীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থলবন্দরের স্থাপন সবার সামনের সারিতে রাখা উচিত। এ বছরের মার্চ মাসে কুয়াং সি প্রদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের 'ফাং ছেং কাং', 'ছিন চৌ কাং' এবং 'পেই হাই কাং' আনুষ্ঠানিকভাবে কুয়াং সি প্রদেশের উত্তর উপকূলীয় স্থলবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের সার্বিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং বাজারের প্রতিরোধক শক্তি জোরদার হয়েছে। কুয়াং সি প্রদেশের ' ফাং ছেং কাং' গোষ্ঠীর সম্প্রচার বিভাগের একজন কর্মকর্তা হুয়াং ওয়েন ফেই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ভবিষ্যতে উত্তর উপকূলীয় স্থলবন্দর চীন ও আসিয়ানের আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক পোতাশ্রয়সমূহের জংশন এবং স্থলবন্দরের একটি আনুষঙ্গিক কেন্দ্রে পরিণত হবে। কারণ তিন দিক থেকে তার সুবিধা রয়েছে। এ সম্পর্কে হুয়াং ওয়েন ফেই বলেন:

প্রথমত হচ্ছে তার আঞ্চলিক সুবিধা। তার পিছনে হচ্ছে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং সামনে হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। দ্বিতীয়ত হচ্ছে স্থলবন্দরের স্ববৈশিষ্ট্য। এখানেই রয়েছে বড় আকারের জাহাজের জন্য বৃহত্তম বন্দর । তৃতীয়ত হচ্ছে আনুষঙ্গিক ক্ষেত্রের শক্তি সম্প্রসারণ"।
আসলে, স্থলবন্দরের আনুষঙ্গিক সেবা প্রদান ক্ষেত্রে উত্তর উপকূলীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল সবার আগে তার কাজ শুরু করেছে। চীনের কুয়াং সি প্রদেশের তুং সিং শহরের ওয়ান থুং আন্তর্জাতিক আনুষঙ্গিক লিমিটেড কোম্পানি হচ্ছে তুং সিং শহরে আনুষঙ্গিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সবচে' বিখ্যাত আন্তর্জাতিক আনুষঙ্গিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান। যা চীন ও ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের কাছে আন্তর্জাতিক পরিবহন , বাণিজ্য এবং আনুষঙ্গিক সমন্বয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের আনুষঙ্গিক সেবা প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। এ কোম্পানির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ছেন পো সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ২০০৩ সালে এ কোম্পানি শুল্ক তত্ত্বাবধান ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডের সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর কল্যাণে শুল্ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডের কার্যকরিতা ব্যাপকভাবে উন্নয়ন হয়েছে। এ সম্পর্কে ছেন পো বলেন:

" আগে শুল্ক তত্ত্বাবধান ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে কমপক্ষে আমাদের দু'দিন মত সময় লাগতো। এখন আমাদের কার্যকরিতার অনেক উন্নতি হয়েছে। এ সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে আমরা শুধু এক বেলাতেই তা সম্পন্ন করতে পারি।"

স্থলবন্দরের প্রতিষ্ঠা জোরদার ছাড়াও, ছিন চৌ শহরের শুল্ক রক্ষা বিষয়ক বন্দর এলাকার প্রতিষ্ঠাও উত্তর উপকূলীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন প্রাণবন্ত শক্তির সৃষ্টি করেছে। শুল্ক রক্ষা বিষয়ক বন্দর এলাকা হচ্ছে স্থলবন্দরের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শুল্ক বিষয়ক বিশেষ তত্ত্বাবধান এলাকা। যা চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতীক। ২০০৮ সালের ২৯ মে ছিন চৌ শহরের এ শুল্ক রক্ষা বিষয়ক বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি হচ্ছে চীনের ষষ্ঠ এবং পশ্চিমাঞ্চলে প্রথম শুল্ক রক্ষা বিষয়ক বন্দর। এর মোট আয়তন হয়েছে ১০ বর্গকিলোমিটার। জানা গেছে, এ পর্যন্ত ইতোমধ্যেই চীনের তেল গোষ্ঠী এবং ছিং হুয়া থুং ফাংসহ বিখ্যাত কোম্পানি এ বন্দরের সঙ্গে সহযোগিতামূলক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
1 2 |