৮০ বছর আগে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা এখানে 'শ্রমিক ও কৃষকের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে প্রথম গ্রামীণ বিপ্লবের মূল ঘাঁটি গড়ে তুলেছিলেন। এর মধ্য দিয়ে গ্রাম থেকে শহর ঘেরা ও সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের পথ সুগম করার পাশাপাশি এটি ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে প্রথম বারের মতো লক্ষ্যের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া এবং চিংকাংশান চেতনাকে ধারণ করার ঘটনা।
চিংকাংশান বিপ্লবের মূল ঘাঁটির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে গৌরবদায়ক ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে নতুন এই জাদুঘরটি চিংকাংশানে নির্মিত হয়েছে। চিংকাংশানের '১ নম্বর প্রকল্প'-এর এই চিংকাংশান বিপ্লব জাদুঘরটি একটি দেশপ্রেমিক শিক্ষা জাদুঘর।
জাদুঘরে অনেক বড় আকারের প্রদর্শনী আছে। বিপুল শব্দ, আলো ও বিদ্যুতসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে '১ আগস্টের নান ছাং বিদ্রোহ', 'বিপ্লবীদের চিংকাংশান মিলন' ও 'লালফৌজের লং মার্চ'সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা এখানে দেখানো হয়। এ সব ঐতিহাসিক ঘটনা, শিল্পকর্ম ও ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন শিল্পের অপূর্ব সমন্বয়ে দর্শনার্থীরা বিপ্লবের দিনগুলোর আবহ অনুভব করতে পারেন।
জাদুঘরের সবচেয়ে মহত্ শিল্পকর্ম হচ্ছে বৃহদাকার ভাস্কর্য 'বিজয়ের সূচনা বিন্দু'। চীনের লু স্যুন চিত্রকলা কলেজ ভাস্কর্যটি তৈরি করেছে। এতে চু তে ও মাওসেতুংয়ের একত্রীত হওয়ার ঘটনাটি উপস্থাপিত হয়েছে। ভাস্কর্যটি দেখতে ইংরেজী অক্ষর 'ভি'য়ের মতো এবং অনেকটা উড়ন্ত ঈগলের মতো। ভাস্কর্যের মাঝখানে মাওসেতুং ও চু তে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দূর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। মাওসেতুং'য়ের মুষ্টিবদ্ধ হাত যেন শক্তির প্রতীক। চু তে'র ডান হাত কোমরে পিস্তলের বাটে রাখা। দেখলে মনে হবে, যে কোন সময় যুদ্ধ করার জন্য তিনি প্রস্তুত। পুরো ভাস্কর্যে লাল ফৌজের সৈন্য সংখ্যা মোট ১শ' ৮। তাদের অধিকাংশকে আলিঙ্গনাবদ্ধ অথবা হাতের ইশারায় অন্য কাউকে সমর্থনরত কিংবা উচ্চস্বরে কথা বলা অবস্থায় দেখা যায়। সবা'র মুখে বিজয়ী মহামিলনের আনন্দ। পুরো ভাস্কর্যটি ৮মিটার উঁচু, যা চিংকাংশান বিপ্লবের মূল ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকীর প্রতীক। ভাস্কর্যটির চওড়া ১৯.২৭ মিটার, যা ১৯২৭ সালে চিংকাংশান বিপ্লবী মূলঘাঁটি প্রতিষ্ঠার সময়টি স্মরণ করিয়ে দেয়। ২শ' ৮০টিরও বেশি গ্র্যানাইট পাথর দিয়ে নির্মিত ভাস্কর্যটির ওজন ৫শতাধিক টন!
1 2 3 |