পেইচিং হল চীনের রাজনীতি ও সংস্কৃতি কেন্দ্র এবং চারটি রাজবংশের রাজধানী। সেজন্য পেইচিংয়ের যাদুঘরের সংখ্যা সারা চীনে সবচেয়ে বেশি এবং এ সংখ্যা বৃদ্ধির গতিও সবচেয়ে দ্রুত। এ পর্যন্ত পেইচিংয়ে তালিকাভূক্ত যাদুঘরের সংখ্যা হল ১৫১টি। যাদুঘরের সংখ্যা ও যাদুঘরের ধরণের সংখ্যা লন্ডনের পর পেইচিং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। যাদুঘরের ধরণের সংখ্যাও সারা চীনের মধ্যে পেইচিংয়ের সবচেয়ে বেশি। বর্তমান পেইচিংয়ে ইতিহাস, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সামরিক, জ্যোতিবিদ্যা, মহাকাশযান, সংস্কৃতি, শিল্পকলা, প্রাচীন স্থাপত্য, ধর্ম, টেলিযোগাযোগ ও রেলওয়ে বিষয়ক যাদুঘর রয়েছে।
রাজধানী যাদুঘর ও চীনের চলচ্চিত্র যাদুঘরসহ পেইচিংয়ের ৩৩টি যাদুঘর ২০০৮ সালের ২৮ মার্চ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে টিকিট-গ্রহণের ভিত্তিতে খোলা হয়েছে। নাগরিকরা ওয়েবসাইট ও টেলিফোনের মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে টিকিট নিতে পারেন। এ ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার পর এ ৩৩টি যাদুঘরে প্রতি দিন প্রায় ৩০হাজার দর্শক পরিদর্শন করেন। পেইচিংয়ের নাগরিকদের সাংস্কৃতিক বিনোদন জীবন আরো সমৃদ্ধ হয়েছে।
এখন যাদুঘর পরিদর্শন শুধু যে ইতিহাসপ্রেমী তা নয়, বরং আরো বেশি সাধারণ নাগরিকের জন্য সুখকর। এ ৩৩টি যাদুঘর বাধ্যতামূলক টিকিটের বিনিময়ে খোলা যাদুঘরের অবস্থা জানার জন্য সম্প্রতি সিআইআর'র সাংবাদিক এর মধ্যে কয়েকটি যাদুঘরে গিয়ে সাক্ষাত্কার নিয়েছেন।
রাজধানী যাদুঘরে বিভিন্ন বয়স ও পর্যায়ের দশর্ক দেখা যায়। যাদুঘর পরিদর্শন তাঁদেরকে আকর্ষন করেছে। আরো বেশি দর্শককে আকর্ষনের জন্য রাজধানী যাদুঘর নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নিয়ে পরিদর্শনের ধারণা ও বিষয় সমৃদ্ধ করে দিয়েছে। দশর্করা রাজধানী যাদুঘরে কম্পিউটারের মাধ্যমে হান ভাষা, ইংরেজি, জাপানী ও কোরীয় ভাষায় ভালভাবে প্রদর্শনীর সরন্ঞ্জম জানতে পারেন। এছাড়াও দর্শকরা চীনের ইতিহাস বিষয়ক ছোট চলচ্চিত্র দেখতে পারেন। এসব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকদের আরো বেশি সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং আরো বেশি মানুষকে যাদুঘরের প্রদর্শন আকর্ষন করেছে।
পেইচিংয়ের একজন ৭০ বছর বয়সী নাগরিক লিউ পেইচিংয়ে টিকিটের বিনিময়ে যাদুঘর প্রদর্শনী খোলা সম্পর্কে বলেছেন, 'আমি মনে করি, রাজধানী যাদুঘর অনেক ভাল। যাদুঘরে প্রদর্শিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাকে বিস্মিত করেছে। এ যাদুঘর হল জ্ঞান প্রচার ও প্রশিক্ষণের একটি ভাল কেন্দ্র।'
রাজধানী যাদুঘরে অস্থায়ীভাবে 'সাংহাই বিশ্ব মেলা' বিষয়ক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি অনেক দশর্ককে আকর্ষন করেছে। রাজধানী যাদুঘরে নিয়মিত অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রদর্শনীতে নাগরিকদের স্বাগত জানানো হয়। যেমন, সম্প্রতি রাজধানী যাদুঘর চীনের নানা যাদুঘরের মূল্যাবান সম্পদ সংগ্রহ করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ প্রদর্শন করেছে। এটি হল চীনের ইতিহাসের বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় সম্পদ প্রদর্শন। মাদাম চাও রাজধানী যাদুঘরে তৃতীয় বারের মত এসেছেন। রাষ্ট্রীয় সম্পদ প্রদর্শন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'এ যাদুঘরে অনুষ্ঠিত প্রতিবার অস্থায়ী প্রদর্শনকে আমি পছন্দ করি। বিশেষ করে এবারের রাষ্ট্রীয় সম্পদ প্রদর্শন। অনেক ভাল।'
1 2 3 4 |