
সম্প্রতি চীনের সিন চিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ভাইস-চেয়ারম্যান হু ওয়েই সিন চিয়াংয়ের রাজধানি উরুমচিতে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের "চীনকে দেখা সি আর আই'র দেশি-বিদেশী সংবাদদাতাদের সীমান্ত সফরকারী" সিন চিয়াংয়ে সাক্ষাত্কার দলকে সাক্ষাত্কার দিয়েছেন। তিনি চীনের উরুমচিতে অনুষ্ঠেয় ১৮তম বৈদেশিক আর্থ-বাণিজ্যিক সংক্রান্ত আলোচনা সভার প্রস্তুতিমূলক কাজের অবস্থা, নিকটবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সিন চিয়াংয়ের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং সিন চিয়াংয়ের বৈদেশিক যোগাযোগ উন্মুক্তকরণসহ বিভিন্ন সমস্যার আলোকে দেশি-বিদেশী সংবাদদাতাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

তিনি বলেন, উরুমচির অর্থ বাণিজ্যিক আলোচনা সভা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে হবে। মধ্য, এবং দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে আর্থ-বাণিজ্যিক বিনিময় মহাসম্মিলনী সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সিন চিয়াং নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। যাতে সিন চিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ব্যাপক বৈদেশিক যোগাযোগ উন্মুক্তকরণ কাজ ত্বরান্বিত করা যায়।

১৯৯২ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রথম উরুমচির সীমান্ত অঞ্চলের আর্থ-বাণিজ্যিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যা ছিল সে সময় সিন চিয়াংয়ের ইতিহাসে একবার সর্বোচ্চ আর্থ-বাণিজ্যিক মহাসম্মিলন। ২০০৮ সালে উরুমচির আলোচনা সভা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পরিণত হয়েছে। ১৮তম উরুমচির আলোচনা সভা সুষ্ঠুভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। হু ওয়েই অবহিত করেন যে, আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট ও উরুমচির " ৫ জুলাইর" ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও এ বছরের উরুমচির আলোচনা সভায় আরও বেশি দেশি-বিদেশী ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ সম্পর্কে হু ওয়েই বলেন:

" আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট ও উরুমচির " ৫ জুলাইর" ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব এবারের উরুমচির আলোচনা সভা আয়োজনের লক্ষ্যে বেশ নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এ সব অবস্থার প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান জানিয়েছে যে, তারা এবারের আলোচনা সভায় অংশ নেবে না"।

হু ওয়েই আরো বলেন, এ পর্যন্ত উরুমচির আলোচনা সভা ও প্রদর্শনের সব স্থান ইতোমধ্যেই বুক করা হয়েছে। সারা দেশের ২১টি প্রদেশ ,শহর ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ৮ শ'রও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবারের আলোচনা সভায় অংশ নেবে। এ সংখ্যা গতবারের অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যার চেয়ে ২ শ বেশি। উল্লেখ্য, তাজিকিস্তানের রাষ্ট্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য সমিতির এক শ'র বেশি জনকে নিয়ে গঠিত প্রতিনিধি দল এবং চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের দেড় শ'রও বেশি শিল্পপতি এবারের আলোচনা সভায় অংশ নেবেন। প্রাথমিক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, প্রায় এক হাজারেরও বেশি বিদেশী ব্যবাসায়ী এবারের আলোচনা সভায় অংশ নেবেন।

এবারের উরুমচির আলোচনা সভার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ফোরামের পর্যায়ে উন্নীত হওয়া। শাং হাই সহযোগিতা সংস্থা প্রথমবারের মত এবারের উরুমচির আলোচনা সভায় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্থানীয় সরকারের যৌথ উদ্যোগে "চীন দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং শাং হাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলোর পুঁজি বিনিয়োগের উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম" আয়োজন করবে।

একই সঙ্গে শাং হাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলোর পুঁজি বিনিয়োগ সংক্রান্ত জনপ্রিয় সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে। চীনের রাষ্ট্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য ব্যুরোর উদ্যোগে সারা দেশের ২৪০জন বিখ্যাত বেসরকারী শিল্পপতিও এবারের উরুমচির আলোচনা সভায় অংশ নেবেন। একই সঙ্গে " চীনের পশ্চিমাঞ্চলের বেসরকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম" অনুষ্ঠিত হবে। এ সব বিষয়টি ব্যাপকভাবে উরুমচির আলোচনা সভাকে আরো জোরদার করে তুলবে।

এবারের উরুমচির আলোচনা সভার তাত্পর্য ও ভূমিকা সম্পর্কে হু ওয়েই বলেন, আগের ১৭বারের আলোচনা সভা সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন থেকে এটা স্পষ্ট যে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্থানীয় কমিটি ও সরকার উরুমচির আলোচনা সভার ওপর যে "১+২+২" ব্যবস্থা তুলে ধরেছে। এ সম্পর্কে হু ওয়েই বলেন:

" '১' হচ্ছে একটি লক্ষ্য, যা মানে উরুমচির আলোচনা সভা প্রতি বছর একবার করে আয়োজিত হয়। এখন উরুমচির আলোচনা সভা ১৭ বছরের মত আয়োজনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যা সত্যিকারভাবেই তার লক্ষ্য অনুযায়ী এগিয়ে চলছে। প্রথম "২" হচ্ছে দু'টি বৈশিষ্ট্য। আসলে এর শুরুর দিকে আমাদের আলোচনা সভার দু'টি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

প্রথমটি হচ্ছে পুঁজি বিনিয়োগ, দ্বিতীয়টি হচ্ছে বাণিজ্য। এছাড়াও, দ্বিতীয় "২" হচ্ছে দু'টি প্ল্যাটফর্ম। এক প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে মূলভূভাগের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও সিন চিয়াংয়ের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম। আরেকটি প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও নিকটবর্তী দেশগুলোর বৈদেশিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানেরমধ্যে সহযোগিতা ও বিনিময়ের প্ল্যাটফর্ম। এ "১+২+২" ব্যবস্থা চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আশা করি, উরুমচির আলোচনা সভা সুষ্ঠুভাবে নিজের স্ববৈশিষ্ট্য পালন করতে সক্ষম হবে।"

1 2 |