ছাংচৌয়ের চিরুনি হচ্ছে চীনের বিখ্যাত হস্তশিল্পজাত পণ্য। ওয়েই-চিন সময়পর্বে তার শুরু। আজ থেকে তার ১৬০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। ছাংচৌ চিরুনি লিমিটেড কোম্পানির মহা পরিচালক চিন সোং ছুন গর্বিতস্বরে বলেন,
ছিং রাজবংশের সময়পর্বে রাজকীয় সরকারকে স্নেহের উপহার হিসেবে প্রদানের জন্য প্রতি বছর ছাংচৌ বস্ত্রবয়ন বিভাগকে কিছু সংখ্যক চিরুনি অনুরোধ অনুযায়ী তৈরী করতে হতো। সুতরাং ছাংচৌয়ের চিরুনির আরেকটি নাম 'বিখ্যাত রাজকীয় চিরুনি'। ছিং রাজবংশের সম্রাজ্ঞী ছি সি ব্যবহৃত ছাংচৌ'র হাতির দাঁত দিয়ে তৈরী চিরুনি এখনও পেইচিংয়ের পুরানো রাজপ্রাসাদে সংরক্ষিত আছে। ১৯১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিস্কোয় অনুষ্ঠিত শান্তি মেলায় ছাংচৌয়ের চিরুনি রৌপ পদক পেয়েছিল।
২০০৬ সালে 'ছাংচৌ চিরুনি ধারাবাহিক পণ্য হিসেবে' চীনের পর্যটন মেলার 'বৈশিষ্ট্যময় পর্যটন স্মারক জিনিস ও শিল্পজাত' পণ্য হিসেবে সুনাম পেয়েছে। একই বছরের আগস্ট মাসে চিরুনি কারখানা চিয়াং সু প্রদেশের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ ইউনিট তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। 'বাই সিয়াং অর্থাত্ সাদা হাতি' ব্র্যান্ড চিরুনি ১৯২৫ সালের আগেই নিবন্ধিত হয়। এখন পর্যন্ত তা ব্যবহার করা হচ্ছে। তা ছাংচৌ শহরের বিখ্যাত ব্র্যান্ড। পাশাপাশি তা ছাংচৌ শহরের দশটি বিখ্যাত পণ্যের মধ্যে অন্যতম।
ছাংচৌর অধিবাসী মাদাম ইয়াং শৌ ইয়ু বিংশ শতাব্দীর ২০ ও ৩০-এর দশকে ঐতিহ্যবাহী সূচিশিল্পের ধারণা ভেঙ্গে পশ্চিমা ছবি আঁকার কৌশল এবং ছাংচৌ সূচিশিল্পকে সংযুক্ত করে নতুন শিল্পের সৃষ্টি করেছেন। তার ছাত্রী—ছাংচৌ দি চিং সূচিশিল্প স্টুডিওয়ের উর্ধতন শিল্পী দি চিং পর পর অনেক বিদেশী ছাত্রছাত্রীকে শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর থাইল্যান্ডের ছাত্রী ছেন ইয়ু লুয়ান বলেন,
আমার দেশ থাইল্যান্ডেও সূচিশিল্পও আছে। তবে সেখানে এই রকম পদ্ধতি নেই। সুতরাং আমি চীনের এই বিশেষ সূচিশিল্প থাইল্যান্ডে নিয়ে উন্নয়ন করতে চাই।
খাবার মানবজাতির প্রথম প্রয়োজনীয় জিনিস। বিশ্বের সুস্বাদু খাবারের সার, ছাংচৌ সংস্কৃতির আত্মা, ভালো সেবা এবং অব্যাহত সৃজনশীলতার সংযুক্তি ছাংচৌয়ের সুস্বাদু খাবারের সবচেয়ে উজ্জ্বল বিষয়। ছাংচৌ-এ চারটি খাবারের ব্যবস্থা এবং ৮টি রকম স্টাইল নিজেদের বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। ১০ হাজারেরও বেশি খাবার, অসংখ্য হাল্কা খাবার, বিভিন্ন স্টাইলের বৈশিষ্ট্যময় রেস্তোঁরা ও থিম রেস্তোঁরা শহরের সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
একটি খাবারের আকর্ষণশক্তি থাকা শহর আদুরে। যদি আপনি ছাংচৌয়ে আসলে, একটি খাবারের বিখ্যাত সড়ক খুঁজে বের করে বৈশিষ্ট্যময় সুস্বাদু খাবার ও হাল্কা খাবার খেতে ভুলবেন না যেন এখানকার প্রত্যেক রকমের সুস্বাদু খাবার আপনাকে এই বৈশিষ্ট্যময় শহরটিকে মনে রাখতে সাহায্য করবে।
যদি আপনি সত্যিকারভাবেই একটি শহরকে জানতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই এখানে কমপক্ষে একটি রাত কাটাতে হবে। তারপর দ্বিতীয় দিন ভোরে হোটেলের দরজা খুলে বের হন, আপনি যে সব দেখবেন, তা এই শহরের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত চেহারা। ছাংচৌয়ের হোটেল আধুনিক ও ফ্যাশানেবল হোক দক্ষিণ চীনের বৈশিষ্ট্যময় হোক, প্রতিটি হোটেলের সেবা ছাংচৌ অধিবাসীদের সবচেয়ে অতিথিবত্সল ও পেশাগত মানদন্ড অনুযায়ী আপনাকে নিজের বাসার মত আরাম দেবে। ছাংচৌ পর্যটন ব্যুরোর মহাপরিচালক সু ওয়েই আপনাকে সবচেয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে আমন্ত্রণ জানাবেন। তিনি বলেন,
'ছাংচৌ ছাংচৌ, সব সময় বেড়াতে আসো'। আমরা আশা করি, বিশ্ব মেলার সুযোগে 'ছাংচৌ ছাংচৌ, ৫টি মহাদেশে বিখ্যাত হবে'। 1 2 |