v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
তেং লির নতুন স্কুল টার্ম
2009-04-14 20:33:48

গত বছরের ১২ই মে ওয়েনছুয়ান ভূমিকম্প থেকে আজ পযন্ত দশ মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে । মার্চ মাসে পশ্চিম চীনের সিছুয়ান প্রদেশের দুর্গত এলাকার ছেলেমেয়েরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের মতো আবার স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া শুরু করেছে ।

তাদের জীবন ও লেখাপড়া কেমন চলছে । তারা ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট কালো ছায়া থেকে মুক্তি পেয়েছে কী ? ৩রা মার্চ সকাল ১১টা পেইছুয়ান জেলার লেইকু মাধ্যমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর শেষ ক্লাসের সময় । একটি অস্থায়ী ক্লাসরুমে ১৪ বছর বয়সী তেং লি ও তার সহপাঠীরা তাদের পছন্দনীয় মনস্তত্ত্ব বিষয়ক ক্লাস নিচ্ছে ।

বিশেষ মনোবিদ্যাগত শিক্ষক সহজ এবং আকর্ষণীয় পদ্ধতির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন । নিজের লেখাপড়া সম্পর্কে তেং লি বলে, আমরা আগের মতোই লেখাপড়ার চেষ্টা করি । কলম ও বইপত্রসহ লেখাপড়ার সব কিছুই আমাদের জন্য প্রস্তুত করা রয়েছে । আমাদের কোনো চিন্তা নেই । এখন আমরা এখানে লেখাপড়া করতে অভ্যাস্ত হয়েছি । ভয় নেই চিন্তাও নেই ।

আমরা আন্দের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছি । ভূমিকম্পের পর ছাত্রছাত্রীদের মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে শিক্ষকরা খুব চিন্তা করতেন । স্কুল আবার খোলার সময় ছাত্রছাত্রীরা স্বাস্থ্যকর ও স্ফূর্ত আছে দেখে শিক্ষকরা খুশি হন । শিক্ষক কুই চেনইয়ুন বলেন, গত টার্মের চেয়ে এ টার্মে ছাত্রছাত্রীদের মানসিক অবস্থা অনেক স্থিতিশীল । গত টার্মে তারা লেখাপড়া করতে অনিচ্ছুক ছিল ।

এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্কুল নানা পদক্ষেপ নিয়েছে । যেমন ছবি আঁকা, লাতিন নাচ ও ছিয়াং জাতির নাচসহ নানা নাচ শেখা এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা ।যাতে তারা এসব তত্পরতার মাধ্যমে জীবনের আনন্দকে উপভোগ করতে পারে । ছাত্রছাত্রীরা যাতে যততাড়াতাড়িসম্ভব মনস্তাত্তিক দিক থেকে আরোগ্য হয়ে উঠবে তার জন্য রংবেরংয়ের অবসরকালীন তত্পরতা ও মনোবিদ্যাগত সহায়তা ছাড়া সমাজের বিভিন্ন মহল ছেলেমেয়েদের ভ্রমণ করতে আমন্ত্রণ জানানো সহ নানা পদ্ধতির মাধ্যমে সাহায্য করে যাচ্ছে।

চীনের বসন্ত উত্সবের আগে তেং লি ভূমিকম্পকবলিত এলাকার মাধ্যমিক স্কুলের ১০০ ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে আমন্ত্রিত হয়ে ফিলিপাইনে এক সপ্তাহ কাটিয়েছে । এর আগে তেং লি কখনো বাড়ি থেকে দূরে যায়নি । কখনো সাগর দেখেনি । সাগর দেখে তার এত ভাল লেগেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না । মাত্র এক সপ্তাহ তেং লি ও তার সাথীদের মনে সুন্দর স্মৃতির দাগ কেটেছে ।

এবারের বিদেশ সফর সম্পর্কে তেং লি বলে, ফিলিপাইনীদের হাসিমুখ আমার মনে সবচেয়ে গভীর রেখাপাত করেছে । গাড়ীতে করে বাইরে যাওয়ার পথে রাস্তার দুপাশে দাঁড়ানো ফিলিপাইনীদের হাসিমুখ দেখে আমি খুব মুগ্ধ হয়েছি। ফিলিপাইনী বন্ধুদের কথা সবসময়আমার মনে পড়ে । ফিলিপাইন থেকে সিছুয়ানে ফিরে আসার পর তেং লি স্কুলের এক আলোচিত ছাত্রী হয়েছে ।

তার সহপাঠিরা তাকে ঘিরে কৌতুহলভরে তাকে এটা সেটা জিজ্ঞেস করল। এ সম্পর্কে তেং লি বলে, তারা আমাকে অনেক প্রশ্ন করেছে । কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমাদের জন্য উপহার আনলে?কেউ জিজ্ঞেস করে ,ফিলিপাইনে কোথায় কোথায় গিয়েছো, কী কী দেখেছো এবং ফিলিপাইনীরা কী রকম,তাদের কথা বুঝতে পারো কি ? ইত্যাদি ইত্যাদি ।

তেং লিসহ লেকু মাধ্যমিক স্কুলের মোট ১৫জন ছাত্রছাত্রী আমন্ত্রিত হয়ে ফিলিপাইন সফর করেছে । ফিলিপাইন থেকে ফিরে আসা ১৫জন ছাত্রছাত্রী সম্পর্কে শিক্ষক কুই চেনইয়ুন বলেন, ফিলিপাইন থেকে ফিরে আসার পর ১৫জন ছাত্রছাত্রীর মনস্তাত্তিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল । তারা বাইরের বিশ্ব দেখেছে । ফিরে আসার পর তারা ঠিক করেছে যে , ভালভাবে লেখাপড়া করে নিজের লেখাপড়ার মান উন্নত করার চেষ্টা চালাবে । তারা মনে করে , ভালভাবে লেখাপড়া করলেই কেবল সমাজকে প্রতিদান দেয়া যায় ।

এখন তারা নিজের ধারণাকে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে । সিছুয়ান প্রদেশের শিক্ষা ব্যুরোর বৈদেশিক বিষয়ক বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন , তেং লির মতো দুর্গত এলাকার বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী আমন্ত্রিত হয়ে বিদেশ সফর করেছে । তারা যথাক্রমে রাশিয়া,বুলগেরিয়া ও হাংগেরি সফর করেছে । পরবর্তীকালে আরও বেশি ছাত্রছাত্রী আমন্ত্রিত হয়ে বিদেশ সফর করতে পারবে ।ভূমিকম্পের পর থেকে এ পর্যন্ত সিছুয়ান প্রদেশের শিক্ষা মহল বিদেশের বিপুল পরিমানের সাহায্য পেয়েছে ।

1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China