'জুই চিউ নিউ' এই নামটি ই জাতির ইতিহাসে একজন বিখ্যাত নারীর সঙ্গে সম্পর্কিত। পথপ্রদর্শক চাং সিয়াও মেই আমাদের জানিয়েছেন,
জানা গেছে, প্রাচীনকালে আমাদের এখানে একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ—মাদাম শে সিয়াং ছিলেন। তাঁর স্বামী ছিলেন সে সময়ের কুইচৌ প্রদেশের গভর্নর। স্বামী যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হওয়ার কারণে তিনি স্বামীর পদে অধিষ্ঠিত হন। প্রতি বছর তিনি তখনকার সম্রাট-জু ইউয়ান জাং'কে কিছু উপহার দেন। এক বছর তিনি ৯টি শক্তিশালী গরু দিতে চান। তবে ৯টি গরু এখানে পৌঁছার পর আর যেতে চায় না। মাদাম শে সিয়াং ব্যাপারটি সম্রাটকে রিপোর্ট করেন। সম্রাট জু ইউয়াং জাং বলেন, তাহলে এ জায়গাটি 'জুই চিউ নিউ'কে ডাকে। এরপর জুই চিউ নিউ এই নামটি এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
শ্রোতাবন্ধুরা, এখন আপনারা যে গান শুনছেন, তা ই জাতির লোক সঙ্গীত 'রডোডেনড্রন ফুল মার্চ মাসে ফোটে'। সুন্দর এ ফুল এবং বৈশিষ্ট্যময় ই জাতির সংস্কৃতি বহু পর্যটককে আকর্ষণের পাশাপাশি শতাধিক মাইলের রডোডেনড্রন দর্শনীয় স্থান দেশী-বিদেশী সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি শ্রেষ্ঠ জায়গায় পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি কুইচৌ শতাধিক মাইলের এ দর্শনীয় স্থান 'বিশ্বের শত যুবকযুবতীদের শতাধিক মাইলের রডোডেনড্রন ভ্রমণ' সাংস্কৃতিক তত্পরতার আয়োজন করে। বিশ্বের চীনের অধ্যয়ণরত ২৪টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় একশ' যুবকযুবতী এতে অংশ নিয়েছে। ৫টি মহাদেশের যুবকযুবতীরা দিনে রডোডেনড্রন ফুলের সাগরে বেড়াতে যায় এবং রাতে হাতে হাত রেখে আনন্দদায়ক ই জাতির নাচ নাচে। ইতালির ছাত্র ড্যানিয়েল বলেন,
আগে আমি রডোডেনড্রন ফুল বুঝি না। এবারের তত্পরতা আমাকে একটি শ্রেষ্ঠ সুযোগ দিয়েছে। এ জায়গাটি খুব সুন্দর। এখানকার মতো এতো বেশি ফুল আমার মনে হয়, বিশ্বে অন্য কোথাও খুব কমই পাওয়া যায়।
নেপালের তুলুবা সাবলীল চীনা ভাষায় রডোডেনড্রন ফুলের প্রতি তার বিশেষ অনুভব প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন,
আমাদের জাতীয় ফুল হচ্ছে রডোডেনড্রন ফুল। তাই এখানে আসলে নিজের দেশে থাকার মতো মনে হয়। মানুষ খুব উদ্যমী। নিজের বাসায় থাকার মতো। অনেক বন্ধুর সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। দ্বিতীয় বারের মতো কুইচৌ-এ আসলেও আবারও আসতে চাই।
ই জাতির সুস্বাদু খাবার খাওয়া, ই জাতির আগুণ নৃত্য শেখা হচ্ছে ফুল দেখা ছাড়া স্থানীয় ই জাতির অগ্নুত্সবে অংশ নেয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চীনের অধিকাংশ সংখ্যালঘু জাতির মতো দূর থেকে আসা অতিথিদের সম্মানার্থে মদ পান সাধারণত উত্সবের সবচেয়ে আড়ম্বরপূর্ণ বিষয়।
এখন আপনারা যে গান শুনছেন, তা সম্মানার্থে অতিথিদের ই জাতির মদ পানের গান। ই জাতির মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন মদ ছাড়া নয়। যখন দূরের অতিথি আসেন, সম্মান ও স্বাগত জানানোর জন্য তারা অবশ্যই সবচেয়ে ভালো মদ দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করে। ই জাতির সম্মানার্থে মদ পানের গান দশ-বারোটির বেশী। এর মধ্যে সবচেয়ে 'জনপ্রিয়' গান হচ্ছে 'ভালো লাগুক আর নাই লাগুক মদ খেতে হবে'।
শতাধিক মাইলের এ দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে যাওয়ার রাস্তা পরিষ্কার ও পরিপাটি। পাশের বাড়িঘর ফিটফাট। দর্শনীয় স্থানের কাছে ই জাতি মানুষের খোলা বিশেষ স্টাইলের রেস্তোঁরা আছে। স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য থাকার পাশাপাশি প্রত্যেক ই জাতি রেস্তোঁরার স্বাদ ভিন্ন। পর্যটকরা তা খুবই পছন্দ করেন। যদি আপনার বসন্তকালে চীন ভ্রমণের সুযোগ আছে, তাহলে কুইচৌ-এ গিয়ে শতাধিক মাইলের রডোডেনড্রন ফুল এবং ই জাতির গভীর রীতিনীতি অনুভব করতে ভুলবেন না। 1 2 |