২০১০ সাংহাই বিশ্ব মেলার কথা উল্লেখ করলেই অনেকেই জেনে যান যে তা সাংহাই-এ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৮৫১ সাল থেকে বিশ্ব মেলা প্রায় ৩০টি দেশে ১২৪বার অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবারের বিশ্ব মেলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্প, সংস্কৃতি, স্থাপত্য ও জীবনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই যুগোপযোগী উন্নয়নকে পরিচালিত করেছে। ফলে নতুন শিক্ষা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও অগ্রগতি ত্বরান্বিত হয়েছে। ২০১০ সালে চীন সাংহাই-এ বিশ্ব মেলার আয়োজন করবে। এবারের মেলার প্রসঙ্গ হচ্ছে 'নগর জীবনযাপনকে আরো সুন্দর করে তোলা'। সুতরাং অনেক মানুষ এর ওপর অনেক প্রত্যাশা করে। এবারের বিশ্ব মেলায় আমরা কি তা দেখতে পারব? আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে সাংহাংই-এ নিয়ে যাবো এবং আমরা এক সাথে নির্মাণাধীন বিশ্ব মেলা পার্কে ভবিষ্যতের সাংহাই বিশ্ব মেলাকে অনুভব করবো।
সাংহাই বিশ্ব মেলার জায়গা সাং হাই শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। এ জায়গাটি সাংহাইয়ের ঠিক দুটি প্রধান সেতু লু পু সেতু এবং নান পু সেতুর মাঝখানে এবং সাংহাই শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী হুয়াং পু নদীর পূর্ব ও পশ্চিম তীরবর্তী এলাকায় রয়েছে। এর মোট আয়তন ৫.২৮ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে ৩.২৮ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে বিশ্ব মেলার সকল প্রদর্শনী কেন্দ্র এবং ২ বর্গকিলোমিটারে রয়েছে বিশ্ব মেলার গ্রাম ও অন্যান্য অবকাঠামো। সাংহাই বিশ্ব মেলা ব্যুরোর জনসংযোগ কর্মকর্তা তিয়াও ফেই ছুই বলেন,
নির্ধারিত অঞ্চলের মধ্যে ৩.২৮ বর্গকিলোমিটার নির্দিষ্ট কর্ম অনুযায়ী এ বি সি ডি ই এই পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। চীনা প্রদর্শনী কেন্দ্র ও পরিবেশনা কেন্দ্র অক্ষরেখা হিসেবে পূর্ব দিকের অঞ্চল হচ্ছে, অঞ্চল-এ। এখানে প্রধানত এশীয় দেশগুলোর প্রদর্শনী অঞ্চল থাকবে। অঞ্চল-বিতে রয়েছে প্রধানত ওশেনীয় দেশগুলো ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রদর্শনী কেন্দ্র। অঞ্চল-সিতে রয়েছে প্রধানত ইউরোপীয়, আফ্রিকান এবং আমেরিকান দেশগুলোর প্রদর্শনী কেন্দ্র। ডি অঞ্চলে আগে ছিল চিয়াং নান জাহাজ কারখানা। এখন তা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রদর্শনী অঞ্চল। অঞ্চল-ই হচ্ছে শহরের শ্রেষ্ঠ অঞ্চল। পাশাপাশি তা সাংহাই বিশ্ব মেলার উজ্জ্বল বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব থেকে বাছাই করা শ্রেষ্ঠ শহরের নির্মাণের নমুনা এখানে প্রদর্শিত হবে।
সাংহাই বিশ্ব মেলা পরিদর্শন করলে সম্ভব্য প্রথমেই আপনি 'একটি অক্ষরেখা, চারটি প্রদর্শনী কেন্দ্র' দেখবেন। এ সব হচ্ছে সাংহাই বিশ্ব মেলার চিরস্থায়ী স্থাপত্য। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব মেলার অক্ষরেখা, থিম প্রদর্শনী কেন্দ্র, চীনা প্রদর্শনী কেন্দ্র, বিশ্ব মেলা কেন্দ্র এবং পরিবেশনা কেন্দ্র। প্রথমে আমি চীনা প্রদর্শনী কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে আপনাদের এ সম্পর্কে বুঝিয়ে দিচ্ছি। এই প্রদর্শনী কেন্দ্রের আকার রাজমুকুটের মতো। এর একটি সুন্দর নাম আছে, তা হলো 'প্রাচ্যের মুকুট'। কিছু কিছু লোক তাকে 'উল্টোদিকের আইফেল টাওয়ার' হিসেবে গণ্য করে। সাংহাই বিশ্ব মেলা ব্যুরোর পরিকল্পনা বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা শে জি পেং বলেছেন, চীনা প্রদর্শনী কেন্দ্র চীনা মানুষ কীভাবে 'শহরে জীবনযাপনকে আরো সুন্দর করে তোলে' এ প্রসঙ্গ তুলে ধরবে। তিনি বলেন,
একটি দেশের বিশ্ব মেলার আয়োজন করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শন বস্তু হচ্ছে নিজের দেশের প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মেলা আয়োজন করার সমঝোতা ও প্রদর্শনীকে সকল করে তোলার বিষয়টি প্রকাশ করা।
সাংহাই বিশ্ব মেলা ব্যুরোর পরিদর্শন বিভাগের প্রধান চি লু দে জানিয়েছেন, চীনা প্রদর্শনী কেন্দ্রে একটি সিনেমা হল, একবার অনুভূতি, একটি মহাচত্বর এবং এখন বলা যাবে না এমন মজাদার বিষয় রয়েছে। তিনি বলেন,
সিনেমায় প্রধানত আজকের আধুনিক চীনকে গঠনের চ্যালেঞ্জ প্রতিফলনের পাশাপাশি চীন কীভাবে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেছে তা প্রতিফলিত হয়েছে। এছাড়া গত ৩০ বছরে চীনের সমাজের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিরাট সাফল্য প্রতিফলিত হয়েছে। অনুভূতি, এর ভেতরের ধারণা হচ্ছে শহরের নির্মাণ ও উন্নয়ন। আরো আছে মহচত্বর। মহাচত্বরের পাশে অবকাশ ও কেনাকাটার জায়গাও রয়েছে। কিন্তু ব্যবসার জন্য নয়, বরং আপনি ভবিষ্যতের কল্পনা নিয়ে পরিদর্শন করতে পারেন।
1 2 |