v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
চীনের প্রকাশনা শিল্পের ৩০ বছর সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পথ
2008-11-17 19:48:54

    কিছু দিন আগে শেষ হলো জার্মানীর ফ্রাঙ্কফুট বই মেলা। মেলা কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছে, আগামী বছর প্রধান অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে চীন এ বই মেলায় অংশ নেবে। ৩০ বছর আগে চীনের পাঠকদের বই কিনতে খুব কষ্ট হতো। এখন চীন প্রথমবারের মতো প্রধান অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বৃহত্তম বই মেলায় অংশ নিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে, চীনের প্রকাশনা শিল্প সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহাসিক পরিবর্তন ঘটেছে।

লি তুং তুং

    ফ্রাঙ্কফুট বই মেলা হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই লেনদেনের প্ল্যাটফর্ম। সদ্যসমাপ্ত ৬০তম ফ্রাঙ্কফুট বই মেলায় চীনের জাতীয় মুদ্রণ ও প্রকাশনা সাধারণ কার্যালয়ের উপ-মহাপরিচালক ম্যাডাম লি তুং তুং এবারের প্রধান অতিথি দেশ তুরস্কের কাছে প্রধান অতিথি দেশের প্রতীক হস্তান্তর করেছেন। তিনি আমাদের সংবাদদাতার নেয়া এক বিশেষ সাক্ষাত্কারে বলেছেন, '২০০৯ সালে চীন প্রধান অতিথি দেশ হিসেবে ফ্রাঙ্কফুট বই মেলায় অংশ নেবে। চীন এ প্রথমবারের মতো এমন মর্যাদায় আন্তর্জাতিক বই মেলায় অংশ নেবে। তখন আমরা চীনের প্রকাশিত ৫০০০ এরও বেশি শ্রেষ্ঠ বইপত্র নিয়ে যাবো। তা দিয়ে চীনের প্রকাশনা শিল্পের মান প্রতিফলিত হবে।'

ইয়াং দে ইয়ান

    ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত 'সাংস্কৃতিক মহা-বিপ্লব' এর দশ বছরে চীনের সাংস্কৃতিক উন্নয়ন অচলাবস্থায় ছিল। অধিকাংশ প্রকাশনা সংস্থাও বন্ধ ছিল। সাংস্কৃতিক মহা-বিপ্লবের পর চীনা মানুষের দীর্ঘদিন ধরে চেপে রাখা লেখাপড়ার প্রতি এবং অনুরাগ জানার প্রতি আগ্রহ আগ্রেয়গীরির মত জেগে উঠেছে। কিন্তু তখন চীনের প্রকাশনা শিল্প পাঠকদের চাহিদা মেটাতে পারতো না। চীনের প্রকাশনা কর্মী সমিতির স্থায়ী ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াং দে ইয়ান সে কথা স্মরণ করে বলেছেন, '১৯৭৮ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একাদশ কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের পর সরকার বিদেশী ভাষা শেখার প্রতি উত্সাহ দেয়। কিন্তু তখন প্রকাশনা ক্ষেত্র অতি দুর্বল। নতুন বই খুব কম। আমার মনে আছে, 'সু কুও চাং ইংরেজী' নামে বই কিনতে দশ হাজার ক্রেতাকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার অভিনব দৃশ্য দেখা যেতো। কিন্তু প্রতিদিন কেবল অল্প সংখ্যক নতুন বই বাজারে ছাড়া হতো। তখন ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজী ভাষা শেখার জন্য বই নেই। ছিলনা কোন অভিধানও।'

    ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্য প্রকাশনা সংস্থা হচ্ছে চীনের প্রথম আধুনিক প্রকাশনা সংস্থা। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একাদশ কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে উত্থাপিত সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ আর জনসাধারণের বিদেশী ভাষা শেখার অনুরাগ দেখে বাণিজ্য প্রকাশনা সংস্থা দ্রুত তাদের কাজ শুরু করে দেয়। বাণিজ্য প্রকাশনা সংস্থা ধীরে ধীরে সংগঠিত হয়ে প্রকাশনা শুরু করে দেয়। বর্তমানে এ সংস্থার প্রকাশিত বৈচিত্র্যময় অসংখ্য বই আছে।

    চীনের জাতীয় মুদ্রণ ও প্রকাশনা সাধারণ কার্যালয়ের উপাত্ত অনুযায়ী, ১৯৭৮ সালে চীন দশ হাজার ধরনের বই প্রকাশ করে। ২০০৭ সালে চীন ২ লাখ ৪০ হাজার ধরনের বই প্রকাশ করে। ১৯৭৭ সালে চীনে প্রকাশিত ম্যাগাজিনের সংখ্যা ছিল ৬০০। ২০০৭ সালে এ সংখ্যা বেড়ে ৯০০০টিরও বেশি হয়েছে। পত্রিকার সংখ্যা সে সময়কার ২০০ থেকে বেড়ে গত বছর তা প্রায় ২০০০টি হয়েছে।

1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China