v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
চীনের কূটনীতির ৩০ বছর
2008-12-15 18:41:29

    গত ৩০ বছর চীনের কূটনীতির পরিবর্তন পর্যালোচনা করলে অনেক মাইলফলক ধর্মী ঘটনা দৃষ্টিগোচর হবে। ১৯৭৯ সালের জানুয়ারী মাসে চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। গত শতাব্দীর শেষ দিকে চীন পর পর হংকং ও ম্যাকাও এর ওপর সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করেছে। গত শতাব্দীর ৯০'র দশকে চীন ও রাশিয়া যৌথভাবে 'শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা' প্রতিষ্ঠা করেছে। এটা হচ্ছে চীনের কোন শহরের নাম দিয়ে নামকরণ করা প্রথম আন্তর্জাতিক সংস্থা। কোরিয় উপদ্বীপের পারমাণবিক সমস্যা সংক্রান্ত চলমান ছ'পক্ষীয় বৈঠকে চীন কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে।

    যদি চীনের সাম্প্রতিক ৩০ বছরের কূটনৈতিক সফলতা বিশ্লেষণ করে তাহলে দেখা যাবে, চীনের কূটনীতি আরো বাস্তব এবং পরিপক্ক হয়েছে। চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাবশক্তি ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা নিরন্তরভাবে বাড়ছে। চীনের কূটনীতি ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্ পরিসরে এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে সর্বক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে। চীনের কূটনীতির সার্বিকতা ও বহুমুখিতার বৈশিষ্ট্য বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

    প্রথমত: চীনের কূটনীতির বহুমুখিতার কথা বলা যাক। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতির ভিত্তিতে চীন সকল দেশের সঙ্গে সুষ্ঠু সহযোগিতার সম্পর্কের উন্নতি সাধন করে। বড় দেশ হোক, ছোট দেশ হোক, সবই সমান। উন্নয়নশীল দেশ হোক, শিল্পোন্নত দেশ হোক, তাদের সকলকে সমান চোখে দেখে চীন।

    দ্বিতীয়ত: কূটনৈতিক ক্ষেত্রের বৈচিত্র্য। কূটনীতি কেবল রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিবিদদের কাজ নয়, এটা গোটা সমাজের অভিন্ন দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক কূটনীতি, সামরিক কূটনীতি, বেসামরিক কূটনীতি ও পার্টিগুলোর মধ্যকার যোগাযোগ অভূতপূর্ব রূপ নিয়েছে।

    তৃতীয়ত: কূটনীতির বহুবিধ পদ্ধতি। ঐতিহ্যিক দ্বিপক্ষীয় আদানপ্রদানের পদ্ধতি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নানা ধরণের বহুপক্ষীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপায়ও খুঁজে বের করে এবং তাকে ব্যবস্থার রূপান্তরের চেষ্টা করে আসছে চীন। যেমন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সংলাপ ব্যবস্থা, চীন ও আসিয়ানের সংলাপ ব্যবস্থা, এশিয়া ও ইউরোপ সম্মেলন ইত্যাদি।

    একবিংশ শতাব্দী প্রবেশের পর চীনের কূটনীতির আরো কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে। যেমন চীন পরিস্থিতির পরিবর্তন বিবেচনা করে কূটনীতির নরম শক্তির সঞ্চয়কে নতুন যুগে চীনের কূটনীতির গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে। অধ্যাপক ওয়াং ফান এ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন, 'গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ব্যাপারে চীনের কূটনীতির ভাবমুর্তিকে আরো উজ্জ্বল করে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং সাধারণ জ্ঞানের প্রচলন আরো ব্যাপক করেছে। যোগাযোগ, বিনিময় ও আলোচনায় চীন সুনাম অর্জন করেছে। সদ্যসমাপ্ত বেইজিং অলিম্পিক গেমস চীনের জন্য প্রশংসা অর্জন করেছে। চীনের সংস্কৃতি সম্প্রসারণ করা, চীনের শান্তিপূর্ণ ধারণা এবং সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের সফলতা প্রচার করা, চীনের প্রতি বিশ্বের সমঝোতা ও উপলব্ধি গভীরতর করার প্রক্রিয়ায় চীনের কূটনীতি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে।'

    ওয়াং ফান মনে করেন, চীনের নতুন কূটনীতি হচ্ছে বর্তমানের ভিত্তিতে ভবিষ্যতমুখী কূটনীতি। অর্থাত্ চীনের কূটনীতি আরো বাস্তব এবং আরো আস্থাবান হয়েছে। সমস্যা সমাধানের ইচ্ছা চীনের আছে, সমস্যা সমাধানের চীনের সামর্থ্যও বেড়ে যাচ্ছে।

ইয়াং চিয়ে ছি

    চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইয়াং চিয়ে ছি সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন, 'সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৩০তম বার্ষিকী এ গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে আমরা উপলব্ধি করেছি , চীনের কূটনীতি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বহন করছে। আমরা চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের জন্য আরো সুষ্ঠু আন্তর্জাতিক পরিবেশ সৃষ্টি করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো এবং বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য আরো বিরাট অবদান রাখবো।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)


1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China