v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
নিজের পথে এগিয়ে যাওয়া
2009-01-05 21:06:35

    উন্মুক্তকরণের অর্থ কেবল 'বাইরে থেকে জিনিস আনা' তা নয়, বরং নিজেরও বাইরে যাওয়া। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৩০ বছরে চীনের ১২ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী বিশ্বের পাঁচটি মহাদেশের একশ'টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে লেখাপড়া করেছেন। চীনের ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে লেখাপড়া করে দেশে ফিরে এসে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন চীনের ৭৭ শতাংশ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, চীনের বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির ৮৪ শতাংশ একাডেমিশিয়ান, চীনের প্রকল্প অ্যাকাডেমির ৭৫ শতাংশ একাডেমিশিয়ান ও ৬২ শতাংশ ডক্টরেট ছাত্রের শিক্ষকদের বিদেশে লেখাপড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

    চীনের নামকরা ইন্টারনেট কোম্পানি সোহু এর প্রতিষ্ঠাতা চাং ছাও ইয়াং যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন। তিনি বিদেশে চীনের ছাত্রছাত্রীদের পাঠানো নীতি প্রসঙ্গে মূল্যায়ন করে বলেছেন, 'বিদেশে লেখাপড়া করা গোটা চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অগ্রগতির জন্য গভীর প্রভাব ফেলেছে। কারণ চীন ও বিশ্বের যোগাযোগ ব্যাপক ভিত্তিক। যারা বিদেশে লেখাপড়া করেন, তারা এ যোগাযোগকে আরো গভীর করতে পারেন। ফলে তেং সিয়াও পিং লেখাপড়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যার সুদূরপ্রসারী ঐতিহাসিক তাত্পর্য রয়েছে।'

    বলাবাহুল্য সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় সন্দেহের আভাস পাওয়া গিয়েছিল। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ১৩ বছর পর অর্থাত্ ১৯৯১ সালেও অনেকের মাথা থেকে বামপন্থী ভাবনা পুরোপুরি নির্মূল হয় নি। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙ্গে যাওয়া আর পূর্ব ইউরোপের অভ্যুত্থানের পটভূমিতে চীনে এমন কথা উঠেছিল, তা হচ্ছে শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের বিপদ অর্থনৈতিক ক্ষেত্র থেকে আসে।

    চীনের পরিকল্পিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পুরানো পথে ফিরে যাওয়া কিম্বা তা নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরুর মুহূর্তে ১৯৯২ সালের জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাসে চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের স্থপতি তেং সিয়াও পিং দক্ষিণ চীনের উছাং, শেনচেন, চুহাই ও শাংহাইসহ নানা অঞ্চলে পরিদর্শন করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। তিনি বলেছেন, 'উত্পাদন শক্তি হচ্ছে এক দেশের ব্যবস্থাপনা শ্রেষ্ঠ কিনা তা পরিমাপের ভিত্তি। সমাজতন্ত্রেও বাজার অর্থনীতি থাকতে পারে। তেং সিয়াও পিং-এর ভাষণ বাজার অর্থনীতি 'পুঁজিবাদী' না 'সমাজতান্ত্রিক' এর তর্কবিতর্ক নিষ্পত্তি করেছে। চীনা জনগণ এর পর থেকেই অবিচলভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আর সমাজের বিকাশ ত্বরান্বিত করার পথে এগিয়ে যান।

    ব্রাজিল, ভিয়েতনাম ও রাশিয়াসহ অনেক দেশ চীনের উন্নয়নের পদ্ধতি গবেষণা করে। চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৩০ বছর পুর্তি উপলক্ষে রাশিয়া, পোল্যান্ড, কানাডা, নাইজেরিয়া ও ব্রাজিলসহ অনেক দেশের রাজনৈতিক মহল ও বিদগ্ধ সমাজ চীন সম্পর্কিত নানা গবেষণা সভার আয়োজন করে।

    ২০০৮ সালে বিশ্ব ব্যাংক চীনের অর্থনীতিবিদ লিন ঈ ফুকে ডেপুটি গভর্ণর নিয়োগ করেছে। লিন ঈ ফু বিশ্ব ব্যাংকের ইতিহাসে চীন থেকে আসা প্রথম ডেপুটি গভর্ণর এবং উন্নয়নশীল দেশ থেকে আসা প্রথম প্রধান অর্থনীতিবিদ হয়েছেন। লিন ঈ ফু এর কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন, 'তারা চীনের অর্থনীতিবিদ বাছাই করার মূল কারণ হচ্ছে চীনের ৩০ বছরের সংস্কার ও উন্নয়নের অভিজ্ঞতা আছে। চীনের সাফল্য বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে এবং উন্নয়ন সম্পর্কে বিশ্বের অনেক পন্ডিতের ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। চীনের সাফল্য ছাড়া আমার এমন সুযোগ পাওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)


1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China