
৩০ বছর আগে চীনের দরিদ্র অঞ্চলের একটি জেলে গ্রামের ছেলে ছেন চাং লিয়াং তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি-পত্র গ্রহণের সময় হয়তো সে উপলদ্ধি করতে পারে না যে তার জীবনে এতো সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখন ৪৭ বছরের বয়স্ক ছেন চাং লিয়াং হচ্ছেন চীনের কুয়াং সি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্থানীয় জনগণ জরকারের একজন ভাইস-চেয়ারম্যান। তবে এর আগে উনি পন্ডিতগণ, বোস, স্কুলের প্রধান এবং সরকারের একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
১৯৬১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের একদিনে চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের ফু চিয়ান প্রদেশের একটি ছোট্ট জেলে গ্রামে ছেন চাং লিয়াং জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলার সময় স্মরণ সম্পর্কে ছেন চাং লিয়াং শুধু এক কথা নিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন: " জেলে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা ,তাদের বাবা মা সবাই নিরক্ষর মানুষ। পরিবারের দরিদ্র অবস্থা সম্পর্কে কোন কথা নিয়ে অবর্ণনীয়।"
ছেন চাং লিয়াং ৯ বয়সের সময় প্রথমবারের মতো স্কুলে ভর্তি নিয়েছে। লেখাপড়া ছাড়া, তিনি আরও জমিতে চাষ করেন। তবে ছেন চাং লিয়াংয়ের জন্য আরও ভাগ্যবান। ১৯৭৭ সালে চীনের সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থা পুনরায় চালু হয়। যা ছেন চাং লিয়াংয়ের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত সৃষ্টি করেছে।

এ সম্পর্কে ছেন চাং লিয়াং বলেন: "সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থা পুনরায় শুরু হচ্ছে ১৯৭৭ সালের সিদ্ধান্ত নেয়া। সুতরাং আমার লেখাপড়া শেষের জন্য আরও এক বছরের সময় পেয়েছিলাম। ১৯৭৮ সালে আমি সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। পরীক্ষা শেষের পর, আমাদের মাধ্যমিক স্কুলে শুধু আমি একজন ছাত্র ভর্তির লাভ পেয়েছিলাম। সুতরাং, সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থা পুনরায় শুরু না হলে, আজকের আমি নিশ্চয় থাকতে পারি না।"

এভাবে ছেন চাং লিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছিলেন। একই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেন চিয়াং লিয়াংয়ের মতো নতুন আসা ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখেরও বেশি। আসলে তখন ছেন চাং লিয়াং নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌভাগ্য এতো স্পষ্টভাবে জানতে পারেন না, তিনি শুধু একটি খুবই সহজের কারণ সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি স্মরণ করে বলেন: " তখন আমি মনে করতাম, সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে আমার ঘাসের তৈরী জুতা আর পড়তে পারবো না। এটা বাস্তবে রুপান্তরিত হলে আমি চামড়া দিয়ে তৈরী জুতা পড়তে পারবো। এমন কি, আমার কৃষক থেকে নাগরিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এটি একজন কৃষকের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন খুব তাড়াতাড়ি কেটে যায়। তৃতীয় বছরে বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে বিদেশে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছ। ছেন চাং লিয়াং হচ্ছেন এ সব নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অন্যতম। এ সম্পর্কে তিনি বলেন: " বিদেশে লেখাপাড়া করা হচ্ছে চীনের তত্কালীন শীর্ষ নেতা তেং সিয়াও ফিংয়ের উপস্থাপিত ধারণা। এটা আমার সারা জীবন পরিবর্তনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।"
1 2 |