সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৩০ বছরে সাহসের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি আকর্ষণের পাশাপাশি চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতিকে দেশের বাইরে প্রসারিত হচ্ছে। চীনের উজ্জ্বল সংস্কৃতির বহমানধারাকে বিশ্বের অনেক বেশি মানুষ জানতে পেরেছেন। এখন চীন বিশ্বের দ্বিতীয় পর্যটন গন্তব্যস্থানে পরিণত হয়েছে। চীনের আরো পর্যটক বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণে যাচ্ছেন। চীনা ভাষা পৃথিবীতে একটি জনপ্রিয় ভাষায় পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে চীনের সংস্কৃতি জানার আগ্রহ মেটানোর জন্য চীন পৃথিবীতে ২০০টিরও বেশি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছে।

লি চাও শিং
বিশ্বের সঙ্গে একই তালে চলার আরেকটি দিক হচ্ছে চীন সবসময়ই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে কাজ করে থাকে। ২০০৫ সালে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে রপ্তানীকৃত আচার নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সে বছর অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের খাদ্য ও ওষুধ নিরাপত্তা কার্যালয় ঘোষণা করেছে, পরীক্ষার ফলাফল প্রমাণিত হয়েছে, চীন থেকে আমদানিকৃত ১৬ প্রকারের মধ্যে ৯টিতে পরগাছা পেয়েছে। এরপর দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের রপ্তানীকৃত আচারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তত্কালীন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লি চাও শিং বলেছেন, আমি আচার খেতে খুব পছন্দ করি। আচারের দাম খুব একটা বেশি নয়। কিন্তু বিশ্বের অনেক জায়গায় তা পাওয়া যায়। আচার সমস্যা সমাধানের সহজ উপায় হচ্ছে আমরা সবাই আন্তর্জাতিক প্রচলিত বাণিজ্যিক নিয়ম অনুযায়ী সমতা ও সিরিয়াস মনোভাব এবং নয়নীয়তা ও সৃষ্টপদ্ধতিগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলে তা সহজেই সমাধান সম্ভব।
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ফলে চীনা জনগণের আস্থা ও অগ্রগতির ধাপ দিন দিন বাড়ছে।
২০০৮ সালের মে মাসে চীনের সিছুয়ানের ওয়েনছুয়ানে পৃথিবী কাঁপানো ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটে। চীনের তথ্য মাধ্যম প্রথমবার তাত্ক্ষণিকভাবে বিশ্বের কাছে একটানা সরাসরি সম্প্রচার করেছে। রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা সঙ্গে সঙ্গে প্রেস ব্রিফিং-এরও আয়োজন করে এবং চীনা ও ইংরেজী ভাষায় ভূমিকম্পের অবস্থা ব্যাখ্যার পাশাপাশি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। চীনের উপরোক্ত অভিব্যক্তি বিশ্বের ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।
৩০ বছরের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণে অর্জিত বিরাট উন্নয়ন চীনকে যে কোন কঠিন অবস্থা থেকে উত্তরণ ও যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সামর্থ্য এনে দিয়েছে। ৩০ বছরে চীন বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিনিময়ের পর অভূতপর্ব আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে। বৈদেশিক উন্মু্ক্তকরণের মধ্যে নিজেকে হারানোর ভয় চীনের আর নেই।
বিশ্বের সঙ্গে একই সাথে চলার পেছনে রয়েছে চীনা মানুষের বিশ্বের সবার সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার আন্তরিক আকাঙ্ক্ষা।

কন্ঠশিল্পী 'আমি ও তুমি' গান গাচ্ছেন
'আমি ও তুমি, হৃদয়ের মনে বিনিময়। আমরা সবাই পৃথিবীর গ্রামে বসবাস করি।' এটা হচ্ছে ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রধান গানের কথা। এটা হচ্ছে চীনা মানুষের বর্তমানে বিশ্বের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে মিলে মিশে থাকার নির্ভেজাল আশা-আকাঙ্ক্ষা। এটা হচ্ছে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৩০ বছরে চীনাদের হৃদয়ের সুন্দর কামনা। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) 1 2 |