২০০১ সালের ১০ নভেম্বর কাতারের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে কাতারের অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রী ইউসেফ হোসেইন কামাল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের অন্তর্ভুক্তির কথা ঘোষণা করেন। একই সালে চীন অলিম্পিক গেমস আয়োজনেরও অধিকার পায়। বিশেষজ্ঞ বলেন, এ দুটি ঘটনা প্রমাণ করেছে, চীন বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে চীন ধাপে ধাপে নিজের অবস্থানকে সংহত করতে পেরেছে।
ধারাবাহিক সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে চীন অতীতের অচল ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে জনগণের প্রাণশক্তি ও সৃষ্টির সামর্থ্যকে বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। চীনের অর্থনৈতিক সমাজের চেহারায়ও বিরাট পরিবর্তন হয়েছে।
সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের প্রথম দিকে চীনারা বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে চারটি পণ্য পেতে আগ্রহী ছিল। তা হল সাইকেল, সেলাইর মেশিন, রেডিও এবং ঘড়ি। কিন্তু এখন এ চারটি বড় পণ্য হচ্ছে হীরার আংটি, বিদেশে মধুচন্দ্রিমা কাটানো, বসতবাড়ি ও মোটরগাড়ি।
১৯৮০ সালে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সময় শেনচেন কেবল একটি ছোট গ্রাম ছিল। এখন শেনচেন ১ কোটি জনসংখ্যার শহর। এ শহর হচ্ছে চীনে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার শক্তির অধিকারী শহরগুলোর অন্যতম।
আজ চীনের প্রতীক কেবল মহাপ্রাচীর, রাজপ্রাসাদ যাদুঘর, দাইয়ান টাওয়ার ও সুচৌ-এর বাগান নয়। নতুন নির্মিত পেইচিংয়ের জাতীয় থিয়েটার, জাতীয় স্টেডিয়াম—বার্ড নেস্ট, শাংহাইয়ের প্রাচ্য মুক্ত টেলিভিশন টাওয়ার ও শেনচেনের ডিওয়াং ভবন প্রভৃতি চীনের নতুন প্রতীকি স্থাপত্যকর্মে পরিণত হয়েছে।
পিয়েরে কার্ডিন
১৯৭৯ সালে বিশ্ব বিখ্যাত পোশাক নকশাকার পিয়েরে কার্ডিন পেইচিংয়ের রাস্তায় কেবল সবুজ, নীল, কালো ও ছাই রং-এর পোশাক দেখা যেতো। পোশাকের নকশাও কেবল সামরিক পোশাক, চোংশান পোশাক আর কৃষক ও শ্রমিকের কাজের পোশাক ছিল। কিন্তু বর্তমানে চীনে ফ্যাশন শো প্রায়শই অনুষ্ঠিত হয়। চীনের বৈশিষ্ট্যময় রেশমী কাপড়, পিকিং অপেরার মুখোশ ও চৈনিক লাল রং নিউইয়র্ক, মিলান ও প্যারিসসহ বিশ্ব পর্যায়ের ফ্যাশন শোগুলোতে প্রদর্শিত হয়।
৩০ বছরে চীনের জিডিপি'র বার্ষিক বৃদ্ধি হার প্রায় ১০ শতাংশ বজায় রয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীন বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। ৩০ বছর আগে চীনে ২৫ কোটি দারিদ্র জনসংখ্যা ছিল। এখন এ পরিমাণ কমে ১ কোটি ৫০ লাখ হয়েছে। ৩০ বছরে চীনাদের জীবনযাপন, শিক্ষা গ্রহণ, চিকিত্সার মান আর গণতান্ত্রিক আইন প্রশাসনের চেতনাসহ নানা ক্ষেত্রে অনেক উন্নত হয়েছে। সারা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ অনেক বেড়েছে। আইন প্রশাসন ব্যবস্থা ধাপে ধাপে সুসম্পন্ন হয়ে উঠেছে। আমাদের জীবন আরো রঙিন, সমৃদ্ধ ও উদ্বেগমুক্ত হয়েছে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) 1 2 |