v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে পাওয়া চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা
2008-12-01 17:30:45

আধুনিক শেনচেন শহর

    শেনচেনসহ এই পাঁচটি অঞ্চলকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে বেছে নেয়ার একটি প্রধান কারণ হচ্ছে তারা হংকং, ম্যাকাও ও তাইওয়ানের সঙ্গে সংলগ্ন। বহিরাগত পুঁজি আকর্ষণের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলগুলোর ভৌগলিক প্রাধান্য আছে।

    কিন্তু বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রতিষ্ঠা যে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তা হলো এ অঞ্চলগুলো সমাজতান্ত্রিক নাকি পুঁজিবাদী? ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে তেং সিয়াও পিং আবার শেনচেনে এসেছিলেন। তিনি দেখেছেন, অতীতের দারিদ্র গ্রামের প্রতিটি পরিবারের আমানত দশ হাজার ইউয়ান রেনমিনপি হয়েছে। তিন দিনেই নতুন ভবনের এক তলার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এই দেখে তিনি দৃঢ়ভাবে আস্থা প্রকাশ করেছেন যে, চীনে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার নীতি সঠিক হয়েছে। ১৯৯২ সালে তিনি আরেকবার বিশেষ অঞ্চলে আসার সময় স্পষ্টভাবে উল্লেখ্য করেছেন, 'বিশেষ অঞ্চল পুঁজিবাদী নয়, সমাজতান্ত্রিক। অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিকল্পনার ভাগ বেশি না বাজারের ভাগ বেশী তা সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদের মধ্যকার মূল পার্থক্য নয়। বাজার সমাজতন্ত্রের সেবা করতে পারে।

    পুরোনো ধ্যানধারণা ত্যাগ করে সাহসের সঙ্গে নতুন সৃষ্টির নীতি পরিচালনায় গত ৩০ বছরে চীনের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো যথাযথভাবে 'জ্ঞান', 'প্রযুক্তি', 'ব্যবস্থাপনা' ও 'বৈদেশিক নীতি' এ চারটি জানালার ভূমিকা পালন করেছে এবং বহু সুদূরপ্রসারী নতুন উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে। শেনচেন প্রথমে ভূমির স্বতাধিকার নিলাম করেছে। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর শেনচেন প্রথম শেয়ারপত্র প্রকাশ করেছে। চুহাই চীনের প্রথম চীন ও বিদেশের যৌথ মালাকানাধীন হোটেল খুলেছে। সিয়ামেন প্রথমে বিদেশি পুঁজি ব্যবহার করে বিমান বন্দর নির্মাণ করেছে এবং প্রথমে জয়েন্ট ভেন্চার ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। শানথো প্রথমে ক্যাডারদের নিয়োগ ব্যবস্থা সংস্কার করেছে।

    চীনে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ চালু করার এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন করা এবং জনগণের সচ্ছলতা অর্জন করা। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রথমে কিছু লোক সচ্ছল হওয়ার পর অন্যদেরকে সচ্ছল হতে সাহায্য করা এবং অবশেষে সকলের সচ্ছলতা অর্জন করা। ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চীনের জিডিপির বার্ষিক বৃদ্ধির হার ৯ শতাংশেরও বেশি ছিল। নাগরিকদের মাথাপিছু আয় ১৯৭৮ সালের ১৯০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০০৭ সালের ২৩৬০ মার্কিন ডলার হয়েছে। গ্রামীন দারিদ্র লোকসংখ্যা ২৫ কোটি থেকে ২ কোটিতে নেমেছে।

    ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক সংকট চীনের উপরও আঘাত হেনেছে। চুচিয়াং বদ্বীপ অঞ্চলের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উত্পাদন যখন কঠিন অবস্থায় রয়েছে তখন শেনচেনসহ নানা বিশেষ অঞ্চলের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সংকট মোকাবিলার সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছে। কারণ তারা যথা সময় পণ্য দ্রব্যের মান উন্নত করা এবং নিজেদের উদ্যোগে পণ্য নবায়ন ও উদ্ভাবনের ব্যবস্থা নিয়েছে।

    চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও বলেন, 'সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ হচ্ছে বর্তমান চীনের নিয়তি নির্ধারণের চাবিকাঠি এবং চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের উন্নয়ন সাধণ করা ও চীনা জাতির মহান পুনরোত্থান বাস্তবায়নের অপরিহার্য পথ।'(ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)


1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China